শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নবী (সা.) বিশ্ব জগতের রহমত স্বরূপ

জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নবীজী আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্য রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি’। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘ নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর ফেরেশতারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করেন। হে মু’মিনগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করো’। (সূরা আহযাব: ৫৬)। রাসুল (সা.) প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করলে দশটি নেকি হয় আর দশটি গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন।

গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর মসজিদগুলোতে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. ফরীদ খুৎবার বয়ানে বলেছেন, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার যিনি আমাদের সৃষ্টি করে সম্মানিত করেছেন সকল সৃৃষ্টির উপরে। দরুদ ও সালাম সেই মহামানবের প্রতি যিনি তাঁর সারা জীবন ব্যয় করেছেন উম্মতের হেদায়াতের জন্য, পথহারা মানুষকে পথ দেখানোর জন্য।

পেশ ইমাম বলেন, উক্ত আয়াত ও হাদিসের ভাষ্য থেকে আমরা জানতে পারি যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা আমাদের কর্তব্য। ছয়শ’ হিজরীর পর বিখ্যাত যত উলামায়ে কেরাম এসেছেন তাঁদের অধিকাংশই মিলাদ-কিয়াম করেছেন। মিলাদ-কিয়ামের উপর বই-পুস্তক লিখেছেন এবং এটা সওয়াবের কাজ মনে করে মানুষকে পালন করতে উৎসাহিত করেছেন। মিলাদ-কিয়ামে যদি গুনাহের কোন কাজ প্রবেশ না করে তাহলে তা জায়েয। কিন্তু যদি গুনাহের কোন কাজ প্রবেশ করে তাহলে তা নাজায়েয ও অবৈধ। সাধারণত মিলাদ-কিয়ামে কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, কাসিদা পাঠ, ইস্তিগফার, দোয়া, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী আলোচনা করা হয়। বর্তমান সময়ে যেসব ওলামায়ে কেরাম মিলাদ-কিয়ামের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাঁরা মূলত সেই সব মিলাদ-কিয়ামের কথা বলেন যাতে গুনাহের কাজ রয়েছে। আকিদাগত ভ্রান্তি রয়েছে। আর যারা মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে কথা বলেন, তাঁরা মূলত বৈধ পন্থায় গুনাহের কাজ এড়িয়ে যে মিলাদ-কিয়াম করা হয়, তার কথা বলেন। উভয়ের উদ্দেশ্য এক। তাই সবাইকে আহ্বান করবো কেউ যেন কারো বিপক্ষে অহেতুক উস্কানিমূলক কথা না বলি। সকলে সকলের প্রতি সম্মানবোধ রেখে নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ করে যায়। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন!

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী গতকাল খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেছেন, মহান আল্লাহ তায়ালা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পৃথিবীবাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নবীজী আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্যে রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি’। অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোটা স্বত্তাটাই যেন রহমতে ভরপুর। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের প্রতি এতই দরদ ও মায়া ছিল যে, উম্মত কিভাবে জাহান্নাম থেকে নাজাত পায়।

পেশ ইমাম বলেন, কারণ একজন মানুষের সবচেয়ে বড় সফলতা ও কামিয়াবী হলো জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করা। তাইতো আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন ‘তোমরাতো জাহান্নামের গর্তের কিনারায় যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে তোমাদেরকে রক্ষা করেছি’। হাদীস শরীফে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের কোমর ধরে ধরে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছি’। অতএব মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সফলতা একমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণ-অনুকরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।

ঢাকার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতিব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী জুমার বয়ানে বলেন, একজন মুসলমানের জন্য স্বীয় বংশ এবং বংশীয় পূর্বপুরুষদেরকে জানা যত না জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.) কে জানা। কারণ তিনি হলেন মহান আল্লাহর প্রিয়তম পয়গম্বর এবং সমস্ত নবী-রাসুলগণের দলপতি। তিনি পৃথিবীতে শুভাগমন করেছেন সকল নবী-রাসুলের পরে অথচ তাঁর মর্যাদা সবার উপরে। গভীর মনযোগের সাথে হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সীরাত পড়াশুনা করলে ইনশাআল্লাহ পাঠকের মন বিগলিত হবে এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিবে, কেননা মানবজীবনে পরিবর্তন ও বিপ্লব সৃষ্টি করার মত অসংখ্য উপাদান বিদ্যমান প্রিয় নবী (সা.) এর সীরাতে তাইয়্যিবায়। আজকের দুনিয়াতে এই জায়গাটাতে চরম শৈথিল্য প্রদর্শিত হচ্ছে। যার কারণে ঘটছে একের পর এক মহানবী (সা.) এর অবমাননার ঘটনা। যা শুধু দুঃখজনকই নয় বরং অবমাননাকারীর জন্য রয়েছে কুরআন সুন্নাহর মধ্যে আল্লাহর লানত ও কঠিনতম শাস্তির হুশিয়ারি। পবিত্র কুরআনের অন্যতম তাফসীরগ্রন্থ তাফসীরে মাজহারীতে সূরা আহজাবের ৫৭ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেউ যদি হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে কোন ভাবে কষ্ট দেয় এবং তাঁর সত্ত্বা অথবা গুণাবলীতে প্রকাশ্যে কিংবা ইঙ্গিতে কোন প্রকার দোষ বের করে তাহলে সে কাফের হয়ে যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন