বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ইরফানের বিরুদ্ধে ১৪ দিন রিমান্ড আবেদন

ফের রিমান্ডে দিপু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করার অভিযোগ ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদের বিরুদ্ধে সাত দিন করে ১৪ দিন রিমান্ড করেছে পুলিশ। এছাড়া ইরফান সেলিমের ব্যক্তিগত অফিসার এ বি সিদ্দিকী দিপুর ফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ-উর-রহমান তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে তিন দিনের রিমান্ড শেষে দিপুকে আদালতে হাজির করে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই মবিনুল হক। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ আদেশ দেন। তবে এদিন আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

গত ২৬ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে এ বি সিদ্দিকী দিপুকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২৭ অক্টোবর দিপুর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার পর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় হাজী সেলিমের গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৬ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ওয়াসিফ। মামলায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, প্রোটকল অফিসার এ বি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও তিন জনকে আসামি করা হয়।

মামলা দায়ের পর রাজধানীর চকবাজারের ২৬, দেবীদাস ঘাট লেনে হাজী সেলিমের চাঁন সরদার দাদা বাড়ীতে অভিযান চালান র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযান শেষে অবৈধ ওয়াকিটকি ও মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী মো. জাহিদকে এক বছর করে কারাদন্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালত। এরপর ওই দিন রাতেই দুজনকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২৯ অক্টোবর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূরের আদালত। এছাড়া ওই মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছেও হস্তান্তর করা হয়। প্রথমে ধানমন্ডি থানা পুলিশ ইরফান ও জাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও পরবর্তীতে ডিবি পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এ সময় তারা জানান, ঘটনার দিন বুলেট প্রুফ জিপ গাড়ি থেকে নেমে ইরফানের সঙ্গে ওয়াসিফের কথা কাটাকাটি। এক পর্যায়ে জাহিদসহ অন্যরা ওয়াসিফকে রাস্তায় ফেলে কিল ঘুষি ও লাথি মারে। এসময় স্ত্রী লে. ওয়াসিফকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করে জাহিদসহ অন্যরা। এক পর্যায়ে জাহিদের ঘুষিতে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমদ খানের দাঁত পড়ে যায়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, ইরফান, জাহিদুল ও দীপুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ খানকে কেন মারধর করেছেন, কেন তাকে হত্যাচেষ্টা ও হুমকি দেয়া হলো- সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, র‌্যাবের অভিযানে ইরফানের বাসা থেকে অবৈধ বিদেশি অস্ত্র ও ওয়াকিটকি পাওয়া গেছে। এসব অস্ত্র ও ওয়াকিটকির বিষয়ে যে অভিযোগগুলো আছে তা খতিয়ে দেখছি আমরা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

এদিকে চকবাজার থানায় র‌্যাবের দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায়ও ইরফান ও জাহিদকে সাত দিন করে ১৪ দিন রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে এ তথ্য জানিয়েছেন চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার। তিনি বলেন, গত শুক্রবার রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো শুনানির তারিখ দেয়া হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, হাজী সেলিম অসুস্থ হওয়ার আগে পুরো ব্যবসার ভার তিনি একাই সামলাতেন। যখনই তিনি স্ট্রোক করে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন তখনই মদিনা গ্রুপের পুরো ব্যবসা নিজে কব্জা করার চেষ্টা করেন ইরফান সেলিম। তার এই অপচেষ্টায় দুই ভাই সোলায়মান সেলিম ও আশিক সেলিম ছিলেন বড় অসহায়। অনেকটা বাধ্য হয়ে সোলেমান সেলিম চুপ হয়ে যান। মদিনা গ্রুপের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা ইরফানের ভয়ে তটস্থ থাকতেন। তার দ্বারা একাধিক কর্মকর্তা মানসিক নির্যাতনের কারণে চাকরি ছেড়েছেন বলে জানা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Hm M Abdul Alim ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৬ এএম says : 0
ঢাকা শহরের এমন অহরহ বাহিনী আছে, যাদের কাজ সামান্য কিছু টাকা দিয়ে জায়গা দখল করা, টাকা না নিলে গুলি করে হত্যা করা, বললে সবার কথাই বলেন, আর না বললে একজনের কথা বইলেন না
Total Reply(0)
Shajjad H. Mahmud ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৬ এএম says : 0
এই মাফিয়া দের ক্রসফায়ার এবং সম্পদ জব্দ করা হোক...কারণ এরা মুখে আওয়ামীলীগ বল্লে ও প্রকৃত আওয়ামীলীগ নয়।
Total Reply(0)
Zamal U Ahmed ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৭ এএম says : 0
বুড়িগংগাস্থ সকল নৌযান থেকে প্রতিদিন কারা চাঁদা নিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে, ঐ এলাকায় বাহির থেকে আসা মাল বোঝাই সকল ট্রাক থেকে কারা মোটা অংকের চাঁদা নিচ্ছে দীর্ঘকাল থেকে? এ দুটি তথ্য খুঁজতে গিয়ে সাপ বের করে আনবেন না।
Total Reply(0)
Mohammad Monir Hossain ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৮ এএম says : 0
ভাই আপনারা এইসব কি বলেন? ওনার শ্বশুর বলছেন উনি চাঁদাবাজ না, সন্ত্রাসী না, উনার মত ভদ্রলোকের (?) জামাই। আফনেরা এইসব কি মাত মাতেন?
Total Reply(0)
Md Abu Sayed ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৮ এএম says : 0
যখন কোন প্রভাবশালীর অপকর্ম রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রকাশ পায়, তখন সেগুলো আমাদের মিডিয়াতে আসে। এর আগে কেন আমাদের মিডিয়া এসব অপকর্ম প্রচার করতে পারে না? আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা কি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না? নাকি এর পিছনে অন্য কোন কারণ আছে?
Total Reply(0)
Munia Khan ১ নভেম্বর, ২০২০, ১:২৯ এএম says : 0
সরকারের কাছে সবেধন এই ছেলে কে ফাঁসি দেয়া হোক
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন