ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় আহলে হাদিস এর মাদ্রাসা ও বাড়ি ঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে, উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ডাঙ্গা কামদিয়া গ্রামে প্রায় ২ বছর আগে এই মাদ্রসা তৈরী করে আহলে হাদিস মতবাদে বিশ্বাসীগণ, সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে উত্তেজিত জনতা বুধবার (১৮ই নভেম্বর) এই মাদ্রাসা ভাংচুর করে।
স্থানীয় সুত্রে ও স্বরেজমিনে গিয়ে জানা জায়, প্রায় দুবছর আগে এই মাদ্রাসা স্থাপন করে সৌদি ফেরত প্রবাসী নুরে আলম মঙ্গল, স্থানীয়ভাবে আহলে হাদিস ও কওমী মাদ্রাসার সাথে আকিদাগত কিছু মত পার্থক্য ছিল, এই মত পার্থক্য নিয়ে আহলে হাদিসের মাদ্রসা কর্তপক্ষের সাথে স্থানীয় ওলামা মাশায়েখদের বিরোধ চলে আসছিল, স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেশ কয়েকবার এই বিরোধ নিস্পত্তি করে। পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ি বুধবার সকাল ১০ টায় সালথা থানা উলামা পরিষদ ও তৌহিদী জনতার ব্যানারে মহাসমাবেশের আয়োজন করে, অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটতে পারে এই মর্মে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ উভয়পক্ষকে উপজেলা পরিষদে ডাকে, সেখানে সালিশ বৈঠক হওয়ার সময়ই আহলে হাদিসের মাদ্রসা ভাংচুর করা হয়, এসময় মাদ্রসার দুটি ঘর ও পাশে থাকা নুরে আলম মঙ্গলের একটি বসতঘর ভাংচুর করা হয়। মাদ্রসায় প্রায় ৪০ জনের মত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করতো, ঘটনার সময় প্রায় ৩০ ~ ৩৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্দোগেও সালথা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়, এবং তাদের সবাইকে বাড়িতে পৌছনোর ব্যবস্থা করা হয়। ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জান যায়।
ঘটনাস্থল উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের ডাঙ্গা কামদিয়া মাদ্রসা এলাকা পরিদর্শন করেন সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা সালথা অঞ্চল) এফএম মহিউদ্দিন, সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ, ভাওয়াল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফাুরকুজ্জামান ফকির মিয়া, বাংলাদেশ মানবধিকার কশিনের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান প্রমূখ।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, মাদ্রাসা ভাংচুরের ঘটনা দুঃখজনক, আমরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি, স্থানীয় ওলামা মাশায়েকগণ ও আহলে হাদিসদের নিয়ে আলোচলা চলমান থাকা অবস্থায় আইন শৃংখলার অবনতি ঘঠিয়ে যারা এই কাজ করা সমিচিন হয়নি।
মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নুরুল আলম মঙ্গল বলেন, আমরা ইউএনও স্যারের সাথে মিটিং করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমন সময় কিছু লোকজন উত্তেজিত হয়ে মাদ্রসার দুটি ঘর ভাংচুর করে, এবং আমার একটি বসতঘর ভাংচুর করেছে, এখানে প্রায় ৪০ জনের মত শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করতো, মাদ্রসা ভাংচুরের পাশাপাশি সব কিছুই এরা লুটপাট করে নিয়ে গেছে। সব মিলে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সালথা উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সাধারন সম্পাদক মওলানা ঝিনাতুল ইসলাম বলেন, সালথা নগরকান্দার ওলামা মাশায়েকগণ সবসময় সোচ্চার, একজন কওমী মাদ্রাসা ছাত্র নগরকান্দায় যাচ্ছিলেন কামদিয়ায় পৌছলে আহলে হাদিসের লোকজন তাকে মারধর ও আটক করে রাখে এখবর ছড়িয়ে পরলে তাওহিদী জনতা উত্তেজিত হয়ে তাদের আস্তানা ভাংচুর করেছে। ভাংচুরের সময় আমাদের শির্ষ স্থানীয় আলেম কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, ঘটনার সময় আমরা উপজেলা পরিষদে ছিলাম, পুলিশ সংঘর্ষ এড়াতে ও ভাংচুর বন্ধ করতে তৌহিদী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করেছে, এলাকা শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন