চট্টগ্রাম বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে আপাতত ৫ লাখ টাকা করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে ৩ কোটি টাকা করে এবং আহত শ্রমিকদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে।

কয়েকটি সংস্থার দায়েরকৃত রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এই মর্মেও রুল জারি করা হয়েছে। ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ৪৫ দিনের মধ্যে দাখিল করতেও বলা হয় আদেশে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড.আই.খান পান্না, অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল আইন ও সালিশ কেন্দ্র বাঁশখালী উপজেলায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে ৫ শ্রমিক হত্যার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করে। রিটে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ৩ কোটি টাকা ও আহতদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। এছাড়া ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে ২৭ এপ্রিল একই ঘটনায় আরও ৫টি সংগঠন হাইকোর্টে রিট করে। সংগঠনগুলো হচ্ছেÑ বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (বøাস্ট), নিজেরা করি, সেফটি অ্যান্ড রাইটস ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি)।

সংগঠনগুলো পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় যতক্ষণ পর্যন্ত তদন্ত শেষ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা চায়। পাশাপাশি বাঁশখালীতে শ্রমিকদের সার্বিক অবস্থা জানতে শ্রম অধিদফতরের কাছে একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়। এছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ডিসি ও এসপির নেতৃত্বে গঠিত দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। দুই রিটের এক সঙ্গে শুনানি হয়।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ এপ্রিল চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পুলিশ ৫ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে। আহত হন অন্তত ২০ জন শ্রমিক। নিহত শ্রমিকরা হলেন- শুভ, মো. রাহাত, আহমদ রেজা, রনি হোসেন ও রায়হান। বেতনভাতা নিয়ে অসন্তোষ থেকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর শ্রমিকদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়।