আসন্ন কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন চায় গত ২০১৫ সালের নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। তবে যারা দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নৌকার পরাজয়ের জন্য ষড়যন্ত্র ও প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে তাদের নৌকার মনোনয়ন দেয়া হলে সিদ্ধান্ত মান্যকারী দলের নিবেদিত ও ত্যাগী নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয় আওয়ামীলীগ সহ সকল অঙ্গসংগঠনের দায়িত্বশীল পদে থাকা একাধিক নেতা মত প্রকাশ করেছেন। ইতি পূর্বে বিগত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজনে দলীয় মনোনয়ন পত্র ফরম উত্তোলন ও জমা দেয়াকে কেন্দ্র করে দলের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে কাজ করা অনেক নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানাগেছে, ২০১৫সালের কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পায় পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এনায়েত হোসেন হাওলাদার। কিন্তু এতে বিপত্তি ঘটিয়ে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী হয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক সরদার লোকমান হোসেন, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মশিউর রহমান সবুজ। কিন্তু আওয়ামীলীগের শক্তঘাটি নৌকার জনপ্রিয়তার কাছে পরাজয় ঘটে তাদের। আর ফলাফলে নৌকা প্রতিক নিয়ে এনায়েত হোসেন হাওলাদার ৭হাজার ১২৮ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। তার প্রতিদ্বদ্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ নারিকেল গাছ প্রতিক নিয়ে পায় ৬হাজার ৮৮ভোট, বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জগ প্রতিক নিয়ে পায় ৪হাজার ৮১৩ভোট ও বিদ্রোহী প্রার্থী সরদার লোকমান হোসেন মোবাইল ফোন প্রতিক নিয়ে পায় ২হাজার ২২০ভোট।
গত নির্বাচনে যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করতে পারেনি তারা এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতায় নৌকা প্রতিক পেলে দলীয় ত্যাগী নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হবে বলে তৃনমূল আওয়ামীলীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের মতামত।
এব্যাপারে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকী বলেন ‘ যারা দলের সিদ্ধান্ত মেনেছে যারা জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থা রেখেছে এবং নৌকা প্রতিক বিজয়ের জন্য কাজ করেছে নৌকার মনোনয়ন তাদের জন্যই প্রত্যাশা করি। আর যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল তাদের বিষয়ে আমরা বিদ্রোহী প্রার্থী বলে লিখে পাঠিয়েছি।’
এব্যাপারে উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মোঃ সাহাবউদ্দিন মিঠু বলেন ‘ আমরা চাই যারা দলের সিদ্ধান্ত মেনে চলে তাদের কাছে নৌকার মনোনয়ন থাকুক।’
উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক সরদার বলেন ‘ বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তৎকালিন বিএনপি’র মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া, বিএনপি’র তৎকালিন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হেলেন জেরিন খান ও দৈনিক দিনকাল পত্রিকার বানিজ্যিক কর্মকর্তা মাহাবুব হোসেন সরদারের হাতে ফুলের তোরা দিয়ে বিএনপিতে যোগদান করে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতা হারালে সে আবার আওয়ামীলীগে চলে আসে। বারবার দল বদলকারী নেতা আবুল কালাম আজাদ সহ বিদ্রোহী প্রার্থীরা যাতে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন না পায় তার দাবী জানাইা ’
উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সরদার নিজামুল হক বলেন ‘ গতবার শত ষড়যন্ত্রের মধ্যেও আমরা দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করেছি। তাই নৌকার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের হাতে যেন নৌকা না যায় এমনই প্রত্যাশা করি।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোঃ ফরিদ সরদার বলেন ‘ যাদের নীতি নৈতিকতা নাই তাদের হাতে যেন নৌকার মনোনয়ন না যায় তার দাবী জানাই। কারণ তারা দলে আসে নিজেদের স্বার্থে। তারা দলের স্বার্থে কাজ করেনা। বিদ্রোহীরা শুধু দলের সিদ্ধান্তই উপেক্ষা করেনি বরং তারা যারা নৌকার পক্ষে কাজ করেছে তাদের ওপরও জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান বুলেট বলেন ‘ বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বিএনপি সহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কোরয়শীর সাথেও দল করতে গিয়েছিল। তাই তিনি উপজেলায় সুবিদাবাদি লোক হিসেবেই পরিচিত। তাই তিনি সহ যাতে কোন নৌকা বিরোধী লোক আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পায় তার জন্য দাবী জানাই।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন