উত্তর ঃ মুযেজা বা অলৌকিক ঘটনা সব নবী-রাসূলের জীবনেই ঘটেছে। কারণ প্রত্যেক নবী ও রাসূলের সাথে আল্লাহর যোগাযোগ ছিল। অন্য কথায় নবী-রাসূলগণ আল্লাহর কাছ থেকে বাণী ও দিকনির্দেশনা লাভ করতেন। তাঁরা নবুওয়াত বা রেসালাতের বিষয়টি প্রমাণের জন্যে প্রয়োজনে যুক্তির পাশাপাশি মুযেজা বা অলৌকিক ঘটনাও ঘটাতেন। মুযেজা আল্লাহর নির্দেশেই ঘটতো এবং এ ধরনের ক্ষমতা আল্লাহ-প্রদত্ত ক্ষমতারই নিদর্শন। পবিত্র কুরআনে হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর মুযেজাসহ অতীতের অনেক নবীর মুযেজার কথা বলা হয়েছে।
বিশ্বনবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর পূর্ববর্তী নবীগণের মুযেজার বা অলৌকিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।
বিশ্বমানবতার মুক্তির মহাকান্ডারী রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও অনেক মুযেজা দেখিয়েছেন।
যেমন, চাঁদ দ্বিখন্ডিত করা এবং তাঁর নির্দেশে পাথর-কনার আল্লাহর প্রশংসা ইত্যাদি। কিন্তু বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সবচেয়ে বড় ও চিরস্থায়ী মুযেজা হল পবিত্র কুরআন। তাঁর অন্য মুযেজাগুলো ছিল বিশেষ উপলক্ষ-ভিত্তিক ও অস্থায়ী। ভবিষ্যতের মানুষ ওইসব অস্থায়ী মুযেজা নিজ চোখে দেখতে সক্ষম নয়। আর সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন উদ্ধৃতি ও উক্তির মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায় বা সন্দেহ সৃষ্টি হয়। তাই যারা কাছ থেকে মুযেজা দেখেনি তাদের মনে দ্বিধা-দ্ব›দ্ব থেকে যেতেই পারে। তাই আল্লাহ শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য ব্যবস্থা করেছেন চিরন্তন বা শাশ্বত মুযেজার।
পবিত্র কুরআন অতীতেও যেমন ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুওতের প্রমাণ, তেমনি তা বর্তমানে ও ভবিষ্যতেও এ বিষয়ে সুস্পষ্টতম প্রমাণ হিসেবে টিকে থাকবে। যতই জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিকশিত হবে ততই পবিত্র কুরআনের অলৌকিকতা ও মুযেজা বেশি স্পষ্ট হবে।
এ কুরআন একটি আশ্চর্যজনক কিতাব। এ প্রসঙ্গে কুরআন পাকের কিছু অসাধারণ বৈশিষ্ট্য তুলে হলো :
১. কুরআন নির্ভুলতার চ্যালেঞ্জ দিয়ে শুরু করেছে তার সাহসী বক্তব্য
এ এমন এক ব্যতিক্রমধর্মী কিতাব যা সত্যের বাস্তবতার উপর দাঁড়িয়ে আছে। দুনিয়ার তাবৎ কিতাবগুলো দুর্বলতার ওজরখাহী পেশ করে বক্তব্য শুরু করে। কিন্তু কুরআন সেখানে নির্ভুলতার চ্যালেঞ্জ দিয়ে শুরু করেছে তার সাহসী বক্তব্য।
“এটা আল্লাহ তা‘আলার কিতাব, এতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। এটা মুত্তাকীদের জন্য জীবন-যাপনের ব্যবস্থা।” [সূরা আল বাকারা : ০২]
২. কুরআন নিয়ে আল্লাহর চ্যালেঞ্জ ঘোষণা
কুরআনের বাণী, ‘‘বলুন, যদি মানব ও জ্বীন এই কুরআনের অনুরূপ রচনা করে আনয়নের জন্যে জড়ো হয় এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।’’ [সূরা বনী ইসরাঈল : ৮৮]
উত্তর দিচ্ছেন : এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন