বিদায়ের ঘন্টা বাজতে চলেছে বইমেলায়। দীর্ঘ একমাস ব্যাপী মেলার পর্দা নামছে আজ। বাঙালির এই প্রাণের মেলার জন্য বইপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হবে আরো এক বছর। তবে এই অপেক্ষা শুধু বেদনার নয়; এই অপেক্ষা সুখেরও। দীর্ঘ একবছর পর্যন্ত মেলার জন্য অপেক্ষা এসব বইপ্রেমীদের হৃদয়কে আটকে রাখবে বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম আধার এই প্রাণের মেলায়। এ এক সুখের অনুভূতিও বটে। এই অপেক্ষা গল্প হয়ে পাঠকের হৃদয়ে জাগাবে সুখের অনুভূতি। এ গল্প বন্ধুদের সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকপাড়ের চিরচেনা সেই আড্ডা আর বই কেনার মুহুর্মুহু প্রতিযোগিতার গল্প।
গতকাল সাপ্তাহিক কর্মদিবস হলেও এদিন মেলায় ছিল বইপ্রমেীদের উপচেপড়া ভিড়। তবে তাদের চোখে মুখে ছিল বেদনার ছাপ। এ বেদনা হারানোর। এ বেদনা অপেক্ষার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম রবিন বলেন, একজন বইপ্রেমী হিসেবে আমি সারাবছর এই মেলার জন্যে অপেক্ষা করি। যে কটা দিন বইমেলা চলে, সেই কটা দিন যেন প্রাণের মধ্যে আনন্দের দোলা লাগে। আশা করছি আগামী বছর আবারও নতুন আঙ্গিকে সফল একটি আয়োজনের মাধ্যমে এই প্রাণের মেলাকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলা হবে।
রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী প্রথমবারের মতো মেলায় এসেছেন। কিনেছেন হুমায়ূন আহমেদের লিখা রোমান্টিক উপন্যাস ‘রূপা’ ও জুয়েল আহসান কামরুলের লিখা ‘কিমোনা কন্যা’ বইটি। মেলা শেষের অনুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটা আসলে কোনো সুখকর বিষয় না যে, আমাদের প্রাণের মেলা শেষ হতে চললো। এটার জন্য আমাদের আরো এক বছর অপেক্ষা করতে হবে। বিষয়টি ভেবে আসলে খুব খারাপ লাগছে।
রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে মেলায় এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, মেলায় আসার খুব একটা সময় হয়না। তবে সমসময় মনটা পড়ে থকে মেলায়। সমসময় ভাবি মেলায় আসব কিন্তু নানা কর্মব্যস্ততায় আর আসা হয়না। মেলা শেষ হচ্ছে জেনে খুব খারাপ লাগছে। আরো আগে মেলায় আসতে পারলে পছন্দের বইগুলো কিনতে পারতাম। কিন্তু এখন পছন্দের বই পেলাম না।
বইমেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ আজ মেলা শেষ হওয়ার বিষয়টা ইনকিলাবকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ১৭ মার্চ এবারের মেলার সমাপ্তি টানা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন