শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পাক সমরসজ্জায় বঙ্গবন্ধুর উদ্বেগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

১৯৭১ সালের ১১ মার্চ মুক্তির আন্দোলনে আরো উত্তাল হয়ে পড়ে দেশ। স্বাধীন বাংলার দাবিতে অবিচল সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারের সাথে সবধরণের অসহযোগিতা অব্যাহত রাখেন। হাই কোর্টের বিচারপতি ও প্রশাসনের সচিবসহ সারা বাংলার সরকারি ও আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের কর্মচারী অফিস বর্জন করেন। ১১ মার্চ সচিবালয়, মুখ্য সচিবের বাসভবন, প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ সকল সরকারি ও আধাসরকারি ভবন ও বাসগৃহের শীর্ষে স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়তে থাকে। গণআন্দোলনে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকবাহিনী। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সমরাস্ত্রসহ একটি জাহাজ ১০ মার্চ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে নোঙর করে। এদিকে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে সমরাস্ত্র আনার প্রতিবাদ জানিয়ে ১১ মার্চ ‘স্বাধীন বাংলা সংগ্রাম পরিষদে’র চার ছাত্রনেতা জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

ওইদিন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি কে উলফ এদিন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বঙ্গবন্ধু তার কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার সমরসজ্জায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

১১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির এক সভায় মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি আবেদন জানানো হয়। গণআন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের একদিনের বেতন আওয়ামী লীগের ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

অপরদিকে গণহত্যার প্রতিবাদে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর পাকিস্তান সরকারের এক চিত্রপ্রদর্শনীতে যোগদানে অস্বীকৃতি জানান। এমনকি তিনি দেশের চিত্রশিল্পীদেরও যোগদানে বিরত থাকার আহ্বান জানান। কুমিল্লা কারাগার থেকে পালাতে গিয়ে ১১ মার্চ পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ৫ কয়েদি। অন্যদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙে ২৪ কয়েদি পালিয়ে যায়। অন্যদিকে লোকজন না থাকায় দেশের সকল আদালত ১১ মার্চ অচল হয়ে পড়ে।

এদিন পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো করাচী থেকে বঙ্গবন্ধুর কাছে একটি তারবার্তা পাঠান। তারবার্তায় ভুট্টো বলেন, উদ্ভূত সাম্বপ্রতিক ঘটনাবলিতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। আমরা আজ বিরা সঙ্কটের মুখোমুখি। দেশের ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চিত। এ ব্যাপারে আমাদের উভয়ের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ধ্বংস এড়ানোর জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই আমাদের করতে হবে। যে কোনো মূল্যের বিনিময়ে দেশকে রক্ষা করতেই হবে।
করাচীতে গণঐক্য আন্দোলনের নেতা এয়ার মার্শাল (অব.) আসগর খান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, খুব দ্রুত পটপরিবর্তন হচ্ছে। দেশকে বিচ্ছিন্নতার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে যথা শিগগির ব্যবস্থা নিতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানই কার্যত এখন বাংলার সরকার।

সেখানে সব সরকারি কর্মচারী এবং সচিবরা তার নির্দেশ পালন করছেন। ঢাকায় কেবল সামরিক সদর দফতরে পাকিস্তানি পতাকা উড়ছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের হাতে অবিলম্বে ক্ষমতা ছাড়া না হলে দেশের দুঅংশকে এক রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন