যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে যাওয়া ব্যক্তিরা দেশটিতে অবস্থান করতে পারবেন না। এমন শর্ত যুক্ত করে নতুন একটি আইন তৈরি করেছে দেশটির সরকার; যা আগামী সপ্তাহে পাস হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রোববার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। -রয়টার্স, ডেইলি মেইল
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রিটেনে যাওয়া অভিবাসীদের ঢল সামলানোর উপায় খুঁজতে নিজ দলের আইনপ্রণেতাদের চাপের মুখে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ছোট নৌকায় চেপে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের ঠেকানোর পদক্ষেপকে সুনাক তার পাঁচটি মূল অগ্রাধিকারের তালিকায় অন্যতম হিসাবে যুক্ত করেছেন। অভিবাসীদের উদ্দেশ্য করে ডেইলি মেইলকে সুনাক বলেছেন, ‘কোনও ধরনের ভুল করবেন না। আপনি যদি এখানে অবৈধভাবে আসেন, তাহলে থাকতে পারবেন না।’
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ব্রিটেনে পৌঁছানো আশ্রয়প্রার্থীরা তাদের মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য দেশটিতে অবস্থান করতে পারেন। গত বছর ৪৫ হাজারের বেশি অভিবাসী বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছে; যা আগের তুলনায় বেশি। অভিবাসীদের ব্রিটেনমুখী ঢল থামানোর লক্ষ্যে দেশটির সরকার নতুন আইন করছে। এই সংকট মোকাবিলায় তৈরি আইনটি আগামী মঙ্গলবার সংসদে উপস্থাপন করা হবে। সেখানে আইনপ্রণেতাদের সম্মতিতে আইনটি পাস হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
দেশটির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্যান্য দেশের তুলনায় গড়ে অনেক কম। গত বছর ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হাজার হাজার অভিবাসীকে যুক্তরাজ্য থেকে ৬ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরের দেশ রুয়ান্ডায় পাঠানোর বিষয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছিলেন। ব্রিটেনে প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার অভিবাসী পাড়ি জমান; যাদের অনেকেই আফগানিস্তান, সিরিয়া কিংবা যুদ্ধবিধ্বস্ত অন্যান্য দেশের নাগরিক।
তবে অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর প্রথম ফ্লাইটটি একেবারে শেষ মুহূর্তে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতের নিষেধাজ্ঞায় আটকে যায়। পরে বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে লন্ডনের হাইকোর্ট অভিবাসীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে রায় দেয়। কিন্তু দেশটির বিরোধীরা সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে চাইছে।
যারা অবৈধভাবে ব্রিটেনে আসছেন তাদের আশ্রয় দাবি করাকে নিষিদ্ধ করা হবে কিনা স্কাই নিউজের এমন এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির মন্ত্রী ক্রিস হিটন-হ্যারিস বলেছেন, ‘আমি সেরকমই বিশ্বাস করি। হ্যাঁ।’ ‘লোকজন যদি এই দেশে অবৈধভাবে আসেন, তাহলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে অথবা রুয়ান্ডার মতো কোথাও পাঠানো হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন