বিজয়ের ৫০তম বার্ষিকীতে স্বাধীনতা সংগ্রামে অকুতোভয় বীর শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে সমগ্রজাতি। সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে দিবসের প্রথম প্রহরেই শ্রদ্ধা জানাবেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। এরপরই সৌধ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, তিনবাহিনীর প্রধানগণ ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ লাখো জনতা। আর এই বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আজ বুধবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ।
এবার জাতীয় স্মৃতি সৌধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ আগেই শেষ হয়েছে। সৌধ স্তম্ভের উঁচু চ‚ড়া থেকে শুরু করে শহীদ বেদি ও পায়ে চলার পথসহ পুরো এলাকা ধুয়েমুছে করা হয়েছে চকচকে। সৌধ ফটক থেকে বেদি পর্যন্ত পায়ে হাঁটা পথের লাল ইটগুলো সাদা রংয়ের ছোঁয়া ছড়াচ্ছে শুভ্রতা। বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ ও সাদাসহ বিভিন্ন বর্ণের ফুল গাছের চারা। ছেঁটে সৌন্দর্যমন্ডিত করে তোলা হয়েছে সৌধ এলাকার শোভাবর্ধনকারী গাছ। আর সৌধের কৃতিম হ্রদগুলোতে ফুটে থাকা লাল শাপলা যেন জানান দিচ্ছে অকুতোভয় অর্জনের।
স্মৃতি সৌধের ভেতর ও বাইরের অংশের সীমানা প্রাচীর ও ফটকসহ বিভিন্ন স্থানে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, সবুজ বাতির বর্ণিল আলোকসজ্জার। প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য প্রস্তুতি শেষে হয়েছে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত দলের মহড়া। এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মহাসড়ক সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। দুইপাশে নেতা-কর্মীদের ছবি সম্বলিত নানা ব্যানার ফেস্টুনও শোভা পাচ্ছে।
সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, সৌধ চত্বর এলাকা জুড়ে ধোঁয়ামোছা ও অন্যান্য সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ বন্ধ থাকায় এবার দুমাস আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় শতাধিক শ্রমিক মাসব্যাপী এ কাজ করেছে।
তিনি আরো বলেন, তবে ১৬ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও দেশি-বিদেশি ক‚টনীতিকদের শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। আজ বেলা ১১টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফি বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও এর আশপাশের এলাকাজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারও প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সৌধ এলাকায় নিরাপত্তা চৌকি, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি বাড়নোসহ নিরাপত্তার স্বার্থে সৌধের আশপাশের চলাচলকারীদেরও তল্লাশি করা হচ্ছে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার জানান, বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে স্মৃতিসৌধ এলাকাজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তা চৌকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। তবে করোনা মহামারীর কারণে স্মৃতিসৌধে আগত সকলকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাধ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন