নাটোরের সিংড়া উপজেলার আয়েশ গ্রামের শাহ্ আলমের স্ত্রী পারুল বেগমের প্রায় ১৫ বছর আগে এক দরিদ্র পরিবারে তার বিয়ে হয়। দিনমজুর স্বামী নিয়ে বিয়ের পর থেকেই মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকেন পারুল বেগম। নিজের জমিজমা নেই। বসতবাড়িতে মাত্র একটি খুবড়ি ঘর। দিনের পর দিন বাড়তে থাকে ঋণের বোঝা। হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন স্বামী শাহ্ আলম। স্বামীর চিকিৎসা আর সংসার চালাতে বাধ্য হয়েই সংসারের হাল ধরেন পারুল বেগম। নিরুপায় হয়ে পরের বাড়িতে গৃহিণীর কাজ শুরু করেন। দারিদ্রতার সাথে প্রতিনিয়ত চলে থাকে লড়াই। তিন বেলা জোটেনা ঠিকমত ভাত। অর্থের অভাবে স্বামীকেও দিতে পারেনি উন্নত চিকিৎসা। বর্তমানে পারুল বেগমের অতিতের এই দৈণ্য দশার চিত্র পাল্টে গেছে। এখন তার বাড়িতে টিনের দোচালা দুটো ঘর। গোয়াল ঘর ও বাড়িতে টিউবয়েল পাড় পাকাসহ কিছু টাকা দিয়ে বন্ধকী জমিও রেখেছেন তিনি। নিজের সন্তানাদি না থাকায় ননদের একটি সন্তানকে লালন পালন করছেন তিনি। পারুল বেগমের দাবি মাত্র ১০ বছরেই তার জীবন যাত্রা পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, ১০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে একটি বকনা বাছুর কিনি। এক বছরের মাথায় বাছুরটি বড় হয়ে বাচ্চা প্রসব করে। এরপর থেকেইে শুরু করি দুধ বিক্রি। আস্তে আস্তে ঋণ আর দেনা পাওনা পরিশোধ করেছি। গাভী পালন থেকেই বাড়িতে টিনের দোচালা দুইটা ঘর, গোয়াল ঘর আবার টিউবয়েল পাড় পাকা করে কিছু টাকার জমি বন্ধকী রেখেছি। আমার নিজের সন্তান না থাকায় ননদের একটি সন্তানকে লালন পালন করছি। ইচ্ছে আছে তাকে পড়ালেখা শিখিয়ে মানুষ করবো। তার ২টি দেশী জাতের গাভী ৮ থেকে ১০ লিটার দুধ হয়। প্রতিদিন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার দুধ বিক্রি করছি। এছাড়া প্রতি বছর গরুর বাছুর বিক্রয় করে গড়ে আয় করেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বর্তমানে স্বামী-সন্তান নিযে সুখেই আছেন পারুল বেগম। স্থানীয় সাংবাদিক সৌরভ জানান, আয়েশ গ্রামের শাহ্ আলমের স্ত্রী পারুল বেগম স্ত্রী হয়ে স্বামীর দায়িত্ব পালন করছেন। পারুল বেগমের চিত্র দেখে এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসছেন গাভী পালনে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন