শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মোদির আগমনে থাকবে না সঙ্ঘাতমূলক কর্মসূচি

শাল্লার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর হেফাজত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

নরেন্দ্র মোদির আগমনে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। মোদির আগমনে রাজপথে আমাদের কোনো সঙ্ঘাতমূলক কর্মসূচি থাকবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা যে কোনো কর্মসূচি বিবেচনায় নেব। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উৎযাপন উপলক্ষে এমন কাউকে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসা উচিত নয়, যাকে এদেশের মানুষ চায় না, বা যার আগমন এদেশের মানুষকে আহত করবে। মোদির আগমন বাতিল করতে হবে। নরেন্দ্র মোদির আগমন দেশের জনগণ চায় না।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদ এবং সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও মিডিয়ায় প্রচারিত অসত্য সংবাদের ব্যাপারে গতকাল সোমবার সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলাম সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা মো. নূরুল ইসলাম জিহাদী ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা জোবায়ের আহমেদ, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মুনির হোসেন কাসেমী, মুফতি মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা শরিফুল ইসলাম ও মাওলানা আজহারুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন মুসলিমবিদ্বেষী হিসেবে পরিচিত। তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তার প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে গুজরাটে মুসলমানদের ওপর পরিচালিত ভয়াবহ হত্যাকান্ডের ইতিহাস ভুলে যাওয়ার মতো নয়। মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ঐহিতাসিক বাবরী মসজিদ ধ্বংস এবং সেখানে অন্যায়ভাবে মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। এ ছাড়াও কাশ্মীরে নৃশংস মুসলিম নির্যাতন, নাগরিকত্ব আইনসহ প্রতিটি মুসলিম বিরোধী সিদ্ধান্তের মূল হোতা এ নরেন্দ্র মোদি।

বছর খানেক আগে তার অনুসারীদের হাতে দিল্লীতে রক্তের বন্যা বয়ে গেছে। গঙ্গার পানিচুক্তি যে প্রত্যাশার পরিবেশ তৈরি করেছিল, তার বাস্তবায়ন হয়নি। তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি পেছাতে পেছাতে এখন তালিকা থেকেই বাদ পড়ে গেছে। ভারতের নাগরিকত্ব আইনে বাংলাদেশকে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সীমান্তে প্রতিনিয়ত নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যা করে যাচ্ছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

এতে আরো বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের এক শিয়া নেতা মহাগ্রন্থ আল কুরআনের ২৬টি আয়াত বাতিল চেয়ে কোর্টে রিট করেছে। এ রিটের মাধ্যমে গোটা পৃথিবীর মুসলমানদের কলিজায় আঘাত করা হয়েছে। সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ আল কুরআনের কোন আয়াত থাকবে আর কোন আয়াত থাকবে না এটা কি মোদি সরকার আর তাদের আদালত ঠিক করে দেবে? এমন স্পর্ধা আর ধৃষ্টতা কোনো মুসলমানের পক্ষে মেনে নেয়া সম্ভব নয়।

ভারতের এহেন কর্মকান্ডে মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের মানুষ চরম বিক্ষুব্ধ। সে কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর এ গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে নরেন্দ্র মোদির মত একজন মুসলিমবিদ্বেষী ব্যক্তি আসুক এটা আমরা চাই না। আমরা বাংলাদেশ সরকারের নিকট দেশের অধিকাংশ মানুষের সেন্টিমেন্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ বাতিলের আহবান জানাই। অন্যথায় পরিস্থিতির অবনতি হলে তার দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করব। রাজপথে আমাদের কোনো সঙ্ঘাতমূলক কর্মসূচি থাকবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা যে কোনো কর্মসূচি বিবেচনায় নেব।’ তিনি বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো। এ মুহূর্তে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা না করলেও পরিস্থিতির আলোকে হেফাজতে ইসলাম কেন্দ্রীয় কমিটির পরামর্শক্রমে যে কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গত ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের সংখ্যালঘুদের ওপর জঘন্য আক্রমণ হয়েছে। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বসতভিটা। আমরা তাৎক্ষণিক এর নিন্দা জানিয়েছি এবং আজকের এ সংবাদ সম্মেলনে পুনরায় নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এ ঘটনার যাচাই-বাছাই ছাড়াই একশ্রেণির মিডিয়া তাৎক্ষণিক প্রচার শুরু করে দেয় যে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জনৈক ঝুমন দাসের ফেসবুকে কট‚ক্তির প্রতিবাদে এ হামলা হয়েছে। এভাবে কোনো ধরনের নিরপেক্ষ বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়াই এই ঘটনার দায় হেফাজতে ইসলামের উপরে চাপানোর চেষ্টা করা হয়। নেতৃবৃন্দ শাল্লার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Md Omar Faruk ২৩ মার্চ, ২০২১, ৭:১৬ এএম says : 0
একজন ইসলাম বিদ্বেষ নেতার প্রয়োজন নেই বাংলাদেশের ।
Total Reply(0)
Rupan Das ২৩ মার্চ, ২০২১, ৭:১৭ এএম says : 0
আমিও চাই না কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি বাংলাদেশে আসুক,
Total Reply(0)
Sagar Chandra ২৩ মার্চ, ২০২১, ৭:১৭ এএম says : 0
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে কাজ হবে না।
Total Reply(0)
অসমাপ্ত গল্প ২৩ মার্চ, ২০২১, ৭:১৯ এএম says : 0
গরুর মুত খাওয়া পাগলের আর কত লজ্জা থাকবে
Total Reply(0)
সায়েম চৌধুরী বিপ্লব ২৩ মার্চ, ২০২১, ৭:১৯ এএম says : 1
মোদির চেয়ে বাংলাদেশের সরকারের লজ্জা সরম নাই
Total Reply(1)
মাজহারুল কাদের ২৪ মার্চ, ২০২১, ১:৩৫ পিএম says : 0
সরকারের এই মুহুর্তের করনীয় সঠিক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষনতার পরিচয় দিয়েছেন। এটাই জনগনের স্বার্থেই চিন্তা করেই তিনি করেছেন। এটা নিয়ে আর বেশী কথা না বলাই ভাল - ধন্যবাদ!!
মাজহারুল কাদের ২৩ মার্চ, ২০২১, ১২:২৮ পিএম says : 1
ব্যক্তিস্বার্থে বা গোষ্টী স্বার্থে নীতিহীন হয়ে যাওয়া সাধারন মানুষের জন্য অতি সাধারন ব্যপার। এদেশের জন্ম থেকেই তা বিশেষভাবে লক্ষনীয়। মৌলানা ভাসানী-বংগবন্ধু-জিয়া কেউ আজ বেছে নেই - তাই যা হবার তাই হছে এবং হতেই থাকবে। আল্লাহ আমাদের ঈমান আকিদাকে হেফাজত করুন।
Total Reply(0)
মাজহারুল কাদের ২৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০৫ পিএম says : 0
আমার মনে হয় মানণীয় প্রধানমন্ত্রী সটিক পথেই আছেন। কারন মোদী চাইলে আমাদের অনেক কিছুতেই ঠেকিয়ে রাখতে পারবেন। এর মধ্যে করোনা টিকা অন্যতম।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন