দেশের বিভিন্নস্থানে নারকেল গাছে ব্যাপক আকারে সাদা মাছির আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে রাতারাতি পাতা সাদা হয়ে যাচ্ছে। ছোট হচ্ছে নারকেলের আকার। ভেতরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। নারকেল গাছের পাতা সাদা হওয়ায় যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, ফরিদপুর. খুলনা, বাগেরহাটসহ বিভিন্নস্থানে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। কিন্তু না এটি পোকা-মাকড়ের আক্রমণ। এটিকে সাদা মাছি বলা হয়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইংএর পরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম গতকাল জানান, ইকোলজিক্যাল ভারসাম্য ভেঙে যাওয়ায় পোকা-মাকড় আবাসস্থল হারাচ্ছে। তাদের খাদ্য শৃঙ্খলা না থাকলে বা কোনো উপাদান ঘাটতি হলে নতুন আশ্রয়স্থল খোঁজে। নারকেলের উপর ফিলিপাইন ইউনিভার্সিটি থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী ওই গবেষক বললেন, এতদিন যে ফলমূলে সাদা মাছির উপস্থিতি দেখা যেত, এখন তা নারকেল গাছে দেখা যাচ্ছে। সাদা মাছির জীবন বৈচিত্র হচ্ছে পাতা ও কচি ডাবের নরম অংশে ক্ষত করে রস চুষে খায়। তারা নিজেদের রক্ষার্থে তুলার মতো আবরণ তৈরি করে। এর আগে বিভিন্নস্থানে নারকেল গাছে ইরিওফাইট গ্রিরোনিট নামক এক ধরণের মাকড়ের আক্রমণ বিস্তার লাভ করে।
নারকেল গাছে সাদা মাছির আক্রমণ দমনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটসহ সংশ্লিষ্টরা ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান বলেন, নারকেল গাছে ব্যাপক আক্রমণ দেখা দিয়েছে সাদা মাছির। আমরা মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি। বালাইনাশক ব্যবহারে সচেতন হতে বলছি। তার কথা, মূলত নারকেল গাছ উঁচু হওয়ায় সাধারণত স্প্র্রে করা হয় না, সেই সুযোগে ক্ষতিকর মাকড়টি নারকেল গাছে বাসা বাঁধছে। তিনি যশোর ও সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকায় নারকেল গাছে করোনাভাইরাসের গুজবে কথা স্বীকার করে বলেন, এটি স্রেই গুজব। সাদা মাছির আক্রমণ সবচেয়ে বেশি ছিল উত্তরাঞ্চলে। এখন বেশি দেখা যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে।
কীট তত্ত¡বিদ অধিদফতরের একটি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে এই সাদা মাছি কেরালার নারকেল বাগানে প্রথম দেখা যায়। এর আদি নিবাস অবশ্য মধ্য আমেরিকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন