প্রযুক্তি জ্ঞান না থাকায় সফল হচ্ছে না উদ্দেশ্য
প্রযুক্তি জ্ঞান না থাকায় ‘ভার্চ্যুয়াল আদালত’ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অধিকাংশ আইনজীবী। অনেকেই কম্পিউটার কিংবা স্মার্ট ফোন চালাতে জানেন না। অন্যের সহযোগিতা নিতে তাদের কোর্টে আসতেই হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকল্পে ‘ভার্চ্যুয়াল কোর্ট’র চালু হলেও এ থেকে তেমন সুফল পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন ‘ভার্চ্যুয়াল-বিরোধী’ আইনজীবীরা। ভার্চ্যুয়াল কোর্ট বন্ধের দাবিবে বিক্ষোভ হয়েছে কোথাও কোথাও। তবে এই অচলাবস্থা নিরসন হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান বলেন, ভার্চ্যুয়াল সুবিধা নিতেও আইনজীবীদের কোর্টে আসতে হচ্ছে। অধিকাংশ আইনজীবী প্রক্রিয়াটা বুঝতে পারছেন না। পিটিশন কম্পোজকরা সহ অন্য বিষয়ে অন্যের সহযোগিতা নিতে কোর্টে আসতেই হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব কতটা বজায় রাখা সম্ভব ? ভিডিও কনফারেন্স ক›জন আইনজীবীই বা বোঝেন? আমরা তাই প্রক্রিয়াগত জটিলতার কারণে ঢাকা আইনজীবী সমিতি ভার্চ্যুয়াল কোর্ট বাতিল করে প্রচলিত আদালত খুলে দেয়ার আহবান জানাচ্ছি।
রাজশাহী বারের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী বলেন. রাজশাহী বারের ৯০ ভাগ আইনজীবী প্রযুক্তিগত বা ডিজিটাল কার্যক্রমে অভ্যস্ত নন।প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ন্যূনতম ধারণা পাননি তারা। দু’চার জন ভার্চ্যুয়াল কোর্ট নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও অধিকাংশই এই সিস্টেমে আগ্রহী নন।
জামালপুর জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ এনায়েত হোসেন হিটলার বলেন, ১০ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের বিষয়ে নির্দেশনা আসে। আমরা নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা ভার্চ্যুয়াল কোর্টে অংশ গহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানউল্লাহ আকাশ বলেন, ভার্চ্যুয়াল কোর্ট পরিচারনার জন্য ইউএনডিপির পক্ষ থেকে আইনজীবীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা ছিলো। তেমন প্রশিক্ষণ না থাকায় অধিকাংশ আইনজীবী ভার্চ্যুয়াল কোর্টে আগ্রহী নন।
ভার্চ্যুয়াল কোর্ট রীতিমতো বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে পাবনা আইনজীবী সমিতি। এর সভাপতি সাহাবুদ্দিন সবুজ বলেন,স্ব স্ব অবস্থানে থেকে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালাতে হলে সবার বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ, স্ক্যানার মেশিন এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকা জরুরি। এ মুহূর্তে এসব কেনার মতো সামর্থ্য নেই।
ভার্চ্যুয়াল কোর্ট বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে বরিশাল আইনজীবী সমিতি। বারের সাধারণ সম্পাদক কাইয়ুম খান কায়ছার বলেন, বরিশালে ইন্টারনেটের গতি খুবই কম। আইনজীবীদের বড় একটি অংশ প্রবীণ হওয়ায় তারা ফেসবুক, ইন্টারনেট ইত্যাদি চালাতে পারেন না। তাই ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতি আমরা বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে জেলা বারগুলোতে উদ্ভুত পরিস্থিতি দ্রুত নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান। গতকাল বুধবার তিনি বলেন, কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিলো। সেগুলো নিরসনও হয়ে গেছে। সব জেলা বারে একজন করে ‘ ফোকাল পারসন’ দেয়া হয়েছে। আইনজীবীদেরকে তারা সহযোগিতা করছেন। এর সুফলও আসতে শুরু করেছে। আজ ( বুধবার) প্রতিটি জেলা আদালতে গড়ে ৪০/৫০ জন করে জামিন পেয়েছেন। সারাদেশে এ সংখ্যা হাজারের মতো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন