শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অস্থির রোহিঙ্গা ক্যাম্প

অস্ত্র-মাদক ব্যবসা-আধিপত্য বিস্তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর দাবি

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৬ এএম

অস্ত্র-মাদক ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য বিস্তার ও ক্যাম্পের দখলদারিত্ব বজায় রাখাসহ নানা কারণে অস্থির হয়ে উঠেছে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। রোহিঙ্গাদের বিবাদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রতিদিনই ঘটছে সংঘর্ষ, প্রাণহানির মতো ঘটনা। গতকালও দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দু’জন। রোহিঙ্গাদের এ অভ্যন্তরীণ বিরোধে উদ্বিগ্ন এবং আতঙ্কিত স্থানীয়রাও। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর দাবি উঠেছে।

স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে টেকনাফ এবং উখিয়ার আশ্রয় শিবিরগুলোতে থাকা রোহিঙ্গারা খুন, ধর্ষণ, মাদক, মানব পাচার এবং অস্ত্র ব্যবসার মতো অন্তত ১৫ রকমের অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা নিয়ে তাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতি রাতেই ক্যাম্পগুলোতে শোনা যায় গুলির শব্দ। প্রায় সময় ঘটে গুম, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ ও মারামারির ঘটনা।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের অপরাধপ্রবণতা আছে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও আছে। এর ব্যবস্থা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সীমান্তে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদক পাচারে বড় ধরণের ভূমিকা রাখছে ক্যাম্পে থাকা এক শ্রেণির রোহিঙ্গারা। আর পুলিশের তথ্যমতে, এর মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে দু’হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে প্রায় সাড়ে সাতশ’। দায়েরকৃত এসব মামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মাদক মামলা। যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চারশ’। এর বাইরে রয়েছে ৬০টির বেশি খুনের এবং অন্তত আরো ৬৫টি অস্ত্র মামলা।

উখিয়ার পালংখালী ইউপির চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা বাংলাদেশে যতদিন থাকবে ততদিন এই অপকর্ম হতে থাকবে। এদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই এর সমাধান। সম্প্রতি পুলিশসহ পুরো কক্সবাজার প্রশাসনের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্থিরতার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে একের পর এক খুনের ঘটনা।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, এখানে নতুন এসেছি। ট্রেনিং কিন্তু নতুন না। গত দু’দিনে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুন হয়েছে এক নারীসহ ৩ জন। জানা গেছে, এ অবস্থায় ক্যাম্পগুলোর নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ শুরু করে। এই সময়ে অন্তত আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সরকারি ও আন্তর্জাতিকভাবে তথ্য রয়েছে। এছাড়া আগে থেকে আরো প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান ছিলো বাংলাদেশে। সব মিলিয়ে এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন