চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর জনসংযোগে সংঘর্ষে জড়িয়েছে দল সমর্থিত ও বিদ্রোহী দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা। গতকাল শুক্রবার বিকালে নগরীর সদরঘাট থানার বাংলাবাজারে এই সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত দুইজনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বাবুল দাশ (৪২) নামে এক যুবলীগ নেতাও রয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল কাদের ওরফে মাছকাদের ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম বাংলাবাজার এলাকায় জনসংযোগে যান। সেখানে আব্দুল কাদেরের ও নজরুল ইসলাম বাহাদুরের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আগে প্রার্থীর গাড়িতে উঠা ও স্লােগান দেয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি পরে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের কারণে রেজাউল করিম জনসংযোগ না করেই ফিরে যেতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে ঘটনাস্থলের আশেপাশে পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি কোন কর্মকর্তা। মারামারির বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানান সদরঘাট থানার ওসি ফজলুর রহমান ফারুকী।
ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল কাদের। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড তার পরিবর্তে এবার মনোনয়ন দিয়েছে সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুরকে। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন আব্দুল কাদের। সংঘর্ষের বিষয়ে আব্দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাবাজার এলাকায় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের প্রচার গাড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতারা উঠতে চাইলে নজরুল ইসলাম বাহাদুরের কর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি সেলিম রেজা, ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল গণি রিপন ও যুবলীগ সহ-সভাপতি বাবুল দাশ তনয় আহত হয় বলে দাবি কাদেরের।
বাংলাবাজার এলাকা থেকে মেয়র প্রার্থী কমার্স কলেজ এলাকায় যাওয়ার কথা ছিল জানিয়ে কাদের বলেন, মেয়র প্রার্থীকে স্বাগত জানাতে আমি কমার্স কলেজ এলাকায় অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু তিনি জনসংযোগ না করেই ফিরে যান। নজরুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের জনসংযোগ ছিল বাংলাবাজার এলাকায়। মরহুম আমীর হোসেন দোভাষের কবর জিয়ারত করে বাংলাবাজার আসার কথা।
আসার পথে আব্দুল কাদেরের অনুসারীরা প্রচার গাড়িতে উঠে স্লােগান দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আমার ছেলেদের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়। আব্দুল কাদেরের ছেলেরা অস্ত্র বের করলে আমি মেয়র প্রার্থীসহ সেখান থেকে গণসংযোগ না করেই চলে আসি। আর ওই এলাকায় গণসংযোগ হবে না। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর তার অনুসারীরা হামলা চালিয়েছে বলে আব্দুল কাদেরের অভিযোগ অস্বীকার করেন নজরুল ইসলাম বাহাদুর।
উল্লেখ বুধবার রাতে নগরীর রামপুরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিমের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর হয়। সরকারী দলের বিতর্কিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকেরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত সংঘাত সহিসতায় জড়িয়ে পড়ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন