গতকাল টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুরে এক মাদরাসাছাত্রী (১৫) অপহরণের পর গণধর্ষণের দায়ে ৫ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমীন এ রায় ঘোষণা করেন। ৮ বছর আগে এই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করাসহ ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দাবি ওঠে ‘ধর্ষকের যাবজ্জীবন নয়, ফাঁসি চাই’। এর প্রেক্ষিতে দ্রæত মৃত্যুদন্ডের সাজা রেখে আইন সংশোধনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ধর্ষণের শাস্তি যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃত্যুদন্ডের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ মৃত্যুদনেডর অধ্যাদেশ জারি করেন। অধ্যাদেশ জারির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনায় প্রথম রায় এলো।
রায় ঘোষণাকালে দুইজন আসামি উপস্থিত ছিল। বাকি তিনজন পলাতক। আদালতে উপস্থিত দন্ডিত দুইজন আসামি হলেন- মধুপুর উপজেলার চারালজানী গ্রামের বদন চন্দ্র মণি ঋষির ছেলে সঞ্জিত (২৮), একই উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের শ্রি দিগেন চন্দ্র শীলের ছেলে গোপি চন্দ্র শীল (৩০)। পলাতক আসামিরা হলেন- একই এলাকার সুনীল চন্দ্র শীলের ছেলে সাগর চন্দ্র শীল (৩৩), সুনিল মণি ঋষির ছেলে সুজন মণি ঋষি (২৮) ও মণিন্দ্র চন্দ্রের ছেলে রাজন চন্দ্র (২৬)। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাছিমুল আকতার জানান, ২০১২ সালে দন্ডিত আসামিদের মধ্যে মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ি গ্রামের সাগর চন্দ্র শীলের সাথে মোবাইলের মাধ্যমে ভ‚ঞাপুর উপজেলার মাদরাসাছাত্রী ওই ভিকটিমের পরিচয় হয়। একই বছরের ১৫ জানুয়ারি ওই ছাত্রী মাদরাসা যাওয়ার পথে সকালে ভ‚য়াপুর উপজেলার সালদাইর ব্রিজের কাছে পৌঁছালে সাগর কৌশলে একটি সিএনজিতে এলেঙ্গা নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে মধুপুরে চারালজানী গ্রামে তার বন্ধু রাজনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার চার বন্ধু তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। সাগর হিন্দু বলে তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করে সে।
পরে ওই রাতে সাগর রাজনের বাড়িতে আটক রেখে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। পরে ১৭ জানুয়ারি রাতে তাকে বংশাই নদীর তীরে নিয়ে যায়। সেখানে তারা পাঁচজন মিলে পালাক্রমে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। পরদিন সকালে স্থানীয়দের সহায়তায় ভিকটিমের বাড়িতে মোবাইলের মাধ্যমে খবর পাঠানো হলে স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে। পরে ভিকটিম বাদী হয়ে ভ‚য়াপুর থানায় ১৮ জানুয়ারি দন্ডিতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ সুজন মণি ঋষিকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। ১৯ জানুয়ারি আসামি সুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন