পৌরসভা নির্বাচনের ২য় ধাপে অনুষ্ঠিত বগুড়ার পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফলে রীতিমত টনক নড়ে গেছে প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নীতি নির্ধারক মহলে। বগুড়ায় গত ১৬ জানুয়ারি ৩টি পৌরসভা নির্বাচনে ১টি করে আওয়ামী লীগ, বিএনপি অন্যটিতে বিদ্রোহী বিএনপি জয়লাভ করেছে। নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর বিজয়ী ও বিজিত উভয় পক্ষের কেউই নির্বাচনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেনি মেনে নিয়েছে ফলাফল। তবে নির্বাচনী ফলাফল দেখে বগুড়া বিএনপির বর্তমান জেলা নেতৃবৃন্দের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। দলটি সুত্রে জানা গেছে, বগুড়ার শেরপুর পৌর এলাকায় বিএনপির জেলা আহ্বায়ক ও বগুড়া সদরের বর্তমান সংসদ সদস্য জিএম সিরাজের বাড়ি। এই সংসদীয় এরাকায় তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালের নির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন। ১৮ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হলে ও তারেক রহমান তাকে দলের আহ্বায়ক পদ দান করেন ও বগুড়া সদরের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মির্জা ফখরুলের সংসদ সদস্যপদ বাতিল হলে জিএম সিরাজকে দলের মনোনয়ন দিয়ে জিতিয়ে আনেন ।
শুরুতে তাকে ৩ মাসের জন্য আহ্বায়ক ঘোষণা করলেও পরে এর মেয়াদ বাড়ানো হয় ৬ মাসে । আর এখন ওই আহবায়ক কমিটির বয়স ২৬ মাস পার হতে যাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে পৌর নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হলে তিনি মনোনয়ন কেন্দ্রিক জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন। মনোনয়ন জটিলতার কারণে তার নিজ এলাকায় মেয়র পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হন শেরপুর বিএনপির সিনিয়র নেতা মো. জানে আলম খোকা। শেরপুর পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায় ওই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী খোকা জয়লাভ করেছেন আর বিএনপি প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডু ভোট প্রাপ্তির দিক থেকে হয়েছেন তৃতীয় ।
এছাড়া সারিয়াকান্দি পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বেবি শুধু পরাজিতই হননি তিনি মাত্র সাড়ে চারশ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন। অপরদিকে সান্তাহার পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট্ ুসামান্য ব্যবধানে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র হন। বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে চিহ্নিত বগুড়ায় প্রশ্ন বিহীন নির্বাচনে ৩টি পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফলে দুটিতেই তৃতীয় স্থান লাভের বিষয়টিকে দলের নেতা কর্মীরা ‘নির্বাচনে ভরাডুবি ও জেলা নেতৃত্বের’ অদূরদর্শিতা হিসেবেই দেখছেন বলে জানিয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
একইভাবে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের জেলা নেতৃত্বও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন ৩ পৌরসভার নির্বাচনে দুটিতে পরাজিত হওয়ার বিষয়ে। বিশেষ করে শেরপুর পৌরসভায় বর্তমান মেয়র ও বর্ষিয়ান নেতা আব্দুস সাত্তার হেরে যাওয়ার ঘটনাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারছে না দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
বগুড়ার শেরপুর পৌরসভা এমন একটি পৌরসভা যেটি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও জেলা বিএনপির আহবায়ক জিএম সিরাজের বাড়ি। মজিবর রহমান মজনু শেরপুর পৌরসভার বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যা । তেমনি জিএম সিরাজও তিনি শেরপুর থেকে তিনবার এমপি নির্বাচিত হন। এমন একটি পৌরসভায় দল বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী জানে আলম খোকার বিজয় বগুড়ার ২ বড় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের যোগ্যতা সম্পর্কে স্ব-স্ব দলের তৃণমুল কর্মীদের কাছে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন