শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

গ্রামাঞ্চলে কাজের অভাব

দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের দুঃসময়

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত আউশ উৎপাদনের পরে মূল দানাদার খাদ্য ফসল আমনের আবাদ প্রায় শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি শ্রমিক ও কৃষকদের এখন দুঃসময় অতিক্রম করতে হচ্ছে। করোনা সঙ্কটের সাথে ভাদ্রের শেষ থেকে অগ্রহায়নের শুরুর এ সময় গ্রামাঞ্চলে তেমন কোন কাজ নেই। আমন আবাদ সম্পন্ন হওয়ায় কৃষি শ্রমিকদের চাহিদা নেই। 

কাজের বিনিময়ে খাদ্য বা কাজের বিনিময়ে টাকা’র মত সরকারি কোন কর্মসূচি না থাকায় সমস্যা আরো বেড়েছে। আর এরই মধ্যে চাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজসহ বেশকিছু নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্য অন্যসব মানুষের মত কৃষকদেরও যথেষ্ট বিপাকে ফেলেছে। গত ১৫ দিনে চালের দাম প্রতি কেজিতে ৩-৫ টাকা বাড়লেও কৃষকদের তাতে কোন উপকার হয়নি। তাদের বোরো ও আউশ ধান আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। পেঁয়াজের কেজি এখনো ৮০ টাকা।
সর্বশেষ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় শতভাগ ফসলি জমি প্লাবিত হয়। আগাম শীতকালীন সবজিসহ উঠতি আউশ ও আমন বীজতলারও যথেষ্ট ক্ষতি হয়। তবে এরপরেও দমে থাকেনি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। অত্যন্ত দ্রুততম সময়ের মধ্যে আউশ ধান কাটার পরে আমনের রোপনও শেষ করেছেন তারা। তবে আগাম শীতকালীন সবজির পুরোটা বিনষ্ট হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেবে ৭ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এবারো ৩০ লাখ টনেরও বেশি দানাদার খাদ্য ফসল উৎপাদন হবে। সদ্য সমাপ্ত খরিপ-১ মৌসুমে এ অঞ্চলে প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৫ টন আউশ চাল উৎপাদন হয়েছে বলে জানা গেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৫০ হাজার টন বেশি। এবারো সারা দেশে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টরের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলেই প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৬ লাখ ১৫ হাজার ৯২২ হেক্টর জমিতে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন আবাদের লক্ষ্যে পৌঁছেছে কৃষকরা। আর চাল উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে প্রায় ১৮ লাখ টন। যে লক্ষ্যে পৌঁছানোর ব্যাপারে আশাবাদী ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। গত রবি মৌসুমে সোয়া লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের পরে আউশ উৎপাদন হয়েছে সাড়ে ৬ লাখ টনেরও বেশি। চলতি আমন মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্য অর্জিত হলে দক্ষিণাঞ্চলে এক বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন দানাদার খাদ্য ফসল উৎপাদন সম্ভব বলে জানা গেছে। গত রবি মৌসুমে অন্তত ১০ হাজার টন গম উৎপাদন হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। ফলে বিগত বছরগুলোর ৭ লক্ষাধিক টন খাদ্য উদ্বৃত্বের ধারা অব্যাহত থাকবে।
কৃষকদের এখন যথেষ্ট সঙ্কট অতিক্রম করতে হচ্ছে। ভাদ্রের শেষভাগ থেকে অগ্রহায়নের শুরুর সময়টা ফসলের মাঠে কোন কাজ থাকে না।
তার ওপর এবার করোনা সঙ্কটে কৃষি শ্রমিক ও দিন মজুরদের বেকারত্ব আরো বেশি। এরই সাথে চালসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি তাদের অর্থনৈতিক সঙ্কট আরো বৃদ্ধি করেছে। নগদ টাকার প্রয়োজনে নিজের উৎপাদিত ধান কম দামে বিক্রি করে এখন বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। পরিস্থিতি উত্তরণে অবিলম্বে কাজের বিনিময়ে খাদ্য বা কাজের বিনিময়ে টাকা কর্মসূচি চালুর দাবি করেছেন সাধারণ কৃষকরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন