সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং যারা এই রোগের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছেন তাদের মধ্যে ত্বকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। প্রায় ৮০ ভাগ ডায়াবেটিক রোগির নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়।
ডায়বেটিস এবং ত্বকের উপর এর প্রভাব নিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে জানানো হয়, আমাদের দেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ হল ত্বক। যা সমগ্র দেহকে আবরণ দেয়। বিশাল এই অঙ্গের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন ভিন্ন রূপে সংক্রামণ দেখা দিতে পারে। এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন- ব্যাকটেরিয়াল, ভাইরাল বা ফাংগাল ইনফেকশন। ডায়াবেটিস রোগিদের চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারনেও বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে এবং প্রচন্ড চূলকানি হয়। একানথিসিস নিগ্রিকেনস- যাতে ঘাড়ে, গলায় এবং শরীরের ভাজে চামড়া পুরো এবং কালো হয়ে যায় এবং এই রোগটি ডায়াবেটিস রোগিদের ক্ষেত্রে বেশী দেখা যায়। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগিদের ত্বকে অ্যালার্জি হওয়ার প্রবনতা অনেক বেশি। অনেক ক্ষেত্রে ডায়াবেটিক রোগিদের সাধারনত শরীরের নিম্নাংশে বা পায়ে বড় বড় ফোঁসকা পড়ে।
ডায়বেটিক ডার্মোপ্যাথী : এতে রোগিদের পায়ে কালো বা বাদামী বর্ণের দাগ দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগিদের রক্তে চর্বির ভারসাম্য নস্ট হওয়ার কারনে শরীরে এক ধরনের হলদে দানাদার দাগ রোগ দেখা দিতে পারে ।
কেনো এই ত্বকের সমস্যা ঃ
সাধারনত গরমকালে ডায়াবেটিস জনিত চর্ম রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। গরম এবং আর্দ্রতার কারণে সবারই কম বেশি চর্মরোগ হতে পারে। তবে যারা বহুমূত্র রোগগ্রস্ত তাদের ডায়াবেটিসও একটা কারণ। অপরদিকে ডায়াবেটিসের কারণে ক্ষতও সহজে শুকায় না। তাই সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে। এছাড়াও যাদের দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস আছে তাদের ত্বক অন্যদের থেকে শুষ্ক হয়ে যায় এবং চুলকানির সমস্যা দেখা যায়।
চিকিৎসা :
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত ত্বক পরীক্ষা করে দেখতে হবে। প্রতিদিন দেখতে হবে ত্বকে কোনো ঘামাচি, ফোড়া, ফুসকুড়ি ধরনের কিছু হয়েছে কি-না।
বিশেষ করে ত্বকের যেসব জায়গায় ইনসুলিন দেওয়া হয় সে সব জায়গায়। চর্মরোগ থেকে বাঁচতে হলে রক্তের শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ত্বককে পরিস্কার-পরিছন্নও রাখতে হবে। তাছাড়া ডায়াবেটিকদের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করার মতো সাধারণ নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে। ত্বকের শুস্কতা নিয়ন্ত্রনের জন্য নিয়মিত ভালো ও উন্নত মানের ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। কোথাও কেটে গেলে বা ছিলে গেলে শুরুতেই চিকিৎসা নিতে হবে । ডায়াবেটিস রোগিদের পায়ের ও নখের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরী। সর্বোপরি এতেও যদি কাজ না হয় তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
ডাঃ জেসমিন আক্তার লীনা
সহকারী অধ্যাপক (ডার্মাটোলজী)
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড ঢাকা।
আনোয়ার খাঁন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
মিরপুররোড, ধানমন্ডি,ঢাকা। প্রয়োজনে: ০১৭২০১২১৯৮২।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন