কঠোর লকডাউনেও চট্টগ্রামে থেমে নেই চাঁদাবাজি। গতকাল সোমবার নগরীর আগ্রাবাদ বিদ্যুৎ ভবনে দুই লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ঠিকাদারের মাথা ফাটিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছে যুবলীগের ছয় কর্মী। এর আগে রোববার রাতে নগরীর মুরাদপুর থেকে আরও দুই চাঁদাবাজকে পাকড়াও করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। তারা ঠিকাদারের দুই কর্মীকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি করছিল।
পুলিশ জানায়, পিডিবির ঠিকাদারের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে তাকে একটি কক্ষে জিম্মি করে মারধর করে একদল যুবলীগ কর্মী। ওই ঠিকাদারের ফোন পেয়ে সেখান থেকে ছয়জনকে পাকড়াও করা হয়। তারা হলেন- শাহানুর শাহিন (৫৩), মো. ইকবাল (৪৭), নুরুল কবির (৪৫), মো. তৌহিদুল আলম (৪০), মো. ওসমান গনি দুলু (৪৫), ও মো. নুরুল আফছার টিপু (৪৫)। নির্যাতনের শিকার মো. বশির উদ্দিন পিডিবি’র একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এবং মেসার্স সালেহ এন্টারপ্রাইজের মালিক।
বশির উদ্দিন অভিযোগ করেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে মোগলটুলী এলাকার যুবলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপুর কর্মী পরিচয়ে তার কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। গত জুন থেকে পিডিবির যত প্রকল্পের কাজ তিনি করেছেন, সবগুলো থেকে দুই শতাংশ হারে চাঁদা দেয়ার জন্য তাকে চাপ দেয়া হয়। সর্বশেষ তিনি কর্ণফুলী ইপিজেডে বিদ্যুতের ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ করছিলেন। চাঁদা না দিলে সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
বশির উদ্দিন বলেন, তারা কয়েকদিন থেকে টেলিফোনে চাঁদা দাবি করে আসছিল। দুইদিন আগে শাহীন ও টিপু ফোন করে বলে যে, টাকা না দিলে কর্ণফুলী ইপিজেডের কাজ করতে দেবে না। চাঁদা না দিলে আমার বাসায় গিয়ে হামলা এবং আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। তারা আমাকে পিডিবি অফিসে টেনেহিঁচড়ে ছয়তলা ভবনে পিয়নদের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে দরজা বন্ধ করে প্রথমে আমার মাথায় আঘাত করে। আমার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলে।
ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ঠিকাদার অভিযোগ করেছেন তারা তার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। পিডিবি ভবন থেকে তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। ওসি জানান, তারা নিজেদের যুবলীগ নেতাকর্মী দাবি করলেও স্থানীয় কিংবা মহানগর কোথাও তাদের কোন পদ-পদবি নেই। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
রোববার রাতে নগরীর মুরাদপুর, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সামনে থেকে সোলায়মান বাদশা ও মো. ওমর ফারুক নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, সোলায়মান বাদশা ওরফে টোকাই সোলায়মান আলফালাহ গলির আবু তাহেরের ছেলে। তার সহযোগী ওমর ফারুক চান্দগাঁওয়ের খাজা রোডের মো. সিরাজুল হকের ছেলে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, মুরাদপুর এলাকায় চলমান সিডিএ’র পানিবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে কর্মরত দুই শ্রমিককে অপহরণ করে তারা। এরপর একটি বাড়িতে আটকে রেখে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ মামলায় তাদের দুইজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন