মোমবাতি প্রজ্বলন, কেক কাটা, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতের মধ্যদিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রামে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে তার কবরে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্য ও ভক্তরা।
গতকাল শুক্রবার রাতের প্রথম প্রহরে নুহাশ পল্লীতে পাঁচ শতাধিক মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় জনপ্রিয় এই কথা সাহিত্যিকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছেলে নিষাদ ও নিনিত এবং অসংখ্য হুমায়ূন ভক্ত গাজীপুরের পিরুজালী গ্রামে নুহাশ পল্লীতে উপস্থিত হন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে কবরের পাশে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করা হয়। এরপর নুহাশ পল্লীর হোয়াইট হাউজ ও হুমায়ূন আহমেদের ম্যুরালের সামনে ছেলেদের নিয়ে মেহের আফরোজ শাওন জন্মদিনের কেক কাটেন। এসব কর্মসূচিতে হুমায়ূন আহমেদের ভক্তবৃন্দ এবং নুহাশ পল্লীর কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। কেক কাটা শেষে মেহের আফরোজ শাওন সাংবাদিকদের বলেন, স্বপ্লটা অনেক বড় ব্যাপার। স্বপ্লপূরণ এক দিনে বা এক বছরে হয় না, ধাপে ধাপে হয়। স্বপ্নপূরণ একটু একটু করে হচ্ছে। হবে স্বপ্লপূরণ। হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি (নেত্রকোনায়) উনার সবচেয়ে বড় স্বপ্ল ছিল। গত বছর সেই স্কুলটি ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত এমপিওভূক্ত হয়েছে। স্কুলটা খুব ভাল চলছে। উনি যখন নিজে স্কুলটা চালাতেন তখন খুব চেষ্টা করেছেন। এটা উনার স্বপ্লপূরণের একটা ধাপ আমরা অতিক্রম করেছি।
শাওন বলেন, প্রথমত আমি উনার একজন ভক্ত, পাঠক। অবশ্যই উনার পরিবারে একজন। সে হিসেবে পাঠকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। তিনি বলেন, এখন যে প্রজন্ম সবেমাত্র ২/৩ বছর ধরে বা এই বছর হুমায়ূন আহমেদকে পড়া শুরু করেছে, তারা তাকে নতুন করে উপলব্ধি করতে পারছে। হুমায়ূন আহমেদের শুরুর দিকের ৮০ দশকের উপন্যাস ২০২০ সালে এসে তারা পড়েও হুমায়ূন আহমেদকে ভালবাসছে, মূল বক্তব্যটা বুঝতে পারছে- এটা আমার কাছে অনেক আশ্চর্যের ব্যাপার। এ আশ্চর্যটা মধুর আশ্চর্য। এটা আমার কাছে খুব আনন্দের একটা ব্যাপার- যে এখনকার প্রজন্ম হুমায়ূন আহমেদকে নতুন করে পড়ছেন। পড়া যারা মাত্র শুরু করেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
এদিকে গতকাল সকালে থেকেই হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত ও হিমু পরিবহণের সদস্যদের নুহাশ পল্লীতে আসতে দেখা গেছে। তারা হুমায়ূন আহমেদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ঘুরে ঘুরে নুহাশ পল্লী দেখেন। নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মোমবাতি প্রজ্বালনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে লেখকের জন্মদিন উদ্যাপন করা হচ্ছে।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তার প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশিত হয়। এর মধ্য দিয়ে তিনি পাঠকের মধ্যে শক্ত অবস্থান করে নেন। পাঠকদের জন্য তিনি একের পর এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস উপহার দিতে থাকেন। ছোট গল্প, গান, নাটক ও চলচ্চিত্র অঙ্গনকে তার সৃষ্টি করেছে সমৃদ্ধ। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই ক্যানসারের কাছে হার যান হুমায়ূন আহমেদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন