এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
ক্ষমা প্রদর্শন করা
সবর ও ধৈর্যের চতুর্থ বিশেষত্ব হচ্ছে এই যে, দুষ্কৃতকারীদের অপকর্ম ও কদাচারের প্রতি এবং তাদের কষ্টদায়ক পদচারণার প্রতি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে তাকানো। রাসূলুল্লাহ (সা:)-কে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে যে, এভাবেই ধৈর্য, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়চিত্ততার সাথে নৈতিক উত্তম আদর্শের পথ রচনা কর। কেননা আল-কোরআনের বেশ কয়টি আয়াতে ধৈর্যকে এই অর্থেই ব্যবহার করা হয়েছে। “যদি তুমি শাস্তির পথ গ্রহণ কর, তাহলে তদনুরূপ শাস্তির পথ তারাও গ্রহণ করবে, আর যদি তুমি ধৈর্যাবলম্বন কর তাহলে তা ধৈর্যশীলদের উপকারে লাগবে। তাই তোমার উচিত তাদের কথিত বাক্যাবলী ও আচরণের উপর ধৈর্য ধারণ করা, তোমার ধৈর্য আল্লাহর সাহায্যেই বাস্তবায়িত হবে, তাদের কাজে চিন্তান্বিত হয়ো না, এমন কি তাদের ষড়যন্ত্রের জন্য বিষণœ হয়ো না।” (সূরা নাহল, রুকু-১২)
বস্তুত, এটা ধৈর্যের ঐ শ্রেণী যা নৈতিক দিক থেকে একটি বৃহত্তর সাহসিকতার কাজ। মুসলমানদেরকে এই বাহাদুরী অর্জনের শিক্ষা বার বার দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এ কথাও বলে দেয়া হয়েছে যে, এই ধৈর্য এবং সাহসিকতা যেন দুশমনদের ভয় বা নিজের দুর্বলতার জন্য না হয়; বরং তা কেবল আল্লাহর সাহায্যের জন্যই হতে হবে। “এবং যারা স্বীয় প্রতিপালকের রেজামন্দির জন্য ধৈর্য অবলম্বন করেছে এবং নামাজ কায়েম করেছে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে আমার প্রদত্ত রিজিক হতে খরচ করেছে এবং মঙ্গলের দ্বারা অমঙ্গলকে প্রতিহত করেছে, তাদের জন্য রয়েছে আখেরাতের শুভ পরিণাম।” অপর এক আয়াতে আবারো ঘোষণা করা হয়েছে, “তোমরা যে ধৈর্য ধারণ করেছ, এর বিনিময়ে রয়েছে তোমাদের জন্য শান্তি। সুতরাং আখেরাতের পরিণাম কত না উত্তম হলো।” (সূরা রাআ’দ : রুকু-৩)
এই আয়াতের একটি বিশেষ কথা খুবই লক্ষ্যযোগ্য। এর শুরুতে কয়েকটি নেক কাজের কথা বলা আছে। ধৈর্য, নামাজ, খয়রাত, মন্দের পরিবর্তে ভালো গ্রহণ করা ইত্যাদি। কিন্তু ফেরেশতাগণ এই মুমিনের যে বিশেষ গুণের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার দোয়া করেছেন, তাহলো শুধু ধৈর্য। অর্থাৎ সহ্য করার গুণ কেননা সহ্য গুণই হচ্ছে আসল বস্তু। যার মাঝে এই গুণের সমাবেশ ঘটবে, সে ইবাদতের কষ্টও বরদাশত করতে সক্ষম হবে। বিপদ ও মুসীবত সহ্য করে দুশমনদের দুষ্কর্মের বিনিময় পুণ্য কর্মের দ্বারা দিতে সক্ষম হবে। সুতরাং অপর একটি আয়াতে এ কথারই বিশ্লেষণ করা হয়েছে যে, ক্ষমা অনুকম্পা ও মন্দ কাজের বদলে পুণ্য কর্মের গুণাবলী বিকশিত হওয়ার মূলে রয়েছে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার প্রাণবন্যা। ইরশাদ হচ্ছে, “ভালো এবং মন্দ এক সমান নয়। মন্দের প্রত্যুত্তর ভালোর দ্বারা দাও; যার মাঝে এবং তোমার মাঝে দুশমনী রয়েছে সে সত্তরই বন্ধুতে পরিণত হবে; এবং এ কথা সে-ই পালন করে যে ধৈর্যশীল এবং এই সুযোগ সেই লাভ করে যে সৌভাগ্যবান। (সূরা ফুসসিলাত, রুকু-৫)
যারা জুলুম-অত্যাচার করে এবং দেশে না-হক ফেতনা ফাসাদের সৃষ্টি করে তাদের উপর আল্লাহর গজব অবধারিত। এজন্য একজন দৃঢ়চিত্ত মুসলমানদের দায়িত্ব হচ্ছে এই যে, যখন প্রতিপক্ষ তাদের উপর জুলুম করবে, অত্যাচার করবে, তখন বাহাদুরী ও সাহসিকতার সাথে তার বরদাশত করা এবং ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে তা অবলোকন করা। “অবশ্যই (শান্তির) পথ তাদের উপর প্রযোজ্য যারা মানুষের উপর জুলুম করে এবং দেশে না-হক ফাসাদ সৃষ্টি করে, তাদেরই জন্য রয়েছে বেদনাকর আজাব; তবে যে বরদাশত করেছে, ক্ষমা করেছে অবশ্যই তা হচ্ছে বড় হিম্মতের কাজ।” (সূরা শূ’রা : রুকু-৪)।
দৃঢ়পদ থাকা
সবর ও ধৈর্যের পঞ্চম বিশেষত্ব ও বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, যুদ্ধ দেখা দিলে যুদ্ধের ময়দানে বীরত্ব সহকারে দৃঢ়পদ থাকা ও হতোদ্যম না হওয়া। কুরআনুলকারীমে এই শব্দটিকে এতদার্থে বার বার ব্যবহার করা হয়েছে এবং যে সকল লোক এই গুণে বিভূষিত তাদেরকে সত্যবাদী এবং সত্যাশ্রয়ী বলে সাব্যস্ত করা হয়েছে। কেননা তারা আল্লাহর সাথে যে অঙ্গীকার করেছে তা পূরণও করেছে। ইরশাদ হচ্ছে, “এবং ধৈর্যধারণকারী ও দৃঢ়পদধারী মুসীবতের সময়, বিপদকালে ও যুদ্ধের ময়দানে (এ গুণের অধিকারী) তারাই হচ্ছে সত্যবাদী ও পরহেজগারী অর্জনকারী।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-২২)
আর যদি যুদ্ধ লেগেই যায়, তাহলে বিজয় লাভের শর্ত হচ্ছে চারটি। (১) আল্লাহর স্মরণ, (২) ইমামে ওয়াক্ত বা বর্তমান প্রশাসকের আনুগত্য, (৩) পরস্পর বন্ধুত্ব ও একতা এবং (৪) যুদ্ধের ময়দানে সাহসিকতাপূর্ণ ধৈর্য ও দৃঢ়পদ থাকা। ইরশাদ হচ্ছে, “হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা কোনও দলের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, তখন দৃঢ়পদ ও অবিচল থাক এবং আল্লাহকে বেশী করে স্মরণ কর হয়ত তোমরা সফলতা লাভ করবে এবং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, একে অন্যের সাথে ঝগড়া করো না, এতে তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং তোমাদের প্রভাব ও ওজনশীলতা দূর হয়ে যাবে, সুতরা তোমরা ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করত অবশ্যই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।” (সূরা আনফাল : রুকু-৬)
সত্যের সহায়তাকারীদের বাহ্যিক সংখ্যার স্বল্পতা এই ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার দ্বারা এবং রূহানী শক্তির বিকাশের দ্বারা পরিপূরণ হয়ে যায়। ইতিহাসের প্রতি নজর করলে দেখা যায় যে, এমন অনেক ঘটনা ঘটে গেছে, যেখানে কতিপয় স্থিরচিত্ত ও দৃঢ়পদ বাহাদুর বড় বড় বিশাল সেনাবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে দিয়েছে। ইসলাম এই বিশেষত্বটি স্বীয় প্রাণোৎসর্গকারীদের জানিয়ে দিয়েছিল। যখন তাদের সংখ্যা ছিল অল্প এবং দুশমনদের সংখ্যা ছিল বিরাট। ইরশাদ হচ্ছে, “হে নবী! ঈমানদারদেরকে দুশমনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য উৎসাহিত কর, তারা যদি ধৈর্যশীল দৃঢ়পদ বিশজন হয়, তাহলে দু’শ জনের উপর বিজয়ী হবে; তারা যদি একশ জন হয়, তাহলে এক হাজারের উপর বিজয়ী হবে; কেননা তারা বুঝে না। এখন আল্লাহ পাক আরও সহজ করে দিয়েছে, তিনি জানতে পেরেছেন যে, তোমাদের মাঝে দুর্বলতা আছে। তোমরা যদি দৃঢ়পদ ধৈর্যশীল একশত জন হও তাহলে দু’শ জনের উপর বিজয়ী হবে। আর যদি ধৈর্যশীল এক হাজার হও, তাহলে আল্লাহর নির্দেশক্রমে দু’হাজারের উপর বিজয়ী হবে। অবশ্যই আল্লাহপাক ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। (সূরা আনফাল : রুকু-৯)
যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধের প্রচ-তার মাঝে মুসলমানদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা যেন নিজেদের সংখ্যা স্বল্পতার কথা চিন্তা না করে বরং দৃঢ়পদে ও সাহসিকতার সাথে শত্রুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একই সাথে এই সান্ত¡না দেয়া হয়েছে যে, আল্লাহর সাহায্য ধৈর্য ও সবর অবলম্বনকারীদের সাথে রয়েছে। হযরত তালুত (আ:) এবং জালুতের কাহিনীর মাঝেও এই দিকনির্দেশনার প্রতি সুস্পষ্ট ইঙ্গিত প্রদান করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে, “তালুতের সঙ্গীরা বললো, আজ জালুত ও তার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই। যাদের বিশ্বাস ছিল যে, তাদেরকে আল্লাহর সামনে হাজির হতে হবে, তারা বললো, অধিকাংশ সময় আল্লাহর নির্দেশে স্বল্পসংখ্যক বৃহত্তর দলের উপর বিজয় লাভ করেছে এবং আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন। তারপর তারা যখন জালুতের বাহিনীর প্রতি অগ্রসর হলো, তখন বললো, হে আল্লাহ আমাদের উপর ধৈর্যের প্রবাহ জারী করে দিন এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-২৩)
আল্লাহ পাক কমজোর ও স্বল্পসংখ্যক মুসলমানদের কামীয়াবীর জন্যও শর্ত রেখেছেন। এবং বলে দিয়েছেন, যারা ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে কাজ করে এবং যাবতীয় মুশকিলাতে আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ পাক অবশ্যই তাদেরকে বিজয়ী করবেন। ইরশাদ হচ্ছে “সুতরাং তোমার প্রতিপালক তাদেরই জন্য যারা বেদনার পর হিজরত করেছে, তারপর জিহাদ করেছে এবং ধৈর্য ধারণ করেছে।” (সূরা নহল : রুকু-৪)
দুনিয়ার সালতানাত ও হুকুমতের জন্যও এই ধৈর্য ও দৃঢ়তার মূল্যবান গুণ অর্জনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বনী ইসরাঈলদেরকে ফেরাউনের গোলামী হতে মুক্তির পর যখন কাফিরদের মোকাবেলা করার সময় আসে তখন হযরত মূসা (আ:) তাদেরকে সর্বপ্রথম এই শিক্ষা দিলেন। “মূসা (আ:) স্বীয় কাওমের লোকদের বললেন, আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা কর এবং ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে কাজ কর, নিশ্চয়ই জমিন আল্লাহরই জন্য, স্বীয় বান্দাহদের মাঝে যাকে তিনি ইচ্ছা করেন এর মালিক বানান এবং শেষ শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত। (সূরা আ’রাফ : রুকু-১৫)
বনী ইসরাইল মিসর, শাম, কেনানে ও তার আশপাশে বসবাসরত মূর্তি পূজারীদের থেকে সংখ্যায় অনেক কম ছিল। কিন্তু যখন তারা হিম্মত প্রদর্শন করে, বীরত্ব ও ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করলো, তখন সকল বিপদ কেটে গেল। বিপুলসংখ্যক শত্রু কর্তৃক পরিবেষ্টিত থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘকাল যাবৎ স্বাধীন সা¤্রাজ্য পরিচালনায় সক্ষম হয়। আল্লাহর পাক বনী ইসরাঈলের এই কামিয়াবীকে এভাবে ব্যক্ত করেছেন। এর মূলে রয়েছে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। ইরশাদ হচ্ছে, “এবং ঐ সকল লোক যাদেরকে কমজোর মনে করা হত, তাদেরকে সেই জমিনের অধিকার দেয়া হয়, সেখানে আমি বরকত নাজিল করেছি এবং তোমার প্রতিপালকের বাক্য বনী ইসরাঈলের প্রতি ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার দরুন পূর্ণতা লাভ করেছে এবং আমিই ফেরাউন এবং তার কাউমের কর্মকা-কে এবং তাদের স্থাপনাসমূহকে বরবাদ করে দিয়েছি।” (সূরা আ’রাফ : রুকু-১৫)
এর দ্বারা বুঝা গেল যে, বনী ইসরাঈলের মত কমজোর কাওম, ফেরাউন ও তার শক্তিশালী কাউমের বিরুদ্ধে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার দ্বারাই বিজয় লাভ করেছিল। যার ফলে আল্লাহ পাক শামের বরকতময় জমিনের হুকুমত দান করেন। অপর এক স্থানে এই বৈশিষ্ট্যকে এভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। “এবং বনী ইসরাঈলের মাঝে আমি এমন নেতা নির্বাচন করি, যারা আমার নির্দেশ মত পথপ্রদর্শন করতেন, যখন তারা ধৈর্যধারণ করেছিল এবং আমার নিদর্শনাবলীর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছিল।” (সূরা সিজদাহ : রুকু-৩)
এই আয়াতে বনী ইসরাঈলের বিজয় লাভের দু’টি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। (১) আহকামে ইলাহীর উপর বিশ্বাস। (২) নির্দেশ পালনে ধৈর্য ও দৃঢ়পদ থাকা। এই দুটি গুণ দুনিয়ার প্রত্যেক কাওমের উন্নতির ভিত্তিপ্রস্তর।
অহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের সাার্বিক বিজয় অর্জিত হয়নি। এ যুদ্ধে সত্তরজন মুসলমান শাহাদতবরণ করেন। এতে কোন কোন মুসলমানের মনে বেদনার সূচনা হয়। এই বেদনাও অনুশোচনার রেশ ধুয়েমুছে ফেলার জন্য অতীত পয়গাম্বরদের জীবনেতিহাস তাদেরকে শোনানো হয়। “বহু নবীর সাথে তার বহুসংখ্যক সহচর যুদ্ধ করেছে, তারা আল্লাহর রাস্তায় যে দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয়েছে এতে ভীত হয়নি, দুর্বল হয়নি এবং ছন্নছাড়া হয়নি। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন। তাদের কথা এছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, হে আমাদের আল্লাহ! আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন, সীমালংঘনকারীকে মাফ করুন, আমাদের পদ যুগল সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফির কাওমের বিরুদ্ধে সাহায্য দান করুন।” (সূরা আলে ইমরান : রুকু-১৫)
এই আয়াতে পাকের দ্বারা ধৈর্যের ভুল ধারণাকে অপসারণ করা হয়েছে। এবং বলে দেয়া হয়েছে যে, ধৈর্য অন্তরের দুর্বলতা, দারিদ্র্যের জন্য নিশ্চুপ থাকা, অসহায় অবস্থায় বাধ্য জীবনযাপনের নাম নয়; বরং অন্তরের সীমাহীন শক্তি, হিম্মতের বুলন্দি দৃঢ় আশা ও আকাক্সক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর উপর ভরসা করে সকল মুসীবত বরদাশত করার নাম। একজন ধৈর্যশীল ব্যক্তির কাজ হচ্ছে প্রতিকূল ঝড়-তুফানের সময়ও অন্তরের দুর্বলতা প্রকাশ না করা, হিম্মত হাত ছাড়া না করা এবং আল্লাহর দরবারে অতীত অপরাধ ক্ষমা ও বিজয় অর্জনের প্রার্থনা করা। যেন আল্লাহর পাক তাকে দৃঢ়পদ থাকার শক্তি দান করেন এবং দুশমনদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করেন। এ জন্যই আল্লাহ পাক মুসলমানদের কামিয়াবীকে দুটি গুণের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। যাতে করে তারা আল্লাহর দিকে অন্তর দিয়ে অনুগত থাকে এবং যাবতীয় মুশকিলাতে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা এবং দৃঢ়তাসহ অবিচল থাকে।
দুনিয়ার জীবনে কামিয়াবীর সাথে আখেরাতের জীবন জান্নাত লাভের মূলেও রয়েছে ধৈর্য, সহনশীলতা ও অবিচলভাবে আল্লাহর পথে নিরত থাকা। সত্যের পথে বিভিন্ন মুশকিলাত পেশ হওয়ার একটি উপকারিতা এই যে, এর দ্বারা ভালো-মন্দের তারতম্য নির্ণীত হয়। এর ফলে উভয়ের পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠে। ইরশাদ হচ্ছে, “তোমরা কি ধারণা কর যে তোমরা জান্নাতের প্রবেশ করবে, অথচ এখনো আল্লাহর তোমাদেরকে পরীক্ষায় মাধ্যমে কে জিহাদ করবে এবং কে ধৈর্য অবলম্বন করবে, তা পৃথক করেননি।” (সূরা আলে ইমরান : রুকু-১৪) (অসমাপ্ত)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন