রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের ভাবনা স্মরণ করার দিন : নরেন্দ্র মোদি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করছে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদি বলেন, আমাদের ভারতীয়দের জন্য এটি গর্বের বিষয় যে, আমরা শেখ মুজিবুরজীকে গান্ধি শান্তি পুরস্কারে সম্মানিত করার সুযোগ পেয়েছি। মোদি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্ণ হচ্ছে এবং সকল ভারতীয়দের পক্ষ থেকে আমি আপনাদের সকলকে এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারের ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার শেষ দিনে গতকাল জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে মোদি বলেন, এই মুজিববর্ষবঙ্গবন্ধুর আদর্শকে স্মরণ করার দিন। মুক্তিযুদ্ধের যে ভাবনা ছিল এখন সেটিকে আবারও মনে করার সময়।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, শিক্ষাবিদ রফিকউদ্দিন আহমেদ, ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার এবং শফিউরকে স্মরণ করে মোদি বলেন, বাংলাদেশের ভাই-বোনদের পাশে থাকা ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসী সৈন্যরা মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছিলেন, আত্মত্যাগ করেছিলেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে খুব বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ, জেনারেল অরোরা, জেনারেল জ্যাকব, ল্যান্স নায়েক অ্যালবার্ট এক্কা, গ্রæপ ক্যাপ্টেন চন্দন সিং, ক্যাপ্টেন মোহন নারায়ণ রাও সামন্তসহ এমন অনেক বীর রয়েছেন, যাদের নেতৃত্ব ও সাহসের কাহিনী আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেওয়া নিজের জীবনের প্রথম আন্দোলনগুলোর মধ্যে একটি ছিল জানিয়ে মোদি বলেন, আমার বয়স তখন ২০-২২ বছর ছিল, যখন আমি ও আমার অনেক সহকর্মী বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ করেছিলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থন করায় আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম এবং কারাগারেও গিয়েছিলাম। অর্থাৎ বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যতটা আকুলতা এখানে ছিল, ততটা আকুলতা সেখানেও ছিল।
তিনি বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত জঘন্য অপরাধ ও নৃশংসতার চিত্রগুলো আমাদের বিচলিত করতো এবং রাতের পর রাত বিনিদ্র করে রাখতো। অপারেশন সার্চলাইটের নিষ্ঠুরতা, নিপীড়ন ও অত্যাচারের বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের যতটা সোচ্চার হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি।


বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি ভারতের প্রতিটি কোণা থেকে, প্রতিটি দল থেকে সমর্থন দিয়েছিল জানিয়ে মোদি বলেন, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীজীর প্রয়াস ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ভূমিকা সর্বজনবিদিত।
তিনি বলেন, ওই সময়েই ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ অটল বিহারী বাজপেয়ীজী বলেছিলেন, আমরা কেবল মুক্তি সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারীদের সঙ্গে লড়াই করছি, সেই সঙ্গে আমরা ইতিহাসকে একটি নতুন দিশা দেওয়ার প্রচেষ্টাও করছি। আজ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামীদের সঙ্গে ভারতীয় সেনারাও নিজেদের রক্ত বিসর্জন দিচ্ছেন। এই রক্ত একটি নতুন বন্ধন সৃষ্টি করবে, যা কোনও অবস্থাতেই ভাঙবে না, কোনও ক‚টনীতিরও শিকার হবে না।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুই দেশের লাখ লাখ মানুষের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য দুই দেশের লক্ষ্য এক এবং প্রচেষ্টাও এক হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমাদের উভয় দেশেরই জন্য একবিংশ শতাব্দীর আগামী ২৫ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ঐতিহ্যের অংশীদার, আমরা উন্নয়নেরও অংশীদার। আমরা লক্ষ্যও ভাগাভাগি করি, চ্যালেঞ্জগুলোও ভাগাভাগি করি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বাণিজ্য ও শিল্পে যেখানে আমাদের জন্য একই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনই সন্ত্রাসবাদের মতো সমান বিপদও রয়েছে। এই জাতীয় অমানবিক ঘটনাবলীর পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবে রূপদানকারী শক্তিগুলো এখনও সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি জানান।

মোদি বলেন, আমাদের অবশ্যই তাদের থেকে সাবধানে থাকতে হবে এবং ওদের মোকাবিলা করার জন্য সংগঠিতও হতে হবে। আমাদের উভয় দেশেই গণতন্ত্রের শক্তি রয়েছে, এগিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট দূরদর্শিতা রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ অগ্রযাত্রা এই পুরো অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য সমান জরুরি। তিনি বলেন, আমি আনন্দিত যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। যারা বাংলাদেশ গঠনে আপত্তি করছেলিনে, যারা এখানকার মানুষকে নিচু চোখে দেখতেন, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, বাংলাদেশ তাদের ভুল প্রমাণ করছে।

এর আগে গতকাল সকালে বাংলাদেশে আসেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। বিমান বন্দরে নরেন্দ্র মোদিকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এরপর মোদি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে একটি অর্জুন গাছের চারা রোপন করেন।
নরেন্দ্র মোদি সেখানে রক্ষিত পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। পরিদর্শন বইতে তিনি লিখেছেন, ‘যাদের আত্মত্যাগে মহান জাতির জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের সেই দেশপ্রেমিক বীর শহীদদের প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Dr. Suranjit Saha ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:০৭ এএম says : 4
Let the India-Bangladesh friendship strengthen evermore. May God bless this friendship.
Total Reply(0)
Chitto Rangon ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৪১ এএম says : 4
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
মোদি যে এত বড় মিথ্যা্বাদী আগে জানতাম না।
Total Reply(0)
তপন ২৭ মার্চ, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
একজন বিশ্বের লজ্জাহীন সরকার প্রধান। মানুষ জুতা দেখানোর পরও যে সফরে আসলো।
Total Reply(0)
Gautam Debnath ২৭ মার্চ, ২০২১, ৫:০৬ এএম says : 0
Modi is very good PM in India ,whole world respect and love Modi , USA president Joe Biden already call Modi three times to make friendship with India more better than before
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন