বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকীতে স্বাধীনতা সংগ্রামে অকুতোভয় বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে সমগ্রজাতি। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার মহান বিজয় দিবসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানানো যাবে বলে জানিয়েছে গণপূর্ত অধিদফতর।
গণপূর্ত অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এবার প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন না। তবে তাদের পক্ষে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিবগণ। এছাড়া স্পিকার, মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাবেন।
তাই বিজয় দিবস ঘিরে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো সাভার জাতীয় স্মৃতি সৌধ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনে কোন কমতি ছিল না। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। সৌধস্তম্ভের উঁচু চূড়া থেকে শুরু করে শহীদ বেদী ও পায়ে চলার পথসহ পুরো এলাকা ধুয়ে মুছে করা হয়েছে চকচকে। সৌধ ফটক থেকে বেদী পর্যন্ত পায়ে হাঁটা পথের লাল ইটগুলো সাদা রংয়ের ছোঁয়ায় ছড়াচ্ছে শুভ্রতা। বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ ও সাদাসহ বিভিন্ন বর্ণের ফুল গাছের চারা। ছেঁটে সৌন্দর্যমন্ডিত করে তোলা হয়েছে সৌধ এলাকার শোভাবর্ধনকারী গাছ। আর সৌধের কৃত্রিম হ্রদগুলোতে ফুটে থাকা লাল শাপলা যেন জানান দিচ্ছে অকুতোভয় অর্জনের।
এছাড়া জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে ইতোমধ্যেই সশস্ত্র তিন বাহিনীর চৌকস দল তাদের কুচকাওয়াজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছেন। ক্ষণে ক্ষণে তাদের অনুশীলন পর্বে বিউগলের সুর যেন কড়া নাড়ছে বিজয়ের ৪৯তম দিবস উদযাপনের। এবারও জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারের কোন কমতি ছিল না। বিভিন্ন গুরুত্বপ‚র্ণ পয়েন্টে সিসিটিভির পাশাপাশি বসানো হয়েছে অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকা জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সৌধ এলাকায় নিরাপত্তা চৌকি, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি বাড়নোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে সৌধের আশপাশের চলাচলকারীদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে।
গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার বলেন, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সামরিক সচিবগণ প্রথমে ফুল দেবেন। এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করতে হবে। আমাদের অনুরোধ যারাই ফুল দিতে আসবেন তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ফুল দেবেন। স্মৃতিসৌধে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। প্রসঙ্গত; করোনা মহামারির কারণে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ বন্ধ ছিলো দীর্ঘ আট মাস। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আনুষ্ঠানিকতাও করোনার কারণে সরকারিভাবে স্থগিত করা হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন