শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু সংক্রমণ

চট্টগ্রামে অপ্রতুল চিকিৎসাসেবা

রফিকুল ইসলাম সেলিম : | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় বেহাল অবস্থা জনমনে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। পরিস্থিতির দূত অবনতি হচ্ছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় রোগী এবং মৃত্যু বাড়ছে। তবে সে তুলনায় চিকিৎসা সেবার প্রস্তুতি নেই। করোনা হাসপাতালে হিমশিম অবস্থা। হুমকি-ধমকি দিয়েও বেসরকারি হাসপাতালের দরজা খোলা যাচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালেও শয্যা এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের সঙ্কট।
এতে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্যবিভাগের অবস্থা অসহায়ের মতো। তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ধীরগতিতে সঙ্কট আরো তীব্র হচ্ছে। করোনা টেস্ট ও চিকিৎসা সেবার সঙ্কট নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া না হলে খুব শিগগির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

করোনায় দেশের দ্বিতীয় হট স্পট চট্টগ্রামে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়ছে লাফিয়ে। উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুও বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা এখন সাড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি। শুধু করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮০ পার হয়েছে অনেক আগে। গতকাল করোনায় এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গ নিয়ে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তার রেকর্ড নেই কারো কাছে। জুনের প্রথম দুই দিনে ৪১৬ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিভাগ চট্টগ্রাম মহানগরীকে সংক্রমণের জন্য রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করেছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় সংক্রমণ বিপজ্জনকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিটি এলাকায় রোগী পাওয়া যাচ্ছে। এ পর্যন্ত সাড়ে তিনশ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। ৭২ জন চিকিৎসকসহ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত, মারা গেছেন দুইজন। দেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ জন। কোয়ারেন্টাইনে গেছেন ২৪০ জন। দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আদায়কারী চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এ পর্যন্ত ১৭ জন কর্মকর্তা কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে একজন রাজস্ব কর্মকর্তা মারা গেছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিক, ব্যাংক কর্মকর্তা, শ্রমিক থেকে শুরু করে শিল্পপতি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও।

স্বাস্থ্যবিভাগের হিসাবে আক্রান্তদের আশি ভাগ বাসা বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৯০০ জন সুস্থ হয়েছেন। বাকি পনের থেকে বিশ ভাগ রোগী হাসপাতালে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে তিন থেকে চার শতাংশকে অক্সিজেন বা আইসিইউ সুবিধা দিতে হচ্ছে। আর তাতেও হাসপাতালে বেহাল অবস্থা। আইসিইউ এবং অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লে পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া হবে তা নিয়ে সর্বমহলে উদ্বেগ-শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো অধিগ্রহণ করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার দাবি উঠেছে।

সরকারি হাসপাতালেও লোকবল সঙ্কটে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যেও করোনা টেস্টে কোন গতি আসেনি। সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে, সামনে আরও বাড়বে। যে অনুযায়ী প্রস্তুতিও চলছে। ইতোমধ্যে রেলওয়ে ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল চালু হয়েছে। খুব শিগির ইমপেরিয়াল ও ইউএসটিসিতে চিকিৎসা শুরু হবে। সিটি কর্পোরেশনের একটি আইসোলেশন সেন্টারও চালু হচ্ছে। বেরকারি হাসপাতালেও চিকিৎসা শুরু হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন