শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নতুন পথচলা শুরু হলো যুক্তরাজ্যের

ব্রেক্সিটে খাবার ও ওষুধ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০২ এএম

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ শেষে নতুন বছরে নতুন পথচলা শুরু করেছে যুক্তরাজ্য। বৃহস্পতিবার জিমএটি ২৩ : ০০ থেকে যুক্তরাজ্য ইইউর নিয়ম অনুসরণ বন্ধ করে দেয়। তার জায়গায় কার্যকর হয় নতুন চুক্তি। এখন থেকে নতুন চুক্তি অনুযায়ী ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ভ্রমণ, বাণিজ্য, অভিবাসন এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘‘এখন যুক্তরাজ্যের স্বাধীনতা আমাদের হাতে। দীর্ঘ ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং আমরা আমাদের কাজ ভিন্নভাবে এবং আরো ভালোভাবে করতে পারবো।” ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, যুক্তরাজ্য এখনো ‘বন্ধু এবং মিত্রই’ থাকবে। যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা অবশ্য আগামী কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ নতুন নিয়ম নিয়ে কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ২০১৬ সালে ঐতিহাসিক গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন হয় যুক্তরাজ্য। কিন্তু উভয়পক্ষ একটি বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হতে না পারায় গত ১১ মাস ধরে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ আটকে ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তারা ভবিষ্যত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব এবং বাণিজ্য নিয়ে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে সক্ষম হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর ইইউ’র ২৭টি সদস্যদেশের রাষ্ট্রদ‚তরা ইইউ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেন। পরে ইইউ’র শীর্ষ কর্মকর্তারা চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে সই করেন। তারপর গত বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ৫২১-৭৩ ভোটে দ্রুতই চুক্তিটি অনুমোদন পায়। সেখান থেকে উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডস এ চুক্তি চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর রানিও তাতে সম্মতি দেন এবং সেটি আইনে পরিণত হয়। নতুন চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাজ্যে উৎপাদিত পণ্য শুল্ক-মুক্তভাবে ইইউর অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রবেশ করার সুযোগ পাবে। তার অর্থ যুক্তরাজ্য এবং ইইউর মধ্যে পণ্য আমদানিতে কোনো কর দিতে হবে না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে আগের মত ব্যবসা প্রয়োজনে বা ইইউ’র দেশগুলো ভ্রমণে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের কাগজপত্র লাগবে না। বরং এখন থেকে তাদের আরো বেশকিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে। ব্যাংকিং এবং অন্যান্য সেবাখাত কোন নিয়মে চলবে তা নিয়ে এখনো অনিশ্চিয়তা কাটেনি। য্ক্তুরাজ্যের অর্থনীতিতে এই দুই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদিকে, চুক্তি সম্পন্ন হলেও বেক্সিট-পরবর্তী নতুন পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ব্রিটেনের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাকারীদের আশঙ্কা, হঠাৎ করে শুরু হওয়া পরিবর্তনগুলো সরবরাহ ব্যাহত করবে এবং ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। খবর এএফপি। জাতীয় কৃষক ইউনিয়নের সভাপতি মিনেট বাটারস বলেন, সদস্যরা ধারণা করছেন যে চুক্তির পরও সীমান্তে বাণিজ্য করতে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। এমন শঙ্কা থেকেই সংস্থাগুলো আরো বেশি পণ্য মজুদ করতে শুরু করে। এছাড়া নভেল করোনাভাইরাস লকডাউনে বিলম্বিত অর্ডারগুলোও প‚রণ করার জন্য ইংল্যান্ডের বন্দরগুলোয় ছোটাছুটি করছিল। এজন্য চুক্তি ঘোষণার আগে সীমান্ত ও বন্দরগুলোয় দীর্ঘ পণ্যজটের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে আবার কভিড-১৯-এর সংক্রমণ রোধে ক্রিসমাসের আগে কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ দুদিনের জন্য ব্রিটেনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বন্দরের দিকে যাওয়া হাজার হাজার লরি ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে পড়ে এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেশ কয়েক দিন ধরে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা নেয়া হয়েছিল। ফুড অ্যান্ড ড্রিংক ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী ইয়ান রাইট বলেন, গত সপ্তাহে বন্দরগুলোয় বিশৃঙ্খলা এবং ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে সর্বশেষ হাঁসফাঁসের অর্থ হলো, সরবররাহে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত ঘটবে এবং কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনগুলোর অভিযোগ, লন্ডন ও ব্রাসেলসের মধ্যে নতুন চুক্তি কোটা ও শুল্কের হুমকি থেকে অব্যাহতি দিলেও শুক্রবার থেকে সব নতুন চেক ও ফর্ম পূরণের বিষয়গুলো সময়সাপেক্ষ হবে। এছাড়া এ বিষয়গুলো খাদ্য ও ওষুধ সংস্থাগুলোর জন্য ব্যয় বাড়িয়ে দেবে। ব্রিটেনের চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ খাবার ইইউ থেকে আসে। ব্রিটেন বেশির ভাগ সবজি ও ফল আমদানির ওপর নির্ভরশীল। গার্ডিয়ান, রয়টার্স, এএফপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন