আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান-তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো মামুলি বিষয়েও আদেশ-নির্দেশ দিতে হচ্ছে হাইকোর্টকে। বিধিবদ্ধ সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান নিষ্পত্তি, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল, মামলা দ্রæত নিষ্পত্তি, পুনঃঅনুসন্ধান-তদন্তের নির্দেশনা দিতে হচ্ছে উচ্চ আদালতকেই। এমনকি অনুসন্ধান করবে কি করবে নাÑ এ সিদ্ধান্ত চেয়ে সংস্থাটি নিজেই ইদানিং শরণাপন্ন হচ্ছে আদালতের। ফলে দুর্নীতি দমনে সংস্থাটির আন্তরিকতা, সদিচ্ছা, দায়বদ্ধতা, বিধিবদ্ধ স্বনির্ভরতা ও আইনি স্বাধীনতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। বিশ্লেষকদের মতে, দুদকের সাম্প্রতিক এই প্রবণতা শুধু সংস্থাটির ধারণাগত বৈশিষ্ট্যের পরিপন্থিই নয়Ñ বরং যে প্রতিশ্রæতি ও দায়বদ্ধতা থেকে সংস্থাটির জন্ম-বর্তমান কমিশনের কার্যক্রম ঠিক তার বিপরীত বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। মানুষের মাঝে সৃষ্টি করছে প্রচÐ আস্থাহীনতা।
তবে এ কথার সঙ্গে দ্বি-মত পোষণ করছে দুদক। সংস্থাটির সিনিয়র কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মোজাম্মেল হক খান বলেন, এখানে আস্থাহীনতার কোনো বিষয় নেই। দুর্নীতির মামলা চ‚ড়ান্ত বিচারের জন্য আদালতেই যায়। এ কারণে মানুষ হয়তো অধিকতর নিশ্চয়তার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন। অভিযোগকারীরা হয়তো মনে করছেন, আদালতের নির্দেশনা থাকলে দুদক দ্রæত ও সিরিয়াসলি বিষয়টি দেখবে। এটি তাদের ধারণা। মূলত দুদক নিজের এখতিয়ার বলেই তফসিলভুক্ত অপরাধের অনুসন্ধান-তদন্ত করে থাকে। এ বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার প্রয়োজন নেই।
ফেলে দেয়া হয় দুর্নীতির অভিযোগ : দুদকের অনুসন্ধানযোগ্য তথ্য প্রাপ্তির বড় উৎস সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত দুর্নীতি বিষয়ক প্রতিবেদন। কিন্তু গত ৪ বছরে প্রতিষ্ঠানটি দুর্নীতির তথ্য সম্বলিত অধিকাংশ প্রতিবেদনই আমলে নেয়নি। জানা গেছে, সংস্থাটি থেকে বদলি হয়ে যাওয়া তৎকালিন মহাপরিচালক কেএম সোহেল অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান ছিলেন। তখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতির প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই না করে নিজেই ওয়েস্ট পেপার বিনে ফেলে দিতেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৬ সালে অন্তত ২৮১টি দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য সম্বলিত পেপার ক্লিপিং যাচাই-বাছাই কমিটিতে (যাবাক) পাঠানো হয়। এসব পেপার কাটিং থেকে বেশ কিছু আলোচিত দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হয়। ২০১৭ সালে যাবাকে পাঠানো হয় ২৭৭টি পেপার ক্লিপিং। ২০১৮ সালে ২৩৮টি ক্লিপিং। ২০১৯ সালে যাবাকে দেয়া হয় ৪৭৮টি পেপার ক্লিপিং। ২০২০ সালে ১৫৬টি পেপার ক্লিপিং পাঠানো হয়। ২০২১ সালে দেয়া হয় ৭৩টি ক্লিপিং। ২০২২ সালে ১৫৫টি ক্লিপিং। কিন্তু এসব ক্লিপিংয়ের একটিও যাবাক ‘অনুসন্ধানযোগ্য‘ বলে মনে করেনি।
সুযোগ নেই অভিযোগের পরিণতি জানার : তফসিলভুক্ত অপরাধের তথ্য সম্বলিত আরেকটি বৃহৎ উৎস ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষের দায়েরকৃত অভিযোগ। অভিযোগ গ্রহণ করে দুদক অভিযোগকারীকে একটি ‘রিসিভ কপি’ দেয়। তবে অভিযোগ জমা দেয়ার পর মাসের পর মাস এমনকি বছর পার হয়ে গেলেও অভিযোগকারী অভিযোগের পরিণতি জানতে পারেন না। দুর্নীতি দমন কমিশনে এমন কোনো বৈধ ব্যবস্থা রাখা হয়নি যা থেকে অভিযোগকারী সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ফাইলটির অবস্থান জানতে পারেন। তবে অভিযোগ রয়েছে, দুর্নীতির বিষয়ে দুদক অফিসিয়ালি ‘অ্যাকশন’ নিতে অনাগ্রহী হলেও অভিযোগ যাচাই-বাছাই সেলের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজেদের ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখেন। কমিশনের সিল-স্বাক্ষরসমেত এই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ ‘নিষ্পত্তি’ দেখিয়ে দেন। বিনিময়ে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় আর্থিকসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা। এ কারণেও অনেক দুর্নীতির অভিযোগ প্রক্রিয়াগত পদ্ধতির বাইরে অনুসন্ধান ছাড়াই ‘নিষ্পত্তি’ হয়ে যায়। তবে এভাবে কমিশনকে পাশ কাটিয়ে অভিযোগ নিষ্পত্তি আইনত অসম্ভব। কিন্তু অভিযোগের অনুসন্ধান এবং মামলার পর তদন্ত পর্যায়ে অব্যাহতি পেয়েছেনÑ এমন দায়মুক্তির ভুয়া সনদ মাঝেমধ্যেই ধরা পড়ছে। অবৈধ সম্পদের মামলায় কারাদÐপ্রাপ্ত ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বরখাস্ত হওয়া প্রধান নির্বাহী মো: হেমায়েত উল্লাহকে দুদক দায়মুক্তি দেয়। এমন একটি চিঠি দেখিয়ে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তি অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিও নেন। পরবর্তীতে দেখা যায়, তিনি এবং তার স্ত্রীর ফরিদা আক্তারের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। তদন্তের পর চার্জশিট হয়েছে। দুই আসামির অনুপস্থিতিতেই বিচারও সম্পন্ন হয়। বিচারে এই দম্পত্তিকে ৬ কোটি ৪২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৪ বছর কারাদÐ দেন আদালত। গত ২০ ডিসে কিন্তু মামলা তদন্তাধীন অবস্থায় কীভাবে তিনি দায়মুক্তির ‘সনদ’ পেলেনÑ সেই প্রশ্ন তোলেনি দুদক। জানা গেছে, ২ লাখ টাকা ব্যয়ে দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় কথিত এই ‘দায়মুক্তির সনদ’ খরিদ করেন তিনি। অত্যন্ত নিখুঁত ওই কাগজ দুদক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া তৈরি করা অসম্ভব প্রায়।
দুদকই উৎসাহ যোগাচ্ছে মামলায় : অনুসন্ধান-তদন্ত পর্যায়ে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হয়ে আইনের আশ্রয় নিলে সেটিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুসন্ধান-তদন্ত নিষ্পত্তির পথে অন্তরায় বলে চিহ্নিত করেন। অথচ তফসিলভুক্ত অপরাধের তথ্য সম্বলিত অভিযোগ অনুসন্ধানের বিবেচনায় না নিয়ে দুদক নিজেই অভিযোগকারীকে মামলায় উৎসাহ দিচ্ছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিগণ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন। রিট করছেন। শুনানি শেষে হাইকোর্ট অনুসন্ধানের জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছে দুদকে। দুদকের নিষ্ক্রিয়তার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য নতুন মামলা। এসব রিটে দুদককে প্রধান বিবাদী করা হচ্ছে। ফলে প্রতিটি মামলায় নিয়োগ করতে হচ্ছে আইনজীবী। আইনজীবীর পেছনে সংস্থাটির খরচ হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অথচ দুদক শুরুতেই অভিযোগটি আমলে নিলে হয়তো রিটের সৃষ্টি হতো না। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক কয়েকটি রিট সংস্থাটির এই প্রবণতাকেই নির্দেশ করছে।
সংবাদ মাধ্যমে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলামের বিপুল অবৈধ সম্পদ এবং সরকারদলীয় এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সরকারি বাড়ি দখল বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কিন্তু এ বিষয়ে দুদক ছিল নিষ্ক্রীয়। এ প্রেক্ষাপটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত বছর ১০ আগস্ট বিষয়টি উচ্চ আদালত উপস্থাপন করেন। আদালত তখন তাকে দুদকে অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। এ প্রেক্ষিতে তিনি গত বছর ১১ আগস্ট দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ জমা দেন। কিন্তু অভিযোগের বিষয়ে নিষ্ক্রিয় থাকে দুদক। এ প্রেক্ষাপটে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন গত বছর ৩০ অক্টোবর রিট করেন। শুনানি শেষে গত ১ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ দুদক, রাজউকসহ বিবাদীদের প্রতি রুলজারি করেন। বাধ্য হয়েই এখন দুদককে একদিকে হাইকোর্টে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে, অন্যদিকে অনুসন্ধানও চালাতে হচ্ছে।
বন্ধকী সম্পত্তির তুলনায় বহুগুণ বেশি টাকা (৬-৭ শ‘ কোটি টাকা) ঋণ প্রদান, ঋণ প্রদানে সহায়তা করা এবং বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম নিবাসী মো: আনোয়ার হোসেন। কিন্তু দুদক যথাযথ ম্যানুয়াল অনুসরণ না করেই দায়সারা গোছের প্রতিবেদন দিয়ে দায়মুক্তি দেয় অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুস সালাম মোল্লা, নোমান গ্রæপের কর্মকর্তা আবুল কাশেম ওরফে কমিশন কাসেম এবং রাকিবুল ইসলামকে। অভিযোগকারী আনোয়ার হোসেন এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে রিট করেন। এ প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত বছর ২ সেপ্টেম্বর ব্যাংকার আব্দুস সালাম মোল্লা, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডলি কনস্ট্রাকশন, নোমান গ্রæপ এবং জজ ভুইয়া গ্রæপের রেকর্ডপত্র তলব করেন। একইসঙ্গে তাদের দায়মুক্তি প্রদানের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করেন। এ প্রেক্ষিতে দুদককে একদিকে যেমন আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হতে হচ্ছে। অন্যদিকে আদালতে ঘটনার ব্যখ্যা প্রদানসহ রেকর্ডপত্রও দাখিল করতে হচ্ছে।
বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে টিআর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দিয়েছিলেন জনৈক সুলতান আহমেদ। এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে তিনি গত বছর ২৭ অক্টোবর দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধের বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়। কিন্তু দুদক অভিযোগটি আমলে না নিয়ে ফেলে রাখে। এ প্রেক্ষাপটে অভিযোগকারী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শুনানি শেষে গত ৯ জানুয়ারি বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চ ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে দুদককে সময় বেঁধে দেন।
হাইকোর্টের দ্বারস্থ দুদক নিজেই : দুদকের নিষ্ক্রিয়তায় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উচ্চ আদালতে যেতে পারেন অনুসন্ধান-তদন্তের নির্দেশনা চাইতে। এটিই হচ্ছে আইনসিদ্ধ ও প্রচলিত পন্থা। কিন্তু ইদানিং দুদক নিজেই নিজের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে নির্দেশনা চাইছে হাইকোর্টে।
গত ৯ জানুয়ারি ‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি।’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় দৈনিক। প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্যের মূল ভিত্তি ছিল দুদকে জমা পড়া ২টি অভিযোগ। এই সংবাদকে অত্যন্ত ‘ক্রেডিবল’ দাবি করে এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা চান দুদকের পক্ষে উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই চালানো সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মামলার আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। কিন্তু আদালত এ বিষয়ে কোনো আদেশ না দিলেও দুদকের এই আইনজীবী সংবাদকর্মীদের জানান, তাকসিম এ খানের দুর্নীতির বিষয়ে দুদককে জোর অনুসন্ধান করতে বলেছেনÑ মর্মে জানানিয়েছেন। দুদক এ বিষয়ে কী ব্যবস্থা নিয়েছেÑ তা ১৫ দিনের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলেছেন বলেও জানান তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায়, হাইকোর্ট এ বিষয়ে কোনো আদেশই দেননি। অন্যদিকে তাকসিম এ খানের বিষয়ে আরও আগে থেকেই অনুসন্ধান চলমান বলে জানায় কমিশন।
দুদকের লিগ্যাল শাখা জানায়, তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে য্ক্তুরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ির করার প্রতিবেদনের বিষয়ে হাইকোর্টে উপস্থাপনের জন্য অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খানকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। তা সত্তে¡ও কিসের ভিত্তিতে ‘দুদকের আইনজীবী’ হিসিবে পরিচিত (দুদকের চিফ প্রসিকিউটরও বলেও উল্লেখ করেন কেউ কেউ) খুরশীদ আলম খান হাইকোর্টের নির্দেশনা চাইলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খুরশীদ আলম খান কোনো বিবেচনা থেকে আদালতে বিষয়টি উপস্থাপনা করেছেন এটি তিনিই ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এ প্রতিবেদককে বলেন, সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে আমি তাকসিম এ খানের বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা প্রয়োজন। তাই এটি আদালতের দৃষ্টিতে এনেছি।
দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশীর সম্পত্তি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে দুদক ত্বরিৎ সিদ্ধান্ত নেয়নি। পরে সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল ১৫ জানুয়ারি রোববার বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চ দুদকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। এক মাসের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন আদালত। হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিষয়ে টিভি স্ক্রল দেখে দুর্নীতি দমন কমিশন গতকালই এ বিয়য়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।
এর আগে ২ জানুয়ারি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ৩০ হাজার গ্রাহকের নথি গায়েব হওয়ার বিষয়টিও হাইকোর্টে উপস্থাপন করেন। তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় দুদক তার এখতিয়ার বলেই বিষয়টি অনুসন্ধানের কথা। কিন্তু নিষ্ক্রিয়তার প্রেক্ষাপটে দুদকের অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান আদালতের দৃষ্টিতে আনেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশনা দেন। সেইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে রাজউকের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলেন। নিজের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের নির্দেশনা চাওয়ার এমন একাধিক নজির রয়েছে। এ হিসেবে দুদক নিজেই নিজের নিষ্ক্রিয়তাকে স্বীকার করে নিচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন