কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ থেকে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় বদলে যাচ্ছে সেই ভাসানচর। জানা গেছে, বহুল আলোচিত ভাসানচরে গড়ে ওঠছে তারাকা মানের হোটেল-মোটেলসহ বিলাসবহুল স্থাপনা। সেখানে বিদেশি এনজিও এবং সংস্থাগুলোর জন্য পাঁচ তারকা মানের স্থাপনা তৈরি করতে যাচ্ছে সরকার। নৌবাহিনীর তত্ত¡াবধানে নির্মাণ হবে ওই স্থাপনা। বিশেষায়িত চারটি ভবনে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের টেনিস ও বাস্কেটবল কোট, সুইমিংপুল এবং জিমনেশিয়ামসহ বেশকিছু সুযোগ-সুবিধা।
দু’দফায় যাওয়া প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা এখন বসবাস করছে ভাসানচরে। রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে আগেই। তবে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় এখনো যুক্ত হয়নি বিদেশি সংস্থাগুলো। নানা শর্তের বেড়াজালে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর আটকে রাখার চেষ্টায় রয়েছে তারা। মূলত কক্সবাজারের মতো নিজেদের সুযোগ-সুবিধা মিলবে না বলেই সংস্থাগুলো এই পথ ধরেছে বলে মনে করছেন রোহিঙ্গাবিষয়ক গবেষক প্রফেসর ড. জাকির হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ছোট্ট জায়গার মধ্যে রোহিঙ্গাদের থাকতে হবে। এ কারণে তাদের মধ্যে অনাস্থা। এ ছাড়া প্রাকৃতি দুর্যোগে কেমন হবে এ বিষয়গুলো রোহিঙ্গাদের বোঝাতে হবে। একই সঙ্গে তাদের জানাতে হবে এখানে পর্যটনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। ইতোমধ্যে বিদেশি সংস্থাগুলোর কাজের সুবিধার্থে ভাসানচরে ১০টি ভবন সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। সে সঙ্গে ১৮ জন কর্মকর্তা পরিবার নিয়ে থাকার উপযোগী আরো কিছু ভবন সংরক্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু এবার সেই সংস্থাগুলোকে ভাসানচরমুখী করতে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা নিবাস ক্লাস্টার পয়েন্টের কিছুটা দূরে তৈরি করা হবে নতুন চারটি বহুতল ভবন। শুধু বিদেশি সংস্থার কর্মকর্তারাই থাকবেন এখানে। তাই নিশ্চিত করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা। সুইমিং পুল, টেনিস এবং বাস্কেট কোটের পাশাপাশি থাকছে অত্যাধুনিক জিম।
ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন সূত্রে জানা গেছে, তারা কক্সবাজারে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে থাকেন সেরকম এয়ারকন্ডিশন রুম, জিম এবং খেলাধুলা করার জন্য টেনিস গ্রাউন্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভাসানচর স্টেশন কোস্টগার্ড লে. কমান্ডার সাইফুল ইসলামের মতে চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে অত্যাধুনিক মানের এই বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ। এ জন্য ভবনগুলোর পাশাপাশি সেখানে যারা থাকবেন তাদের নিরাপত্তা আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৩ হাজার একরের এই ভাসানচরে ইতোমধ্যে সাড়ে ছয় হাজার একর ভূমি মানব বসবাসের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত এক হাজার একর ভূমি বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদেশি সংস্থা এবং এনজিও কর্মকর্তাদের আবাসন ও বহুতল ভবনের জন্য। কক্সবাজারে অনেকেই বলাবলি করছেন ভাগ্যবিড়ম্বিত রোহিঙ্গাদের কারণে বদলে যাচ্ছে অনেকের ভাগ্য।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন