২১ মার্চ অভূতপূর্ব কড়া নিরাপত্তার মধ্যে পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো নির্বাচনের পরে দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকায় আসেন। ভুট্টোর সঙ্গে ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল জে. এ রহিম মিয়া, মাহমুদ আলী কাসুরী, গোলাম মোস্তফা জাতো, মমতাজ আলী ভুট্টোসহ মোট ১২ জন উপদেষ্টা।
বিমানবন্দর এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তারা অস্বস্তিকর পরিস্থিতে পড়েন। সেই পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক আজাদ রিপোর্ট করে: এমনকি হোটেলের লিফটও তাকে বহনে রাজি হয়নি। ভুট্টো লিফটে উঠতে গেলে হঠাৎ সেটি অচল হয়ে পড়ে।
২৫ মার্চ রাতে মানবইতিহাসের বর্বরতম সামরিক গণহত্যার অভিযান শুরু হওয়ার আগেই ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগ করলেও ভুট্টো ঢাকায় থেকে যায় এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান নিয়ে নিরীহ মানুষের ওপর পরিচালিত হত্যাযজ্ঞের উপভোগ করে।
এদিন অনির্ধারিত এক বৈঠকে বসে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও বঙ্গবন্ধু। বৈঠকে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিলকারীরা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে সমবেত হয়। মিছিলকারীদের উদ্দেশ্যে বঙ্গববন্ধু ঘোষণা করেন, ‘আন্দোলন শিথিল হবে না’। অন্যদিকে, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে ২৩ মার্চ প্রতিরোধ দিবস পালনের আহ্বান জানায়।
নুরে আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আ. স. ম আব্দুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন এই চার নেতা প্রতিরোধ দিবস কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন : এদিন ভোর ৫ টায় সরকারি ও বেসরকারি ভরনে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন; ভোর ৫ টায় প্রভাতফেরি ও শহীদের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ; ৯ টায় পল্টন ময়দানে জয়বাংলা বাহিনীর কুচকাওয়াজ; ১১ টায় বায়তুল মোকাররমে ছাত্র জনসভা। স্বাধিকারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে ছাত্রজনতা দুপুর ১ টায় দীর্ঘ জাহাজ মিছিল বের করে।
ভাসানী ন্যাপের পূর্বাঞ্চল শাখার সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিয়া এক বিবৃতিতে- জয়দেবপুরের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে গণহত্যার প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে জনগণের কাছে আহ্বান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন