ড্রেনের পানি উপচে দোলাইরপাড়-দনিয়া সড়কটি গত এক মাস ধরে অব্যবস্থাপনার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে। সড়কের উভয় পাশের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এক কিলোমিটার এলাকা ময়লা-আবর্জনায় ভরে আছে। ফলে ড্রেনের ময়লাযুক্ত পানি রাস্তার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ময়লা ও আবর্জনার দুর্গন্ধে আশপাশের পরিবেশ দুর্গন্ধময় হয়ে উঠেছে।
সেখানকার রাস্তা দিয়ে বর্তমানে হাঁটা যাচ্ছে না। অথচ প্রতিদিন শত শত স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রী এ পথে যাতায়াত করছে। এ পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগ ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, দীর্ঘদিনেও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়নি। ফলে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনাসহ নোংরা পানি রাস্তার উপর ছড়িয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে একাধিকবার অভিযোগ করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সিটি করপোরেশন দীর্ঘদিনেও ড্রেনগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা থাকার ফলে পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭১নং ওয়ার্ড কমিশনার বলেছেন, রাস্তাটি সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। ঈদের পর এ রাস্তা ও ড্রেনের সংস্কার কাজ শুরু করা হতে পারে। দীর্ঘদিনের সমস্যা ঈদের পর পর্যন্ত ঠেকানোর কোন যৌক্তিকতাই নেই। বোঝাই যাচ্ছে যে এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যথেষ্ট অবহেলা করেছে এবং করছে। একদিন-দু’দিন নয় বিগত এক মাস ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আর সিটি করপোরেশন এখনও বলেছে যে, রাস্তাটি সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রশ্ন হলো, এলাকাবাসী সিটি করপোরেশনকে এ ব্যাপারে একাধিকবার অভিযোগ করার পরও কেন সিটি করপোরেশন নীরব ভূমিকা পালন করল।
ফারজানা আফরিন নুয়া
ঢাকা।
প্রকল্পের নামে গাড়ি বিলাসিতা বন্ধ করতে হবে
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটিতে ২০ কোটি ১২ লাখ টাকায় গাড়ি কেনার প্রস্তাব আটকে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য ওই টাকায় ১৩টি জিপ, ১৭টি পিকআপ, একটি মাইক্রোবাস ও ২৫টি মোটরবাইক কেনার প্রস্তাব করা হয় প্রকল্প প্রস্তাবনায় (ডিপিপি)। এসব গাড়ির চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ব্যয় ধরা হয় আরও ১০ কোটি টাকা। গত মে মাসে অনুমোদিত ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা চার লেন প্রকল্পেও গাড়ি ক্রয়, মেরামত ও সংরক্ষণ বাবদ ১৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হলে এতে আপত্তি তোলে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিককালে প্রকল্পের নামে গাড়িবিলাস শুরু হয়েছে। নতুন প্রকল্পগুলোয় যথেচ্ছ গাড়ি কেনার প্রস্তাব যুক্ত করা হচ্ছে। এগুলোর তেল-গ্যাস ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ও প্রকল্প থেকে বহন করা হচ্ছে। আবার কিছু প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট সংস্থার পরামর্শকের জন্যও পৃথক গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। যদিও প্রকল্প শেষে কোন সংস্থাই গাড়ি পরিবহন পুলে জমা দিচ্ছে না। তাই প্রকল্পের নামে গাড়ি কেনায় আপত্তি তুলতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য জিপ, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও মোটরবাইক যাদের জন্য কেনা হয়, তারা প্রকল্পের কাজে ঠিকমতো ব্যবহার না করে বরং ব্যক্তিগত কাজে, পারিবারিক কাজেই বেশি ব্যবহার করেন। আর কাজ শেষে গাড়ি পরিবহন পুলে জমা না দিয়ে নিজের কাছেই রেখে দেন। প্রকল্পের নামে যে গাড়ি বিলাসিতা শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে অর্থ মন্ত্রণালয় যে উদ্যোগ নিয়েছে তা যথাযথ এবং যুক্তিসঙ্গত। এই উদ্যোগটি আরও আগেই নেয়া উচিত ছিল। অতীতেও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেখা গেছে প্রকল্পের গাড়ি নিয়ে বিলাসিতা করতে। এমনিতেই বাংলাদেশে প্রকল্প নিয়ে নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম হয়। দেখা যায়, সময়মতো প্রকল্পের কাজ শেষ হয় না। আর সময়মতো কাজ না শেষ হওয়ার কারণে সময় ও ব্যয় দুটোই বেড়ে যায়। তার সঙ্গে গাড়ি বিলাসিতা প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি যেন আরও বাড়িয়ে দেয়। জনগণের করের টাকা দিয়ে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি কবে বন্ধ হবে সেটাই প্রশ্ন। প্রশ্ন হচ্ছে প্রকল্পের জন্য গাড়ি কেনার প্রয়োজন আছে কিন্তু সেই গাড়ি নিয়ে বিলাসিতা করা হবে কেন। আর এতগুলো জিপ, পিকআপ এবং মোটরবাইক কেনার উদ্দেশ্যটাই বা কি। প্রয়োজন অনুযায়ী কিনলেই তো হয়। এই পুকুরচুরি ও হরিলুট বন্ধ করতে হবে অতি দ্রুত। অর্থ মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে হবে। কখনোই যেন কোন প্রকল্পের নামে একটি গাড়িও বেশি কেনা না হয়। আর যেসব গাড়ি কেনা হবে সেটা প্রকল্প কর্মকর্তারা প্রকল্পের কাজ ব্যবহার করছেন, নাকি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজে ব্যবহার করছেন সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই সঙ্গে প্রকল্প শেষে গাড়ি পরিবহন পুলে জমা দিচ্ছে কিনা সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
মেহেদি হাসান
সাভার, ঢাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন