দেশের বৃহৎ কওমী ঐক্যের অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কাউন্সিলকে সামনে রেখে সংগঠনের মহাসচিবের বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল জুমা নামাজের পর পৌরসভার নুর মসজিদের সামনে মোটরসাইকেলযোগে কতিপয় দুর্বৃত্ত এসব লিফলেট সড়কে ছিটিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় শতশত মুসল্লিকে এগুলো হাতে নিয়ে চলে যেতে দেখা যায়। আবার কেউ স্যোশাল মিডিয়া ফেসবুকেও পোস্ট করেন। অনেকে লিখেছে, কী হচ্ছে হেফাজতের! আল্লামা শফীর অনুসারীরা কী করতে চায়। আবার অনেকেই বলাবলি করছে, শুরু হয়েছে হেফাজতের খেলা। গ্রæপ বিভক্তিতে হেফাজতের দুর্দশাসহ নানান পোস্ট দেয়া হচ্ছে। আবার কেউ কিছু লিফলেট দ্রæত সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। চট্টগ্রাম শহরেও শফী অনুসারীরা প্রতিবাদ মিছিল করেছে।
এদিকে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী ও সাঈদী পুত্রের একত্রিত ছবি, আহমদ শফীর ছবি, ও হেফাজত ও জামাতের লোগোসম্বলিত লিফলেটে দেখা যায়, হেফাজতের কমিটি তৈরিতে জামাতের সংশ্লিষ্টতা, ধর্মপ্রাণ ও অরাজনৈতিক হেফাজতকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারে ষড়যন্ত্রে মরিয়া জামাত-বিএনপির। হেফাজতে ইসলামকে হাটহাজারীমুক্ত করার ষড়যন্ত্র জামাত শিবিরের, আল্লামা শফীপন্থি কোন আলেমকে যেন হেফাজতের কমিটিতে না রাখা হয় সে ব্যাপারে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত জামাত-শিবিরসহ হাটহাজারী মাদরাসায় মানবতাবিরোধী সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাঈদিপুত্র শামীম সাঈদীর আনাগোনা এ কিসের ইঙ্গিত! এমন লেখার কয়েকশত লিফলেট মুহূর্তেই ছড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে রোববার হেফাজতের পুনর্গঠনে সারা দেশ থেকে ৪শ’ সদস্য হাটহাজারী মাদরাসায় আসবেন। সদস্য ছাড়া কাউকে সেখানে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে সূত্রে জানা যায়। নিরাপত্তা বলয়ের জন্য ছাত্রদের পাশাপাশি স্থানীয় কিন্তু হেফাজতের যে কাউন্সিল ডাকা হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ অবৈধ বলে হেফাজতের আমীর আহমদ শফীর অনুসারী মাও. রুহী দাবি করেন। তারা বলেন, আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী গত ১৬ সালে এ সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। যে সংগঠনের কমিটিতে নাই সে কীভাবে কাউন্সিল ডাকে। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ও পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়ে পকেট কমিটি করতে মরিয়া হয়ে গেছে বাবুনগরী গং। এ সংগঠনের কোন মজলিসে শূরা নেই। কয়েক বছর আগে শূরার প্রস্তাব করলে সেটি নাকচ করে দেন আল্লামা শফী। কিন্তু হঠাৎ কাদের নিয়ে বৈঠক ছাড়া উপদেষ্টা তৈরি করে সম্মেলনের আহবান করেছে সে প্রশ্নও ছুঁড়ে দেন রুহী। এ শূরা কমিটি তৈরি করেছে বাবুনগরী, শফী অনুসারীদের বাদ দিতে। কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে না মজলিসে শূরার। তিনি বলেন, হেফাজতের ৩৭টি মামলা খেয়েছি, হেফাজতের কারণে ৩০ লাখ টাকার দোকান দখল করেছে সন্ত্রাসীরা। হেফাজতের গুরুত্বপূর্ণ ৫ জন কাউন্সিলরের সদস্য কেউ আসবে না।
এ সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অনেকেই জানে না কাউন্সিলের কথা। এটা কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি নাকি এমনই মন্তব্য করেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাও. মাঈনুদ্দিন রুহি। লিফলেট বিতরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে আমি অবগত নই কারা করেছে সেটা।
এ বিষয়ে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. আজিজুল হক ইসলামাবাদী মুঠোফোনে বলেন, হেফাজত অরাজনৈতিক সংগঠন, হেফাজতের সম্মেলনকে বানচাল করতে গভীর ষড়যন্ত্র করছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, হেফাজতের সাথে জামাত-বিএনপির কোন সম্পর্ক নেই। আর এ কমিটি তৈরিতে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যোগাযোগ বা সখ্যও নেই। এ সম্মেলন নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা কখনো সফল হবে না। সম্মেলনকে ঘিরে সকল সদস্যকে দাওয়াত দেয়া সম্পন্ন হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন