ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন বিরোধী আন্দোলনে ১৭ জনকে শহীদ এবং ৫ শতাধিক ব্যক্তিকে আহত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে ২ শতাধিক ব্যক্তিকে। অনতিবিলম্বে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আজ রোববার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ খেলাফত মজলিস কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরী আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। প্রেস ব্রিফিংয়ে মোদি বিরোধী আন্দোলনে সারাদেশে ১৭ জন শহীদ হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে আগামীকাল সোমবার সারাদেশে দোয়া এবং আগামী ২ এপ্রিল সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে মোদি বিরোধী আন্দোলনের পুলিশ ও সরকারের পেটোয়া বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা তুলে ধরেন হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর আমির মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা মুসা বিন ইযহার, প্রিন্সিপাল আবু তাহের খান, মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, কবি মুহিব খান, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, তফাজ্জল হক মিয়াজী, গাজী ইয়াকুব , আজিজুল হক হেলাল ও ইসলামী ঐক্যজোটের ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা ইলিয়াস আতহারী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে মাওলানা মামুনুল হক গত ২৭ ও ২৮ মার্চ দু’দিন মোদি বিরোধী বিক্ষোভ ও শান্তিপূর্ণ হরতালে সরকারের মারমুখী ভূমিকায় দেশবাসী চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, বি-বাড়িয়ায় ওবায়দুল মুক্তাদির এম পি’র নেতৃত্বে পেটোয়া বাহিনী বৃহৎ মাদরাসার দিকে অগ্রসর হয়। এসময়ে গ্রামবাসী ও বিক্ষুদ্ধ জনতার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তিনি বলেন, দু’দিনে বি-বাড়িয়ায় পুলিশের গুলিতে ১২জন, হাটহাজারিতে ৪ জন এবং ঢাকার সাইনবোর্ডে ১জন সহ মোট ১৭ জন হেফাজত কর্মীকে শহীদ করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের নিমতলীতে গতকাল বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুরকে গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাবরি মসজিদ ধ্বংসকারী, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যাকারী এবং মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত যার হাত সেই মোদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনায় জনগণ ভালো চোখে দেখেনি। তিনি সারাদেশে স্বত্ব:স্ফ’র্তভাবে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন করায় দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা সরকার বা কোনো দলের বিরোধী নই। আমাদের ঈমানী আন্দোলনের ১৭ জনকে শহীদ করা হয়েছে, ৫ শতাধিককে আহত এবং ২ শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হতাহতের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। শহীদ ও আহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ , গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তি এবং বাড়ী ঘরে হামলা মামলা বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি আগামীকাল সারাদেশে দোয়া এবং ২ এপ্রিল সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন