মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চীনের সাথে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে কথা হয়েছে তার। মোদি তাকে বলেছিলেন, চীনের কার্যকলাপের ফলে শঙ্কিত ভারত। এর পরে ভারত-চীন বিরোধে মধ্যস্থতা করতে তিনি প্রস্তাব দেন মোদিকে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বক্তব্য অস্বীকার করেছে ভারত।
সরকারি ভাবে কিছু না বলা হলেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ৪ এপ্রিলের পরে কোনও কথোপকথনই হয়নি মোদি এবং ট্রাম্পের। কূটনীতিকদের দাবি, ভারত এই প্রথম ট্রাম্পের বক্তব্যের সত্যতা খারিজ করল। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন আচরণ নতুন নয়। আগেও বারবার মোদির সাথে কথা না বলেও তাকে উদ্ধৃত করে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। মোদি ঘোষণা করার আগেই আগ বাড়িয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত বলে দিয়েছেন। সম্প্রতি ৪ এপ্রিল ফোনে দু’জনের আলোচনার পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, আমেরিকার সঙ্গে করোনা সংক্রান্ত সহযোগিতা, আর্থিক ক্ষেত্রে কোভিড-১৯-এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে কথা হয়েছে। আলোচনা হয়েছে যোগব্যায়াম ও আয়ুর্বেদের উপকারিতা নিয়েও। এর পরই ট্রাম্প সাংবাদিক বৈঠকে জানান, তিনি মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন একমাত্র হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের রফতানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার অনুরোধ করতেই। তিনি এমনও বলেন, ‘ভারত যদি সিদ্ধান্ত বদল না-করে তবে প্রত্যাঘাত হবে।’ ট্রাম্পের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে মুখ কোন মন্তব্য করেনি নয়াদিল্লি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই ওষুধ সংক্রান্ত ফোনালাপের কয়েক সপ্তাহ আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন মোদির সঙ্গে তার কথোপকথনের ধারাবিবরণী দিয়ে। গুজরাতের সর্দার প্যাটেল স্টেডিয়ামে তার মোদির সঙ্গে যৌথ জনসভা করার কথা ছিল। ট্রাম্প দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি নাকি তাকে জানিয়েছেন, ওখানে নাকি লাখ লাখ লোক থাকবে। তার ধারণা পঞ্চাশ থেকে সত্তর লাখ লোক থাকবেন শুধুমাত্র বিমানবন্দর থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত পথে। এর পর কলোরাডোতে একটি জনসমাবেশে ট্রাম্প ওই সংখ্যা আরও বাড়িয়ে বলেন, ‘আহমেদাবাদে ষাট লাখ থেকে এক কোটি লোক হবে বলে তিনি মোদির কাছে শুনেছেন।’ ট্রাম্পের মন্তব্য শুনে অবাক হয়েছে ভারত সরকার এবং গুজরাত প্রশাসন! কারণ গুজরাতের মোট জনসংখ্যাই সত্তর লাখ!
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চেয়ে ও হার্লে ডেভিডসন ব্র্যান্ডের মোটরবাইকের উপরে শুল্ক নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেও দিল্লিকে বিপাকে ফেলেছিলেন ট্রাম্প। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ট্রাম্প অপ্রত্যাশিত কথা বলবেন, এটা এখন ভারতের প্রত্যাশার মধ্যে চলে এসেছে। তবে এসব নিয়ে সমস্যা থাকলেও ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল বলেও দাবি করছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সূত্র: এবিপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন