শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে টিসিবি’র কার্যক্রম কিছুটা যেরদার হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে

নিন্ম ও নিন্ম-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সংসারে দূর্ভোগ

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২১, ২:০৮ পিএম

রমজানকে সামনে রেখে এবার শবেবরাতের আগে থেকেই নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য সংস্থা-টিসিবি দক্ষিণাঞ্চলে পণ্য বিক্রী কার্যক্রম কিছুটা যোরদার করছে। গত কয়েক মাস ধরে চাল,ডাল,চিনি ভোজ্যতেল আর রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে দক্ষিণাঞ্চলের নিন্ম ও নিন্ম-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে দূর্ভোগের সাথে সংসারে অচলবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। টিসিবি বরিশাল মহানগরীতে ৫টি পয়েন্টে সিমিতাকারে মুসুর ডাল, চিনি আর ভোজ্যতেল বিক্রী করছে। তবে সংস্থাটি ইতোমধ্যে সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১০ টাকা দাম বাড়িয়ে ৯০ টাকা করেছে। চিনির কেজিও ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরপরেও প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত টিসিবি’র পণ্যবাহী মিনি ট্রাকের পেছনে নারী-পুরুষের লম্বা লাইন সাধারন মানুষর সংসারের বাস্তবতার জানান দিচ্ছে।

বরিশাল মহানগরীর বাইরে অন্য ৫টি জেলা সদরে ২টি করে মিনি ট্রাকে টিসিবি’র পণ্য বিক্রী হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি জেলার ২টি করে উপজেলা সদরেও টিসিবি সিমিতাকারে তার পণ্য বিক্রী করছে বলে জানা গেছে। বাজারে পেয়াঁজের মূল্য বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে টিসিবি পুনরায় এ পণ্যটি বিক্রী শুরু করবে আগামী সপ্তাহে। ছোলা বুট বিক্রীও শুরু হচ্ছে শিঘ্রই। তবে এসব পণ্যের দাম এখনো ঘোষণা করা হয়নি। তবে নিত্যপণ্য মূল্যের উর্ধগতি রোধে রাষ্ট্রীয় এ বাণিজ্য সংস্থাটির কার্যক্রম প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্প্রসারনের দাবী করেছেন সাধারন মানুষ।
গত প্রায় ৪ মাস ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে চালের দর উর্ধমুখি প্রবনতার মধ্যেই ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনির মূল্য বৃদ্ধিতে অনেক পরিবারেই চলছে যথেষ্ঠ টানাপোড়েন। এরসাথে রান্নার গ্যাসের দাম প্রায় ২৫ ভাগ বেড়ে এখন হাজার ৫০ টাকায় বিক্রী হওয়ায় দূর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়েছে। সামনের রমজানে কিভাবে সংসার চলবে তা নিয়ে নি¤œ ও নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চরম উৎকন্ঠায়।
গত একমাসে দক্ষিণাঞ্চলের পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে প্রকারভেদে ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। আগের ৩ মাসেও কেজি প্রতি ৫ টাকা দাম বেড়েছে চালের। এখন নি¤œ-মধ্য মানের ‘বিআর-২৮’ বা ‘আঠাশ বালাম’ চাল বিক্রী হচ্ছে ৪৬-৪৮ টাকা কেজি। আর মধ্যম মানের মিনিকেট চালের কেজি ৬৫ টাকায় উঠেছে। বিগত আমনের ভরা মৌসুমেও চালের বাজার নিয়ন্ত্রনে ছিলনা। বোরো ধান কৃষকের ঘরে ওঠা অত্যাসন্ন হলেও চালের বাজার কতটা নি¤œমুখি হবে, তা বলতে পারছে না খাদ্য বিভাগ।
দক্ষিণাঞ্চলে ভাল মানের সয়াবিন তেলের লিটার এখন ১৩৫-১৪০ টাকা লিটার। চিনির কেজি সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছে খুচরা পর্যায়ে ৭২Ñ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রী হচ্ছে। মুগ ডালের কেজি ১৩৫-১৪০টাকা। মুসুর ডাল ১শ থেকে ১১৫ টাকা কেজি। আমদানীকৃত পেয়াঁজের দামও ইতোমধ্যে ৪০ টাকায় পৌছেছে। দেশী পেয়াঁজ আবার ৪৫ টাকার ওপরে। রসুন ও আদার দাম আগের অবস্থানেই ভোক্তাদের ক্রয়সীমার মধ্যে রয়েছে।
অপরদিকে গত দুমাসে এলপি গ্যাসের দাম সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডার প্রতি আড়াইশ থেকে ৩শ টাকা বেড়ে এখন হাজার ৫০ টাকায়ও বিক্রী হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় বানিজ্য সংস্থা-টিসিবি আমদানীকৃত পেয়াঁজের বোঝা নিয়ে ইতোপূর্বে বিপাকে থাকলেও এতদিন তাদের ভান্ডার চিনি, ডাল ও সয়াবিন তেল শূণ্য হয়ে পড়ায় বিক্রী প্রায় বন্ধ ছিল। তবে গত সপ্তাহ থেকে বরিশাল মহানগরীতে ৫টি ও অন্য জেলা সদরে দুটি করে ট্রাকে ভোজ্য তেল, চিনি ও মুসুর ডাল বিক্রী শুরু করে।
টিসিবি’র দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, রমজানের আগেই তারা পেয়াঁজের পাশাপাশি বাজারে সয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল ও ছোলাবুট বিক্রী কার্যক্রম যোরদার করতে যাচ্ছেন। এতেকরে এসব নিত্যপণ্যের দাম রমজনে নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলে কতৃপক্ষ আশা প্রকাশ সরকারী এ সিমিত উদ্যোগে তা কতটা সম্ভব হবে সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে ওয়াকিবাহাল মহলে। ঠিক কবে নাগাদ সরকার টিসিবি’র মাধ্যমে পণ্য বিক্রী কার্যক্রম আরো গনমুখি করবে, তা বলতে পারেন নি কতৃপক্ষ।
এদিকে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির রেশ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বাজারে সব ধরনের মুরগী ছাড়াও গরু ও খাশীর গোসতের দামও বেড়েছে। রমজানে তা অরো এক ধাপ বৃদ্ধির আশংকা প্রকাশ করেছেন বাজার পর্যবেক্ষকগন। মাছের দামও বাড়েছে । মেঘনা ও তার কয়েকটি শাখা নদÑনদীতে দু মাসের জন্য সব ধরনের মৎস্য আহরনে নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে মাছের সরবারহও কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। ফলে দামও বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন