নতুন করে করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ সত্তে¡ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে বাঙ্গালীর এই প্রাণের মেলা। করোনার প্রকোপ বাড়ায় মেলায় দর্শনার্থীদের যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে বইমেলা নিয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়ারও চিন্তা আছে কর্তৃপক্ষের।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৩টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বইমেলার উদ্বোধন করবেন। এবারের অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর লেখা ‘আমার দেখা নয়া চীন’ বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ ‘নিউ চায়না ১৯৫২’-এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর মোড়ক উন্মোচন করবেন।
এবার বইমেলার মূল থিম ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। জাতির পিতার জীবন ও কর্ম-অধ্যয়ন এবং স্বাধীনতার মর্মবাণী জাতীয় জীবনে যাতে প্রতিফলিত হয় তার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মেলার বিন্যাসে আনা হয়েছে মৌলিক পরিবর্তন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকবে ৩টি প্রবেশ পথ। দীর্ঘদিনের দাবির বাস্তবায়ন হয়েছে রমনা প্রান্তে একটি প্রবেশপথ ও পার্কিং-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝড়ের আশংকা থাকায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সহোরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে; বৃষ্টির পানি মেলা প্রাঙ্গণ থেকে দ্রæত নিষ্কাষণের ব্যবস্থা থাকবে। নামাজের ঘর, টয়লেট ব্যবস্থা স¤প্রসারিত ও উন্নত করা হয়েছে। মহিলাদের জন্য স¤প্রসারিত নামাজ ঘর থাকবে।
নানা আয়োজনে বাংলা একাডেমির বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন: নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার এ উপলক্ষে সকাল ৭ টায় বাংলা একাডমির পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ কর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সকাল ১১ টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত হয় আলাচনা অনুষ্ঠান।
বাংলা একাডমির সভাপতি প্রফেসর শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদশ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করন অধ্যাপক রাশিদ আসকারী। আলাচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রফেসর ড. আবু মো. দেলায়ার হোসন এবং কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হল এই ভূখন্ডের মানুষ ‘বাংলাদশ’ নামটির সঙ্গ পরিচিত হত পারত না। বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে শুধু একটি স্বাধীন ভূখন্ড উপহার দেন নি বরং একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মাধ্যম গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপক্ষ সমাজ গঠনর আজীবন প্ররণা দিয়ে গেছেন। প্রাবন্ধিক প্রফেসর রাশিদ আসকারী বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজ জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতায় ধাপে ধাপে নিজেকে এবং তাঁর জাতিকে নির্মাণ করেছন। গণতান্ত্রিক চেতনা ছিল তাঁর ব্যক্তিত্বের মর্মমূল। রাজনতিক জীবনের শুরু থক শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু একই সঙ্গে সংগ্রামী ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিশ্বাসী ছিলন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষমতার কেন্দ্রে সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে চেয়েছেন। বাংলাদশের মানুষের পরিপূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী মহৎ লক্ষ্যে ধাবিত হওয়া ছিল তাঁর রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রনৈতিক অভিযাত্রা।
সভাপতির বক্তব্য প্রফেসর শামসুজ্জামান খান বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন মানে বাংলাদেশের জন্মকথাকে স্মরণ। কারণ হাজার বছররের ইতিহাসে তিনিই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ভাষাভিত্তিক অসা¤প্রদায়িক বাংলাদশ জাতিরাষ্ট্র উপহার দিতে সক্ষম হয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন