শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নগরবাসীর মনে স্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) নব নির্বাচিত মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের দুর্নীতি বিরোধী কঠোর অবস্থানে নগরবাসীর মনে স্বস্তি বিরাজ করছে। ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং অনিয়মের অভিযোগে তিন জন কর্মকর্তাকে তিনি চাকুরিচ্যুত করেছেন। এ বিষয়টিকে মেয়রের দুর্নীতি বিরোধী অ্যাকশন হিসেবে দেখছেন নগরবাসী। তার এই অ্যাকশনে নগরভবনের দুর্নীতিবাজ অসৎ কর্মকর্তারা রয়েছেন আতঙ্কে। কখন কার চাকরি যায় সেই চিন্তায় সকল অসৎ অফিসারদের ঘুম হারাম।
ডিএসসিসির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্বরত একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, যারা এরইমধ্যে দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন এবং কাজে অবহেলা করেছেন, এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। তারা অনেকটা আতঙ্ক নিয়ে কাজ করছেন।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে ডিএসসিসির মেয়র নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। এর সাড়ে তিন মাস পর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ মে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। ওইদিন বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে তাপস বলেছিলেন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি কিংবা দায়িত্ব পালনে কোনোরূপ শৈথিল্য বরদাশত করা হবে না।
পর দিন ১৭ মে সকালে ডিএসসিসির সকল স্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন নবনির্বাচিত মেয়র। বৈঠকে কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, অনিয়মে অভিযুক্ত যেই হোক না কেন কোনো ছাড় পাবে না। তার এমন হুঁশিয়ারির কয়েকঘণ্টা পর ওই দিন বিকেলেই জনস্বার্থে চাকুরিচ্যুত করা হয় সংস্থাটির দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান ও অতিরিক্ত রাজস্ব কর্মকর্তার দায়িত্বপালনকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (বাজার সার্কেল) ইউসুফ আলী সরদারকে। এমন ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে সংস্থার ভেতর-বাইরে। এরপর ২০ মে আরও একজন রাজস্ব বিভাগের ‘বাজার সার্কেল-৩’-এর কর্মকর্তা আতাহার আলী খানকে চাকুরিচ্যুত করা হয়। এরপর শুরু হয় নানা গুঞ্জন। সেই সঙ্গে আতঙ্ক সৃষ্টি হয় কর্মকর্তাদের মাঝে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসসিসির দুজন কর্মকর্তারা জানান, এতোদিন সংস্থার কর্মকর্তারা শুধু দেখে এসেছিলেন যে, অপরাধ করলে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন হয়। তারপর সে কমিটি রিপোর্ট দেয়। আর রিপোর্ট দিতে দিতে তারা আবার পারও পেয়ে যান। অথবা সাময়িক বরখাস্ত হন। কিন্তু নতুন মেয়র দায়িত্ব নিয়ে ডাইরেক্ট অ্যাকশনে গিয়ে চাকরিচ্যুত করেছেন তিনজনকে। এমন একটা পরিস্থিতিতে যারা দুর্নীতিবাজ তাদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
মেয়র তাপসের অ্যাকশন নিয়ে পুরান ঢাকার বাসিন্দা জহিরুল বলেন, মেয়র মহোদয় সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তবে মনে রাখতে হবে সিটি করপোরেশনের দুর্নীতি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং সেই সিন্ডিকেটে সরকার দলীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও জড়িত থাকে। কাজেই মেয়র মহোদয়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সেই সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে সেই সিন্ডিকেটের প্রতিটি ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে, তা না হলে তার এই পদক্ষেপ মাঝ পথেই থেমে যাবে। এর সুফল জনগণ পর্যন্ত পৌঁছাবে না ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন