শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

আজ প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২০, ১১:৩৫ এএম

আজ প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের জন্মদিন। তবে এবারের জন্মদিন নিয়ে কোন বাড়তি আয়োজন নেই। কারণ করোনার কারণে ফেরদৌসী রহমান তার প্রিয় কয়েকজন মানুষ হারিয়েছেন। তাদের জন্য তাঁর ভীষণ মন খারাপ। ফেরদৌসী রহমান বলেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম তাদের অনেকেই আজ নেই। সে কারণে মন খারাপ থাকে। আবার করোনা’র কারণে দীর্ঘদিন যাদের সঙ্গে একসাথে কাজ করেছি সেইসব প্রিয়মুখও চলে গেলেন। শ্রদ্ধেয় আনিসুজ্জামান স্যার, শ্রদ্ধেয় কামাল লোহানী, মোস্তফা কামাল সৈয়দ’সহ আরো বেশকিছু প্রিয় মানুষ আমরা হারিয়েছি। এতো চেনা মানুষ মাত্র কয়েক দিনে হারিয়েছি। মনটা সত্যিই ভেঙ্গে গেছে। এই ভাঙ্গা মন নিয়ে আসলে নিজের কথা কেমন করে ভাববো? ভাবা যায়না, আমি ভাবতে পারিনা। দেশের সার্বিক যে পরিস্থিতি, তাতে আমার জন্মদিন কারো কাছেই তেমন গুরুত্ব বহন করে না। আমি চাই আল্লাহ যেন সবাইকে সুস্থ রাখেন, ভালো রাখেন। আবার যেন সবারসঙ্গে প্রাণ খুলে গল্প করতে পারি, সবার মুখে যেন হাসি দেখতে পারি। অন্যের হাসির মাঝে নিজের সুখ খুঁজে নেবো।’ ফেরদৌসী রহমানের জন্ম ভারতের কোচবিহারে ১৯৪১ সালের ২৮ জুন। জন্মের পর সেখানে বহুবার গিয়েছেন। কখনো সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে গান পরিবেশনের জন্য, আবার কখনো ভাওয়াইয়া উৎসবের বিচারক হিসেবে। তিনি একাধারে পল্লীগীতি, রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত ও প্লেব্যাক সিঙ্গার। তাঁর সঙ্গীতজীবন শুরু হয় ১৯৪৮ সালে রেডিওতে ‘খেলাঘর’ অনুষ্ঠানে গান করার মাধ্যমে। ‘এদেশ তোমার আমার’ সিনেমার মাধ্যমে প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে তাঁর অভিষেক হয়। ‘আসিয়া’ সিনেমায় তার বাবা পল্লী স¤্রাট আব্বাসউদ্দিনের সুরে আব্দুল করিমের লেখা ‘ও মোর কালারে’ গানটি গেয়ে দর্শকপ্রিয়তা পান। হারুনর রশীদ পরিচালিত ‘মেঘের অনেক রং’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তবে প্রয়াত রবিন ঘোষের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি ‘রাজধানীর বুকে’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালনার কাজ করেন প্রথম। প্রায় ২৬০টি সিনেমাতে গান গেয়েছেন তিনি। তিনটি লং প্লে, ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড, প্রায় বিশটি ক্যাসেট’সহ পাঁচ হাজারেরও বেশি গান তার রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ টেলিভিশেনর ‘এসো গান শিখি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খালামনি হিসেবেও এখনো দারুণ জনপ্রিয় তিনি। সঙ্গীতে অবদনা স্বরূপ একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা, সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’সহ দেশ বিদেশের নানান পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন এই সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব। এদিকে ফেরদৌসী রহমান গত দ্ইু বছর ধরে নিজের আতœজীবনী লিখছেন। এই সময়ের সঙ্গীতশিল্পীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন যারা গান করছেন তাদের মধ্যে অধ্যবসায়টা খুবই কম। মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, সৈয়দ আব্দুল হাদী, খন্দকার ফারুক আহমেদ’র মতো বরেণ্য শিল্পীরা চাকরি করার পাশাপাশি গান করেছেন। তারা গানে অধ্যবসায়ী ছিলেন। আর এখন যারা গান করছেন তারা শুধুই গান করছেন। যদি তাই হয় তাহলে সাধনা কেন করবে না? সঙ্গীত এমন একটি বিষয় যে যত বেশি সাধনা করবে, সে তত বেশি স্থায়ী হতে পারবে। ফেরদৌসী রহমান তার নিজের বয়স নিয়ে কখনো লুকোচুরি করেননি। কারণ হিসেবে তিনি জানান মৃত্যুর পর বয়স নিয়ে অনেকের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তার ক্ষেত্রে যেন এমনটি না হয়। ফেরদৌসী রহমান বাংলাবাজার স্কুল থেকে এসএসসি, ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে ইউনেস্কো ফেলোশিপ নিয়ে ল-নের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে স্টাফ নোটেসন কোর্স সম্পন্ন করেন। ১৯৬৬ সালের ২৬ অক্টোবর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমানের সঙ্গে ফেরদৌসী রহমানের বিয়ে হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন