শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতে করোনার টিকার মহড়া, বাংলাদেশে তালিকাই হয়নি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ৮:২১ এএম

করোনাভাইরাসের টিকা অবশেষে মানুষের দোরগড়ায় আসছে। এদিকে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গেই অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়ার কথা৷ ভারত টিকার অনুমোদন দেয়ার পাশাপাশি এরিমধ্যে ড্রাই রান বা মহড়াও চালিয়েছে৷ কিন্তু বাংলাদেশের প্রস্তুতি কতটুকু?

করোনার দুইটি টিকা জরুরি ব্যবহারের জন্য রোববার অনুমোদন দিয়েছে ভারতের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর৷ তার একটি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-আস্ট্রাজেনেকার৷ এর একদিন আগেই চারটি রাজ্যে শুরু হয়েছে টিকাদান কর্মসূচির মহড়া৷ এতে টিকা দেয়া ছাড়া বাকি সব কাজেরই পরীক্ষা চালানো হচ্ছে৷ দেখে নেয়া হচ্ছে ব্যবস্থাপনা ও সক্ষমতাও৷ যার মধ্য দিয়ে আসছে সপ্তাহেই সেখানে টিকাদান শুরু হতে পারে৷

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ড-আস্ট্রাজেনেকার টিকাটি পাওয়ার কথা বাংলাদেশেরও৷ কিন্ত ভারত টিকাদানের সবকিছু চূড়ান্ত করলেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোন তালিকাই হয়নি৷ শুধু কারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পাবেন তার ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে৷ বাংলাদেশ এখন ব্যস্ত টিকার দাম পরিশোধ নিয়ে৷ কারণ ভারত চায় টিকা পাঠানোর আগেই বাংলাদেশ তার অনুমোদন এবং আগাম দাম পরিশোধ করুক৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (আইএমএস) ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, ‘‘এই সপ্তাহের মধ্যেই টিকার দাম যাতে পরিশোধ করা যায় তার প্রস্তুতি চলছে৷’’

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে?

ভারতের সেরাম ইনন্সিটিউট থেকে তিন কোটি টিকা আনবে বাংলাদেশ৷ এ নিয়ে গত নভেম্বরে সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকোর মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়৷ প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়বে পাঁচ ডলার৷ পরিবহণ খরচ এক ডলার৷ বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে একই দামে টিকা পাবে বলে চুক্তিতে লেখা আছে৷ তিন কোটি টিকার প্রথম কিস্তির ৫০ লাখ চলতি মাসেই পাওয়ার আশা করছেন ডা. হাবিবুর রহমান৷ বাকি টিকা ধাপে ধাপে পাওয়া যাবে৷ এই সপ্তাহে কত টিকার দাম পরিশোধ করা হচ্ছে প্রশ্ন করলে তিনি তা জানাতে রাজি হননি৷ বলেন, ‘‘যখন দাম পরিশোধ করব তখনই জানতে পারবেন৷’’

তবে অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে দেড় কোটি টিকার জন্য দাম পরিশোধ করা হতে পারে৷ বাকিটা প্রথম কিস্তি আসার পর পরিশোধ করা হবে৷ বাংলাদেশে এই টিকা দেয়ার কোন ড্রাই রান বা মহড়া হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়৷ কারণ তার কোনো প্রস্তুতির কথা কেউ জানাতে পারেন নি৷

কারা প্রথম ধাপে টিকা পাবেন গত মাসেই তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির চেয়ার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা৷ কিন্তু সেই তালিকা এখনও হয়নি৷ কোন পর্যায়ে রয়েছে জানতে চাইলে তিনি রোববার বলেন, ‘‘সব প্রস্তুতি নিয়েই আমরা কাজ করছি৷ সময়মত জানতে পারবেন৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারতের সাথে আমাদের চুক্তি হল ওরা যখন টিকা দেয়া শুরু করবে আমরাও তখন দেয়া শুরু করব৷ আশা করি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে টিকা দেয়া শুরু হবে৷’’

প্রথম ধাপে যে ২৫ লাখ ব্যক্তিকে ৫০ লাখ টিকা দেয়া হবে (একেকজন দুই ডোজ করে) সে তালিকা বাস্তবে এখনও করা হয়নি৷ শুধু অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে৷ সেখানে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘ মেয়াদি রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী, গণপরিবহন কর্মী৷

টিকার অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি ও প্রস্তুতির জন্য জেলা উপজেলায় কমিটি গঠনের কথা বলা হলেও মাঠের চিত্র ইতিবাচক নয়৷ নারয়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. ইমতিয়াজ সামাদ জানান, তারা এখনও কোনো তালিকা করেননি৷ তাদের কোনো ড্রাই রানের প্রস্তুতিও নিতে বলা হয়নি৷ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কীভাবে এবং কী প্রক্রিয়ায় টিকা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) এবং আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দেবেন৷ তাদের দুই দিনের একটা প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷ আর তালিকা হবে অনলাইনে৷ তবে তালিকা তৈরির কোনো কাজ এখনও শুরু হয়নি৷’’

আরো কয়েকটি জেলায় খবর নিয়ে একই তথ্য পাওয়া গেছে৷ কোনো কোনো জেলায় কমিটি হলেও এখনো কোনো বৈঠক হয়নি৷ বিশেষ করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় টিকা কারা প্রথমে পাবেন তাদের তালিকাই তৈরি হয়নি এখনও৷

টিকা সংরক্ষণ ও পরিবহণে ইপিআই'র ওপরই নির্ভর বরা হচ্ছে৷ তবে প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থারও সুযোগ রাখা হয়েছে৷ কিন্তু এই টিকা প্রয়োগ করার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন চায় বাংলাদেশ৷ সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরেরও অনুমোদন লাগবে৷

অবশ্য ভারত ছাড়াও এরইমধ্যে যুক্তরাজ্য ও আর্জেন্টিনা অক্সফোর্ডের টিকা ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে৷

ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, টিকার অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে৷ অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে৷ তিনি জানান, ‘‘এটার জন্য তো টিকার নমুনা এনে পরীক্ষা করা হবে না৷ তার প্রয়োজনও নাই৷ দ্রুতই অনুমোদন পাওয়া যাবে৷’’ ডয়চে ভেলে

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Mehedi Hasan ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:২৬ এএম says : 0
আমাদের বন্ধু দেশ বলে কথা
Total Reply(0)
S. M. Samsul Alam ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:২৭ এএম says : 0
টিকার প্রয়োজন নাই।
Total Reply(0)
Md Rabby Sarker ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:২৮ এএম says : 0
দেখ ভাই আমাদের সরকার হল ভারতের পা চাটা গোলাম ।শেনেছি ভারতীয় কোন জানি ওষুধ প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেছে ,আগে দেশের টাকা ওই প্রতিষ্ঠান কে দিতে হবে তারপর টিকা পাওয়ার গ্যারান্টি দেবে কিন্তু আদও কি তারা টিকা দিতে পারবে ??? দেশের মানুষের প্রশ্ন ??? এখানে আমি মনে করি আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রী নাকে তেল দিয়ে বাসায় ঘুমাইতেছে । দেশের মানুষ করোনা টিকা তো পাবেই না স্বাস্থ্য মন্ত্রীর ও ঘুম ভাঙ্গবে না ।
Total Reply(0)
Md Sayful Islam ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:২৮ এএম says : 0
নিজেরাই চেষ্টা করার দরকার ছিলো অযথা ভারতের পিছনে না ঘুরে
Total Reply(0)
নাবিল আব্দুল্লাহ ৪ জানুয়ারি, ২০২১, ১০:২৯ এএম says : 0
হবেইবা কীভাবে? ভারত তো টিকা রফতানিই বন্ধ কইরা দিছে। সো, আরো একবছর পর বাংলাদেশের টিকার চিন্তা করতে হবে। এই হইলো আমাদের দাদাবাবুদের আচরণ!
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন