টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার অভিযুক্ত অন্যতম আসামী সাবেক পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার প্রায় আট বছর পর বুধবার সকালে জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. সিকান্দর জুলকার নাইন এর আদালতে এসে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে বিচারক এই আদেশ দেন। মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খানের ছেলে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, সকাল পৌনে ১১ টা দিকে সহিদুর রহমান তার বাবা সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান ও ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে সাথে নিয়ে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হন। এ সময় তারা আদালত কক্ষের ভিতর অবস্থান নিয়ে আত্মসমর্পন ও জামিন আবেদনের কাগজপত্র জমা দেন। শুনানী শেষে বিচারক দুপুরের পর আদেশ দেওয়ার সময় নির্ধারন করেন। পরে বিকেল তিনটার দিকে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক।
এর আগে প্রথম আদালতে শুনানী শেষে তাকে করা নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে একটি অস্ত্র মামলায় জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে নেওয়া হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আব্দুল বাকী মিয়াসহ কয়েকজন। বাদি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ শহরের কলেজপাড়া এলাকায় তার নিজ বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলীর নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। ওই দুই আসামীর জবানবন্দিতে এই হত্যাকান্ডের সাথে মুক্তির বড় ভাই টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা তৎকালীন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি এবং তার ছোট দুই ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও তৎকালীন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তার পরেই আমানুর ও সহিদুরসহ চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে ঘটনার ২২ মাস পর আমানুর রহমান আদালতে আত্মসর্মপন করেন। প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। তবে তার অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পা এখনো পলাতক রয়েছেন। আদালতে এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন