পূর্ব প্রকাশিতের পর
১৭. আলকুরআন হল মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমাদের মাঝে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে কুরআন শেখে ও অপরকে শিক্ষা দেয়।’’ [বুখারী শরীফ : ৪৬৩৯]
১৮. প্রতিটি হরফ পাঠ করলে দশটি নেকি পাওয়া যায় ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি হরফ পাঠ করল, এতে সে একটি নেকি প্রাপ্ত হল এবং উক্ত একটি নেকি দশটি নেকির সমতুল্য হবে। তিনি আরো বলেন, আমি বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।’ [তিরমিযী শরীফ : ২৮৩]
১৯. কুরআন পাঠকারীর পিতামাতাকে নূরের টুপি পরানো হবে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআন শরীফ পড়ে এবং উহার উপর আমল করে, তার মাতা-পিতাকে কিয়ামতের দিন এমন একটি (নূরের) টুপি পরানো হবে, যার জ্যোতি দুনিয়ার সূর্যের জ্যোতি অপেক্ষা অধিক হবে।’ [আবু দাউদ শরীফ : ১২৪১]
২০. কুরআন মানুষকে আলোকিত করে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যার হৃদয়ে কুরআনের কোন শিক্ষা নেই, তা বিরান ঘর সমমুল্য।’’ [তিরমিযী : ২৮৩৭]
২১. কুরআন তিলাওয়াত মানুষের অন্তরকে পরিষ্কার করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘লোহায় পানি লাগলে যেমন মরিচিকা পড়ে, তদ্রুপ মানুষের কলবের মাঝেও মরিচিকা পড়ে যায়। কোন এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উহা পরিষ্কার করার উপায় কি? উত্তরে তিনি বললেন, মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করা ও কুরআনুল কারীমের তিলাওয়াত করা।’’ [শুয়াবুল ঈমান লিলবাইহাকী : ১৯৫৮]
২২. জান্নাত লাভ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘কুরআনের হাফেযকে বলা হবে কুরআন পড়ে যাও, আর উপরে উঠতে থাক, ধীর-স্থিরভাবে তারতীলের সাথে পাঠ কর, যেমন দুনিয়াতে তারতীলের সাথে পাঠ করতে। কেননা জান্নাতে তোমার অবস্থান সেখানেই হবে, যেখানে তোমার আয়াত পড়া শেষ হয়।’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ২৯১৪]
আলকুরআনের সকল দিকই অলৌকিক। জ্ঞানে, অভিজ্ঞতায় মানুষ যতই সমৃদ্ধ হচ্ছে, আলকুরআনের অলৌকিক দিকগুলো নানা আঙ্গিক থেকে স্পর্শ করার সুযোগ পাচ্ছে।
আলকুরআন জ্ঞানের এক ফল্গুধারা, যে জ্ঞান কখনো নিঃশেষ হয় না। এর জ্ঞানভান্ডার কখনো অতীতের গর্ভে বিলীন হয় না এবং ভবিষ্যতের আগমনে বিতর্কিত বা বাতিল হয় না। সূর্যালোকের মতো প্রতিদিনই ঘটে এর জ্ঞানের নবোদয়। ‘আমরা অচিরেই তাদের দেখাবো আমাদের নির্দেশনাবলি দুনিয়ায় এবং তাদের নিজেদের মধ্যে, তখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এ কুরআন এক মহাসত্য। তোমার প্রভুর ব্যাপারে কী একথা যথেষ্ট নয় যে, তিনি প্রতিটি বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী?” [সূরা ফুসসিলাত : ৫৩]
এছাড়া কুরআনে এমন অনেক নিদর্শন রয়েছে যা কুরআনের অলৌকিকত্ব প্রকাশ করে। উপরে উল্লিখিত বিষয়সমূহ ছাড়াও কুরআনের এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা আজ পর্যন্ত মানুষ আবিষ্কার করতে পারে নি। পরম করুণাময় আল্লাহ তা‘আলার দয়ায় হয়তো মানুষ একদিন তা জানতে পারবে। বিজ্ঞান যত বেশি বিকশিত হবে কুরআন ততই প্রমাণিত হবে। কুরআনের মাধ্যমে মহান স্রষ্টা মানুষকে ঈমান, কিয়ামত, হাশরের মাঠ, পুনরুত্থান, বেহেশত, দোযখের অস্তিত্ব এবং মহাবিশ্বের যাবতীয় বিষয়ের (অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের) সুস্পষ্ট প্রমাণ ও জ্ঞান দান করেন। যাতে মানুষ হেদায়েত পেতে পারে। বলতে গেলে কুরআনের প্রতিটি হরফ, আয়াত ও সূরার মধ্যেই রয়েছে অসংখ্য মুযেজার সমাহার। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের কুরআন অনুযায়ী জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন : এইচ. এম. মুশফিকুর রহমান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন