শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ গৌরব ও সম্মানের

বাণিজ্যে নতুন সুবিধা পাবে বাংলাদেশ : এফবিসিসিআই সভাপতি এসএসজিপি’র কর্মশালায় অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ হবে বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের বিষয়। এটি হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলার সফল বাস্তবায়ন। একই সঙ্গে এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ যে অভ‚তপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে তারই স্বীকৃতি।

গতকাল বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ সংক্রান্ত ‘ইফেক্টিভ পার্টনারশীপ উইদ দি প্রাইভেট সেক্টর ফর সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন’ বিষয়ক এক অনলাইন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ‘সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রজেক্ট (এসএসজিপি) এর উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। কর্মশালায় অতিথি হিসেবে ছিলেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সংক্রান্ত জাতিয় টাস্ক ফোর্স-এর সভাপতি মিজ জুয়েনা আজিজ।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে পৃথিবীতে যখনই অর্থনৈতিক সঙ্কট এসছে, সব সঙ্কটের সময়ই বাংলাদেশ খুব দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা করতে পেরেছে। একইভাবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ পরবর্তী সময়ের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে স্বল্পোন্নত দেশ হতে খাপ খাইয়ে নেবার জন্য দেশের বেসরকারি খাতের গবেষণা ও উন্নয়নের সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

গ্রাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন, কমপিটিটিভনেস, প্রোডাকটিভিটি বাড়ানো, ভ্যালু চেইন আপগ্রেড করা, ব্যাকওয়ার্ড আই ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ বাড়ানো ইত্যাদির জন্য এখন থেকেই প্রাইভেট সেক্টরের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি। আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স, আইসিটি, ব্লক চেইন ইত্যাদি ব্যবহার করে আমাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। না হলে অন্যদেশের তুলনায় আমরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ব। এ বিষয়ে প্রাইভেট সেক্টরের দক্ষতা উন্নয়নে ‘সাপোর্ট টু সাসটেনাবল গ্রাজুয়েশন’ প্রকল্প থেকে কিভাবে প্রাইভেট সেক্টরকে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহায়তাসমূহ হ্রাস পাওয়া সাপেক্ষে বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রস্তুত হতে হবে। উত্তরণ পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুতির লক্ষ্যে বাংলাদেশকে এখন থেকেই বিভিন্ন দেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা শুরু করতে হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সুবিধা পাবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ার সাথে দেশে নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনন্য গর্বের প্রাপ্তি হচ্ছে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ। গ্রাজুয়েশনের জন্য দেশ হিসেবে আমাদের মর্যাদা বেড়েছে এবং বিশ্বের কাছে ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল হয়েছে যা বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এতে মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সুবিধা পাওয়া যাবে, দেশে বিনিয়োগে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের ফলে স্বল্পোন্নত দেশের জন্য প্রদত্ত ইন্টারন্যাশনাল সাপোর্ট ম্যাজারস যেমন-ডিউটি ফ্রি-কোটা ফ্রি মার্কেট এক্সেস, প্রিফারেনশিয়াল ট্রিটমেন্টস, ট্রিপস ইত্যাদি ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।

এফবিসিসিআই গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, প্রাইভেট সেক্টরের ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের জন্য এফবিসিসিআই ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার ও অন্যান্য আর্ন্তজাতিক স্ট্রাটেজিক পার্টনারদের টেকনিক্যাল সাপোর্ট নিয়ে ট্রেড সাপোর্ট ইন্সটিটিউশনের উপর গুরুত্বারোপ, এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস, প্রোডাক্ট অ্যান্ড মার্কেট ডাইভারসিফিকেশন, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার, ইকনোমিক ডাইভারসিফিকেশন, এক্সপোর্ট স্ট্রাটেজিক ডেভেলপমেন্ট, উইমেন ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট, আপগ্রেডিং ভ্যালু চেইন, প্রমোটিং ডিজিটাল ইকোনমি অ্যান্ড ই-কমার্স, রিজিউনাল ট্রেড, ট্রেইনিং অন কমার্সিয়াল ডিপ্লোমেসি, ট্রেড অ্যান্ড মার্কেট ইন্টিলিজেন্স, প্রমোটিং পাবলিক-প্রাইভেট ডায়ালগ অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডভোকেসি, আন্ডারস্টেন্ডিং ইমপেক্ট অফ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, ইমপ্লিমেন্টেশন অব দি ট্রেড ফেসিলিটেশন এগ্রিমেন্ট, সাপোর্টিং ইনোভেশন, স্টার্টআপস এন্ড ইকোসিস্টেম এবং সাসটেইনেবিলিটি এন্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথের উপর প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড নলেজ এর সাথে ইন্ডিজিনিয়াস ইনপুট সমন্বয় করে আমাদের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এবং সকল চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনকে এতে সম্পৃক্ত করা হবে।

শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এ অর্জনকে আরো তাৎপর্যপূর্ণ, মর্যাদাময় ও বর্ণিল করে তুলেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে একটি সুখী, সমৃদ্ধিশালী সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন সেটি আজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স এর চেয়ারপার্সন জুয়েনা আজিজ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বিশেষ অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বক্তব্য রাখেন।

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন, বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট এর চেয়ার ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মোঃ দুলাল মিয়া ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৩:৩৪ এএম says : 0
এই সব উন্নত মুননতে সব কি বিদেশীদের রেমিটেনস এর উপর ভিত্তি করে ।কিন্তু বিদেশিদের ছেলে সন্তান স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে লেখা পড়া করবে তাদের জন্য কোটা নাই তাদের ছেলে মেয়ে দশম শ্রেনীর বেশি লেখা পড়া করবে তাহা সম্ভব না একদিকে টাকার অভাব অন্য দিকে শহরের বাড়িতে কি করে বাসা বাড়িতে থাকবে এতে টাকা পাবে কোথায়। অন্য দিকে কোটা পদ্ধতি করে বিদেশীদের ভাগে কিচু নাই সারাটা জীবন অথবা 30/40 বিদেশ হায়রে কপাল কিন্তু সরকার কতে কিচু বাজেট করে এই কর্ম জীবিদের জন্য ঢাকা চিটাগাং কুমিল্লা মেইন মেইন সিটি গুলিতে যদি কিছু প্লট অথবা ফ্ল্যাট এর ব্যবস্থা করতে অসুবিধা কিসের কিস্তি করেও দিতে পারে যে তোমরা মাসে অথবা বসরে এতে টাকা দিবে তাইলেও চলে কিন্তু কোথায় কে কার জন্য সবাই এমনেই বলে বিদেশে যারা থাকিয়া কষ্ট করে টাকা আয় করে তাহারা সোনার ছেলে এটাই তাহাদের উপাধি। কিনু আর কেন বরাদ্দ নাই শুধু সোনার ছেলে ।সোনার ছেলেদের ঘরে যে ছেলে মেয়ে হইয়াছে তাদের কি অবস্থা তাহারা কি রুপা হবে না কি তামা হইতেছে তাঁর কেন খবর নাই।তবে সরকার ইচ্ছা করলে অনেক কিছু বরাদ্দ করতে পারে যেহেতু কয়েক শতকোটি টাকা বিদেশিদের কললান তহবিলে জমা আছে।কিন্তু না এই বেপারে মাথা গামায় না
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন