চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্রমশ উন্নতির ফলে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি ও তাদের প্রতিকার সম্পর্কে দিন দিন মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হচ্ছে। এক সময় যে সব রোগ মানুষের কাছে অজেয় মনে হত তার অনেকগুলোরই নিয়ন্ত্রণ এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। ইনসুলিন আবিষ্কারের ফলে ডায়াবেটিসও এখন আর কোন নিয়ন্ত্রনের অতীত সমস্যা নয়। তবে, রোগ হিসেবে ডায়াবেটিসের একটি বিশেষত্ব হল, একবার কারো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তার এত্থেকে পুরোপুরি নিস্তার লাভের কোন সুযোগ নেই, সারা জীবন তাকে ডায়াবেটিসের সাথেই সহাবস্থান করতে হবে। ডায়াবেটিসের আরেকটি মারাত্মক দিক হল, এ রোগটি মানুষের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গকে আক্রমণ করে, ধীরে ধীরে নিস্তেজ করে ফেলে।
আসুন, বিষয়টি খানিকটা খোলাসা করা যাক। আপনি দালানের একটি প্রাচীরের কথা ভাবুন। এটি অসংখ্য ইটের একটার সাথে আরেকটার গাঁথুনিতে গড়ে উঠেছে। ঠিক একইভাবে মানুষের শরীর, এর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, কোটি কোটি কোষের সমন্বয়ে গড়া। এই কোষগুলোর প্রত্যেকেই দালান-প্রাচীরের এক একটি ইটের মতোই একক ও স্বতন্ত্র সত্ত¡া। আপনার পুরো শরীর কিংবা এর কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যখন কোন কাজ করে, তা আসলে এই কোষগুলোর প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাবে সম্পাদিত কাজের সমন্বিত বহিঃপ্রকাশ মাত্র। তা, এই কার্য সম্পাদনের জন্যে ত শক্তি প্রয়োজন। সে শক্তির প্রধান যোগান আসে শর্করা জাতীয় খাবার থেকে প্রাপ্ত গ্লুকোজ অণুর বিপাকের ফলে। ডায়াবেটিস নামের ব্যাধি ঠিক এ জায়গাতেই আঘাত হানে। এটি গ্লুকোজকে কাজে লাগিয়ে কোষের কার্য নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনের পথ আটকে দেয়।
আরেকটু গভীরে যাওয়া যাক। কোষের বাহির থেকে ভিতরে গ্লুকোজ অণুর প্রবেশের জন্য প্রয়োজন পড়ে একটি হরমোনের। সেটাই ইনসুলিন। এই ইনসুলিন তৈরি হয় প্যানক্রিয়াসের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহেন্সের বিটা-সেল নামীয় কোষসমষ্টি থেকে। যখন কোন ব্যক্তির শরীরে এই কোষসমষ্টি কোন কারণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়, তখন সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয় (টাইপ-১ ডায়াবেটিস)। তবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যে সমস্যাটি দেখা দেয় তা হল, প্যানক্রিয়াস শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না; কিংবা, ব্যাপারটি এমন হতে পারে যে, ইনসুলিন তৈরি ত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু ইনসুলিনের প্রতি শরীরের কোষসমুহের সংবেদনশীলতা অর্থাৎ সাড়া দেয়ার প্রবণতা কমে গেছে (ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স) এবং ফলত একই কাজ সম্পাদনের জন্য আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে ইনসুলিনের প্রয়োজন হচ্ছে, যা প্যানক্রিয়াস যোগান দিতে ব্যর্থ হচ্ছে (টাইপ-২ ডায়াবেটিস)। কারণ যাই হোক, দেহের কোষসমুহে যখন গ্লুকোজ প্রবেশে ব্যর্থ হয়, এরা শক্তি উৎপাদন করতে পারে না, ফলে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমুহ নিস্তেজ হতে শুরু করে। অন্য দিকে কোষে প্রবেশে ব্যর্থ হওয়ায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। রক্তে মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজের উপস্থিতি শরীরের জন্য বিষ হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে রক্তের যোগান দেয়া রক্তনালীসমূহকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। এই দ্বিবিধ ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ায় একে একে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যথা হার্ট, চক্ষু, কিডনি, স্নায়ু ইত্যাদি ধীরে ধীরে বিকল হতে শুরু করে এবং আপনার হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক সহ নানাবিধ জটিল ও মারাত্মক শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
আমার ধারণা, উপরের আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ডায়াবেটিস আপনাকে হঠাৎ করে মারাত্মক কোন ঝাঁকুনি দেবে না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রাখা না গেলে আপনাকে তিলে তিলে কুরে কুরে খাবে, ধীরে ধীরে আপনার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহকে অকার্যকর করে ফেলবে এবং দিনে দিনে আপনার জীবনী শক্তি নিঃশেষ করে অবশেষে আপনাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে। সবচেয়ে বড় কথা, যে কটা দিন আপনি বাঁচবেন, আপনাকে শক্তিহীন, নির্জীব দেহ নিয়ে নিরানন্দ জীবন যাপন করতে হবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি মৌলনীতি হল, ‘প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম’। সুতরাং, কী কী কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে প্রথমে বুঝা দরকার, যাতে আপনি আগে ভাগেই সতর্ক হতে পারেন।
টাইপ-১ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে বলতে গেলে আপনার কোন হাত নাই। এটা হয়ে থাকে যখন আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কোন কারণে আপনার নিজেরই প্যানক্রিয়াসের ইনসুলিন তৈরিকারী বিটা-সেলের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয় এবং এদের ধ্বংস করে দেয়।টাইপ-২ ডায়াবেটিস অনেক কারণেই হতে পারে। পারিবারিক ইতিহাস তথা শরীরে বিশেষ ধরণের জিনের উপস্থিতি একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। দেখা গেছে, ৮০% ডায়াবেটিস রোগীই স্থূলকায়। এ ধরনের ডায়াবেটিস সৃষ্টিতে কাযকি পরিশ্রমের অভাব একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। ডায়াবেটিসের আরেকটি কারণ হতে পারে গর্ভাস্থায় মহিলাদের কিছু হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন, যার ফলে ইনসুলিনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। বেশির ভাগ মহিলা চাহিদা মোতাবেক অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারলেও কেউ কেউ পারে না, ফলে তাদের ডায়াবেটিস দেখা দেয়। এ ধরণের ডায়াবেটিসকে গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে। আরও যেসব কারণ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে, জিনের মিউটেশন, কিছু রোগ-ব্যাধি (যথা - সিস্টিক ফাইব্রোসিস, হিমোক্রোমাটোসিস, কুশিংস সিন্ড্রোম, হাইপারথাইরয়েডিজম, প্যানক্রিয়াটাইটিস ইত্যাদি) এবং কিছু ওষুধের ব্যবহার (যথা- কর্টিকোস্টেরয়েডস, থায়াজাইড ডাইইউরেটিকস, বিটা-ব্লকারস, এন্টিসাইকোটিকস, স্টাটিনস ইত্যাদি)।
ডায়াবেটিসের সম্ভাব্য কারণ সমুহ বিশ্লেষণের পর এখন দেখা যাক, প্রতিরোধমূলক কী ব্যবস্থাদি আপনি নিতে পারেন। পারিবারিক ইতিহাস বা জিনগত কারণে যদি আপনার ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, সেখানে ত আপনার তেমন কিছু করার থাকে না। তবে, এটি আপনাকে সতর্ক হতে সাহায্য করবে এবং আপনি ডায়াবেটিস ঠেকিয়ে রাখতে কিংবা বিলম্বিত করতে যেসব উপায় অবলম্বনের সুযোগ রয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে আগেভাগে মনোযোগী হতে পারবেন। ডায়াবেটিস ঠেকাতে কিংবা বিলম্বিত করতে আপনি আসলেই যা করতে পারেন, তা হল শরীরের মেদ ও ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত শরীরচর্চা কিংবা কায়িক পরিশ্রম করা। স্বাস্থ্যসম্মত, পরিমিত ও সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং কাযকি পরিশ্রমের মাধ্যমে আপনি শরীরকে ফিট রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের আগমনকে পুরোপুরি ঠেকাতে না পারলেও বিলম্বিত অবশ্যই করতে পারবেন।
এখন, আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েই পড়েন, তাহলে কী করণীয়? চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা ডায়াবেটিসের ব্যবস্থাপনায় একটি ত্রিস্তরবিশিষ্ট পরিকল্পনা উপস্থাপন করে থাকেন। এর প্রথম ধাপে থাকে নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা। আপনাকে এমনভাবে আপনার খাদ্য পরিকল্পনা সাজাতে হবে, যেন আপনার রক্তে সুগার ও বাজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং বাড়তি ওজন থাকলে তা কমিয়ে আনা যায়। এখানে আপনি কী খাচ্ছেন, কতটুকু খাচ্ছেন আর কখন খাচ্ছেন, সবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে বলা যায়, দ্রুত গ্লুকোজ সরবরাহ করে এমন সুগার ও স্টার্চসমৃদ্ধ শর্করাজাতীয় খাদ্য (যথা- ভাত, রুটি, আলু) এবং সম্পৃক্ত ফ্যাট সমৃদ্ধ খাদ্য (যথা- গরু/খাসির মাংস, পূর্ণ ননীযুক্ত দুধ) আপনাকে খুব হিসেবে করে খেতে হবে। ফাইবার-সমৃদ্ধ খাদ্য যথা - শাক-সবজি, ফলমূল, বাদাম, ছোলা, শিম ও মটরশুটি জাতীয় শস্যবীজ, পূর্ণ-শস্য ইত্যাদিতে অধিকতর গুরুত্ব দিতে হবে। রক্তে অবাঞ্চিত চর্বির আধিক্য স্ট্রোক ও হৃদরোগের মতো কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। অন্য দিকে ফাইবার অন্ত্র থেকে গ্লুকোজের শোষন পরিমিত করে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলমূলের ক্ষেত্রে, তাদের সুগার বৃদ্ধির প্রবণতার ভিত্তিতে, কিছু বাছ-বিচার আপনি চাইলে অবশ্যই করতে পারেন, তবে আমেরিকান ডায়াবেটিক এসোসিয়েশনের মতে, একজন ডায়াবেটিক ব্যক্তি যে কোন ফলই নির্দ্ধিধায় খেতে পারেন। অবশ্য এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাত/শুকানো ফল কিংবা ফলে রসের চেয়ে আস্ত তাজা ফল খাওয়া শ্রেয়। এসবের বাইরে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন মাছ, বিশেষ করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডে সমৃদ্ধ মাছ (যথা-স্যামন, টুনা, সার্দিন ইত্যাদি), যা আপনাকে হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, রক্তের ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে এমন খাবার (যথা, অ্যাভোকাডো, বাদাম, ক্যানোলা, অলিভ ও পি-নাট অয়েল) আপনার নিয়মিত খাদ্য পরিকল্পনার অংশ হতে পারে। তবে, কিছুতেই মাত্রাতিরিক্ত নয়। কারণ, সব ধরণের চর্বি জাতীয় খাবারই অত্যধিক ক্যালরিসমৃদ্ধ। খাদ্যের ধরণ ও পরিমাণ নির্বাচনের পাশাপাশি খাদ্য নিয়মিত বিরতিতে গ্রহণ করাটাও জরুরি। যেহেতু ডায়াবেটিস রোগীরা খাবারের ধরণ ও পরিমাণ অনুপাতে ইনসুলিনের নিঃসরণ সমন্বয় করতে পারে না, নিয়মিত বিরতিতে খাদ্য গ্রহণ করলে যেটুকু ইনসুলিনই নিঃসৃত হয়, তা সুগার নিয়ন্ত্রণে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
খাদ্য পরিকল্পনার পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরচর্চা কালে শক্তির অতিরিক্ত চাহিদা পূরণে শরীর মাংসপেশী ও লিভারে সঞ্চিত গ্লুগোজ ব্যবহার করে। পরে এই রিজার্ভ পুনরায় পূরণে শরীর রক্তের গ্লুকোজে টান দেয়। এর ফলে একদিকে যেমন দেহের ওজন হ্রাস পায়, অন্যদিকে রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমে আসে। এছাড়া, শরীরচর্চার ফলে শরীরের কোষসমূহের ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায়। ফলে, কোষের ভেতরে অধিকতর পরিমাণে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে পারে। এটি কোষে গ্লুকোজের যোগান বৃদ্ধির পাশাপাশি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ আরও কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। তা ছাড়াও শরীরচর্চার আরও অনেক উপকারিতা আছে, যা ডায়াবেটিসঘটিত বিভিন্ন জটিলতার ঝুঁকি হ্রাস করে। এসব উপকারিতার মধ্যে আছে: রক্তচাপ হ্রাস, রক্তের বাজে কোলেস্টেরল কমানো এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ানো, মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করা এবং সর্বোপরি শরীরে একটি সার্বিক ফুরফুরে ভাব তৈরির বিষয়টি ত আছেই। হাঁটাহাঁটি একটি ভালো ব্যায়াম। বিভিন্ন গবেষণায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে ছেলে-বুড়ো সবাই নিয়মিত শরীরচর্চা করে। আমাদের দেশে সে কালচারটা তেমন একটা গড়ে উঠেনি। একটি বড় সমস্যা মাইন্ড সেটে। বুড়ো বয়সে যখন ডায়াবেটিস সহ বিভিন্ন রোগ শরীরে জেঁকে বসে এবং এসব নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত শরীরচর্চা/ কায়িক পরিশ্রম জরুরি হয়ে পড়ে, তখন আমাদের এখানে অনেকেই ভাবেন, জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছি, এবার একটু শুয়ে বসে আল্লাহ বিল্লাহ করে বাকি জীবনটা কাটাই। অথচ, ওনাদের কে বুঝাবে, এখন বাকি জিন্দেগিটুকু সুস্থ শরীরে কাটানোর জন্যেই শরীরকে কর্ম-ব্যস্ত রাখা জরুরি। টুক-টাক ঘরে-বাইরে এটা সেটা করলেও শরীরের অনেক মুভমেন্ট হয়, যা আখেরে আপনার জন্য অনেক উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।
লেখক: অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ, জাবি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন