হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর (রহ.) স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যাকান্ড আখ্যা দিয়ে একটি কুচক্রি মহল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকসহ দেশের ৩৬ জন আলেম ওলামার নামে মিথ্যা বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১০১ জন খ্যাতনামা আলেম। গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আল্লামা আহমদ শফীর শ্যালক বাদি হয়ে আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুকে অস্বাভাবিক ও হত্যাকা- দাবি করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেয়।
এক বিবৃতিতে আলেমরা বলেন, শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) এর মৃত্যু ছিল স্বাভাবিক। যা দেশবাসীর সামনে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। আল্লামা আহমদ শফীর ইন্তেকালের পর একটি মহল বিভ্রান্ত ছড়ালে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর বড় ছেলে মাওলানা ইউছুফ এবং হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু মৃত্যুর এতদিন পরে একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশ এবং জাতিকে বিভ্রান্ত করার জন্য তার মৃত্যুকে অস্বাভাবিক আখ্যায়িত করে মৃত্যুর জন্য মাওলানা মামুনুল হকসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও চক্রান্তমূলক মামলা করেছে। এ মামলা জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আলেমরা আরো বলেন, একটি মহল আল্লামা আহমদ শফীর জীবদ্দশায় তাঁকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে। তারা আলেমদেরকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড়
করিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে। আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।
আলেমরা বলেন, আল্লামা মামুনুল হক দেশের সম্পদ ও জনপ্রিয় ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তার জনপ্রিয়তায় একটি গোষ্ঠী ঈর্ষান্নিত হয়ে তাকে মামলায় জড়ানো হচ্ছে। হামলা মামলা দিয়ে আলেম উলামাদের হকের আওয়াজ বন্ধ করা যাবে না।
আলেমরা আরও বলেন, আল্লামা আহমদ শফী (রহ.) এর মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছিল এটি একটি মীমাংসিত বিষয়। হাসপাতাল থেকে ইস্যুকৃত ডেথ সার্টিফিকেটেও তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলা হয়েছে। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন পর নতুনভাবে মামলা দায়ের করা জাতির কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়া জনবিচ্ছিন্ন একটি মহলের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়। অনিতিবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বিবৃতিদাতা আলেমরা হচ্ছেন, জামিআ মুহাম্মদিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, জামিআ ইসলামিয়া লালামাটিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফারুক আহমদ, জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রধান মুফতি হিফজুর রহমান, জামিয়া কুরআনিয়া ঝাউতলা মাদরাসা চট্টগ্রাম এর প্রিন্সিপাল মাওলানা আলী উসমান, ফেনী শর্শাদি মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা আফজালুর রহমান, জামিয়া জালালিয়া সিলেট এর প্রিন্সিপাল মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মারকাজুল ফিকরিল কুরআন ঢাকা এর প্রিন্সিপাল মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, খানকায়ে আখতারিয়া মাদরাসার মানিকগঞ্জ এর প্রিন্সিপাল মাওলানা সাঈদ নূর, মারকাযুত তারবিয়াহ বাংলাদেশের পরিচালক মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা আব্দুল বাসিত খান, জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুল ফালাহ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা তালহা, জামিয়া ইসলামিয়া ওহিদিয়ার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা জুবায়ের, নোয়াখালী দত্তরহাট মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সিদ্দীক আহমদ, বাইতুল আমান আদাবর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুর রহমান, আশরাফুল মাদারিস মুহাম্মদপুরের প্রিন্সিপাল মাওলানা ইসমাঈল, আহসানুল উলুম আদাবর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আমির হোসাইন, বাইতুল ফালাহ মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, আল-কুরআন একাডেমির ভৈরবের পরিচালক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, জামিআ ইসলামিয়া দারুল উলুম দক্ষিণগাঁও এর শাইখুল হাদীস মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী ও জামিআ ফারুকিয়া সিলেট এর প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুল আজীজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন