বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যেসব কারণে ট্রাম্পের পরাজয়

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত হয়ে থাকবেন তার ব্যক্তিগত আচরণ ও উপর্যুপরি মিথ্যা বলার জন্য। রিপাবলিকান এই নেতা যতটা না রাজনৈতিক ব্যর্থতার কারণে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হারতে যাচ্ছেন তার চেয়েও বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে তার ব্যক্তিগত ত্রুটি। একদিকে তার করা মামলাগুলো একের পর এক খারিজ করে দিচ্ছেন আদালত, অন্যদিকে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে এগিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন। সব মিলিয়ে তিনি যেন ক্রমেই একলা হয়ে যাচ্ছে-বিভিন্ন গণমাধ্যমে এভাবেই শিরোনাম করা হচ্ছে।

নিউইয়র্ক সিটি কলেজের ছাত্রী দ্বীমাত্রী অ্যাথিনা বলেন, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে এ নিয়ে ট্রাম্পের ব্যাপক গাফিলতি তার পরাজয়ের বড় কারণ। মহামারি করোনাভাইরাসকে গুরুত্ব না দেয়া, মাস্ক পরিধানে অনীহা। নিজে করোনা আক্রান্ত হওয়া নিয়ে নাটক। করোনা সংক্রান্ত অজস্র ভুল পরামর্শ। যার কারণে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, মৃতের পরিবার কখনও ট্রাম্পকে ক্ষমা করতে পারবে না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তিরিক্ষি মেজাজ, দুর্ব্যবহার, অশোভন অঙ্গভঙ্গি অনেক ভোটারের মনে নেতিবাচক দাগ কেটেছে। তার রয়েছে সা¤প্রদায়িক ও বর্ণবাদী মনোভাব। মানুষকে অবমূল্যায়ন করাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে এই নির্বাচনে।

নিউইয়র্কে বসবাসরত সাংবাদিক ও গীতিকার দর্পণ কবীর বলেন, অভিবাসী নীতি আরো কঠোর করার অঙ্গীকার করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পৃথিবীব্যাপী যে রাষ্ট্রের পরিচয় অভিবাসী দেশ হিসেবে সেখানে তাদের আগমন নানাভাবে রুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। জনতা এখন রাজনীতিতে তার পথ অবরুদ্ধ করে দিচ্ছে। তিনি অভিবাসীদের বিদায় করতে চেয়েছিলেন, এখন জনগণ তাকে ক্ষমতা থেকে চির বিদায় করে দিচ্ছে। অধিকাংশ মার্কিন মিডিয়ার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া নিউজ‘ আখ্যা দিয়ে ঢালাও অভিযোগ করতেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে করে মিডিয়াও তাকে স্বস্তি দেয়নি।

স্কুল শিক্ষিকা সরকার বন্যা বলেন, রাষ্ট্রকে তিনি কখনো সঠিক আয়কর প্রদান করেননি। মিথ্যা বলেছেন। হাসিমুখে এমন একজন অনৈতিক মানুষকে প্রত্যাখ্যান করারই কথা। মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা ৫ শতাধিক শিশু নিখোঁজ রয়েছে ট্রাম্পের ম্যাক্সিকোবিরোধী মনোভাবের কারণে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির কারণে বিভিন্ন শহর বা অঙ্গরাজ্যে পুলিশের মধ্যে দাম্ভিক ও নির্দয় আচরণ বেড়ে গিয়েছিল বলে ডেমোক্র্যাট শিবির প্রচারণা করেছিল ভোটযুদ্ধে। ছয়মাস পায়ে হেঁটে আমেরিকায় প্রবেশ করে স¤প্রতি গ্রিনকার্ড পাওয়া রায়হান তালুকদার বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুপ্রবেশকারীদের সীমান্ত সংলগ্ন দেশেই ‘অ্যাসাইলাম’ করার (রাজনৈতিক আশ্রয়) সিস্টেম চালু করেন। আমাদের মতো যারা জীবনবাজি রেখে এই দেশে আশ্রয় গ্রহণের জন্য আসে তাদের জন্য বিষয়টি যে কেমন মর্মান্তিক তা বলে বোঝানো যাবে না। তিনি বলেন, পারিবারিক ভিসা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছিলেন তিনি। কিছু নির্দিষ্ট দেশকে নিষিদ্ধ করতে চেয়েছেন তিনি। এমন অমানবিক নীতিগুলো মানবাধিকার সংগঠনগুলো তার বিরুদ্ধে জনমত গঠনে ভূমিকা রেখেছে। রেস্টুরেন্টে কাজ করা হেতায়েদ আলী বলেন, নতুন রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা (মেডিকেড) বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওবামা কেয়ার বন্ধ করেছেন। আমাদের মতো অল্প আয়ের মানুষের জন্য এদেশে সরকারি চিকিৎসা যে কতটা উপকারি তা ভুক্তভোগীরাই জানেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের জোরালো সমর্থন অটুট ছিল। শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের এলাকা বা অঙ্গরাজ্যগুলোতে তার পক্ষেই ভোট পড়েছে। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের মধ্যে মিশিগান, নেভাদা, উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সুবিধা করতে পারেননি। এখানে বাইডেন সমর্থন পেয়ে যান ভোটারদের। আমেরিকার মানুষের অনেক আশা এখন সম্ভাব্য প্রিসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে। দেখা যাক তিনি কী করে খুশি রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে। বিশ্ববাসীরও চোখ এখন বাইডেনের দিকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Mohammad Roni ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
বাইডেন জিতে যাওয়াতে যারা বেজায় খুশি তাদের উদ্দেশ্য একটি কথা বলতে চায়... আমাদের মনে রাখা উচিত সব শেয়ালের কিন্তু একই ডাক। আর সেই শেয়াল অবশ্যই আপনার আরামের ঘুম হারাম করে দিবে।
Total Reply(0)
Mohammed Nazmul Hossain Sumon ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
ট্রাম্পের মৃত্যুতে ভারতে ৪ বছরের রাষ্টীয় শোক প্রকাশ।
Total Reply(0)
Ray Han ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৭ এএম says : 0
যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় পালাবদল হলেও কুটিল বিদেশনীতিতে খুব একটা হেরফের হয়না।ওরা হচ্ছে নিকৃষ্টতম শোষক জাতি।নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার স্বার্থে বিভিন্ন জাতির সাথে মিত্রতা করে আবার ছুড়ে ফেলে দেয়
Total Reply(0)
Masud Kabir ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
গত ২০/৩০ বছরের ভিতরে ট্রাম্পই ছিলো একমাত্র প্রেসিডেন্ট যে নিজে থেকে কোন যুদ্ধ শুরু করেনি বরং বিভিন্ন দেশ থেকে তার সৈন্য প্রত্যাহার করেছিল। বড় শয়তান ছিলো ওবামা, মিস্টি মিস্টি কথা বলে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ করছে।
Total Reply(0)
AR Rahman Rangpur ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৮ এএম says : 0
এই হচ্ছে আমেরিকা, সেই জন্যই ওদের দেশটা এত উন্নত। ওরা একজন বাজে এবং ব্যর্থ লোককে দীর্ঘদিন ক্ষমতার আসনে বসিয়ে রাখে না।
Total Reply(0)
MD Sumon Sikdar ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
ট্রাম্প কে আমি আগেই কইছিলাম বাংলাদেশ সফরে আসেন,, বসেন,, ইসির সাথে একটা একান্ত বৈঠক করেন, কিন্তু না,, উনি আমার কথা রাখলেন না , উনি রাখলেন মুদি সাহেবের কথা..
Total Reply(0)
রেট ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১:৩৩ এএম says : 0
মুসলিম দের কপালে খারাপি আসে এইবার।বাইদেন হইল চিকন সয়তান,আর অধিকাংশ মুসলিম হইল মাথা মটা।এই বাইডেন এরদগান রে নামানর জন্য চেস্টা করসিল,এই বেটাই এস ডি এফ সন্ত্রাসি গোষ্ঠী কে টাকা আর অস্ত্র দিয়া শক্তিশালী করসে তুরস্কের বিরুদ্ধে।
Total Reply(0)
আমান উল্লাহ ৮ নভেম্বর, ২০২০, ৬:২৯ এএম says : 0
কালো ও নিম্ন রুচির ওবামা ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্লান কর ইহুদি ষড়যন্ত্রে আইসিস সৃষ্টি করে ও মুসলিম বিশ্বে ভয়াবহ বিভেদ তৈরী করে। সেই বাইডেন ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় ....... বংশে জন্মে নেওয়া কমলা হ্যারিস ঘোর মুসলিম বিদ্বেষী ও ইহুদি প্রেমিক। ভয় হয় এই দুজন মিলে মুসলমানদের আবার কঠিন কষ্টের ভিতর ফেলায় কিনা। সুতরাং আমাদের এত খুশী হওয়ার কোন কারণ দেখছি না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন