চট্টগ্রামে এসে একবছর ধরে নিখোঁজ এক ‘এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল’ পাওয়া গেছে। ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
তাকে হত্যার পর লাশ জঙ্গলের ভেতরে প্রায় ৫০ ফুট গভীর একটি গর্তে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআিই)।
খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য পেয়ে একজনকে গ্রেফতারের পর তার মাধ্যমে পিবিআই কর্মকর্তারা লাশ পুঁতে রাখার স্থান শনাক্ত করেন।
ভুজপুর থানার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকায় ওই গর্তের ভেতর কঙ্কালটি পাওয়া যায়। সেটি হেলালের কঙ্কাল বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন পিবিআই’র চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হোসেন।
নিখোঁজ মো. হেলাল উদ্দিন (৩৭) ঢাকার মুগদা থানার মদিনাবাগ এলাকার বাসিন্দা। তিনি সেতুবন্ধন নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মদিনাবাগ শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন।
২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর হেলালের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পিংকি ভুজপুর থানায় অভিযোগ করেন, ১৮ নভেম্বর তক্ষক কেনার জন্য হেলাল ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ভুজপুরে আসেন। ২৩ নভেম্বর তিনি জানতে পারেন, তার স্বামীকে একদল লোক ভুজপুর-রামগড় এলাকায় জিম্মি করে রেখেছে। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছে না।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই চলতি বছরের ২৩ জুলাই রামগড়-বাগানবাজার এলাকায় পাহাড়ি পথে যাত্রী বহনকারী এক মোটরসাইকেলের চালক জাকির হোসেন রুবেলকে (২৪) গ্রেফতার করে।
আদালতে জবানবন্দিতে রুবেল এই ঘটনায় জড়িত কয়েক জনের নাম প্রকাশ করে।
এরপর তক্ষকের ক্রেতা সেজে ফাঁদে ফেলে পিবিআই টিম বুধবার গ্রেফতার করে বিল্লালকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল জানান, হেলালকে হত্যা করে লাশ খাগড়াছড়ির কাছে ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার পাহাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এরপর বুধবার বিকেলে বিল্লালকে নিয়ে লাশ উদ্ধারের জন্য যায় পিবিআই টিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার রাতে মাটি অপসারণের কাজ শুরুর পর ওপর থেকে একটি বিষধর সাপ গর্তের ভেতরে পড়ে। আগুন জ্বালিয়ে ফেলা হয় গর্তের ভেতরে জীবন্ত সাপটির ওপর। সাপটির মৃত্যু নিশ্চিত করা হলেও রাতে আর মাটি অপসারণের কাজ করেননি পিবিআই সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবারও ঘটনাস্থলে অভিযানে যান তারা। সেখানে প্রায় ৫০ ফুট গভীরতার একটি গর্ত দেখিয়ে দেয় বিল্লাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন