জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। গতকাল বিকেলে ফাঁসি কার্যকরের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। বিকেলে ফাঁসির মঞ্চে ইট-বালির বস্তা ঝুলিয়ে মহড়া সম্পন্ন করেন জল্লাদরা।
কারা সূত্র জানায়, আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকরের জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত। ফাঁসির মঞ্চে জল্লাদদের মহড়াও সম্পন্ন হয়। মহড়ার সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শাজাহানসহ আরো কয়েকজন জল্লাদ। এখন ফাঁসি কার্যকর সময়ের ব্যাপার মাত্র।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকরা সপরিবারে হত্যা করেছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। দীর্ঘ ৩৮ বছর বিচারের অপেক্ষার পর একে একে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুক রহমান, মেজর বজলুল হুদা, মেজর একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ আর্টিলারি, মহিউদ্দিন ল্যান্সার ও সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খানকে। সর্বশেষ গতকাল তাদের আরেক সহযোগি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদকে ফাঁসির সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গতকাল রাতেই তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারকার্য শুরু করলে তিনি গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে আত্মগোপন করেন। তিনি ২৩ বছর ধরে পলাতক থাকলেও গত ৬ এপ্রিল মধ্যরাতে রিকশায় ঘোরাঘুরির সময় রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। পরে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে সিটিটিসি। এ সময় মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। গত ৮ এপ্রিল মৃত্যুর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব দোষ স্বীকার করে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চান আবদুল মাজেদ। প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কারা কর্তৃপক্ষের ডাকে আবদুল মাজেদের স্বজনরা কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। এ সময় স্বজনদের সাথে শেষ স্বাক্ষাৎ করেন তিনি।
ঘাতক ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বাটামারা গ্রামের মরহুম আলী মিয়া চৌধুরীর ছেলে। তিনি ৪ কন্যা সন্তান ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন