সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু ছিলেন সত্যিকার একজন দেশপ্রেমিক, সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং পরমতসহিস্ঞু একজন মানুষ।দম্ভ ও আমিত্বমুক্ত, নির্লোভ এমন ব্যতিক্রমধর্মী রাজনীতিবিদ আজকাল খুবই বিরল বলে তার স্মরণসভায় উল্লেখ করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর এবং সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও প্রবীণ অধ্যাপক ড. এএসএম আতীকুর রহমান।
ভার্চুয়াল স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হাফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং লাইলাক গ্রুপ ও ঢাকা ট্রাফিক চ্যানেলের চেয়ারপারসন সেলিনা চৌধুরী।স্মরণসভাটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী ও ইনকিলাব সাংবাদিক মোহাম্মদ আবদুল অদুদ।
অধ্যাপক ড. আতীক বলেন, তিনি ছিলেন অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, অনেক জ্ঞানী, বড় মনের অধিকারী ও বঙ্গবন্ধুর বেশকিছু গুনাবলীসমৃদ্ধ দেশের অন্যতম আইনপ্রণেতা।অংশীজনদের নিয়ে বসে আলোচনা করে আইন প্রণয়ন ও নারীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে সুপ্রিমকোর্টে প্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ দেন তিনি। ২০০৪ সালে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় অবস্থিত ‘আবদুল মতিন খসরু মহিলা কলেজে’ যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, এলাকার মানুষ তাকে মন থেকে অসম্ভব ভালোবাসতেন।রিইউনিয়নের স্মৃতিচারণ করে ড. আতীক বলেন, তিনি ছিলেন প্রচন্ড আড্ডাবাজ, সকলের মতকে অ্যাকোমোডেটেড করতে পারা একজন সফল পরিবার প্রধান।
অধ্যাপক ড. হাফিজ বলেন, অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ছিলেন।স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ সৃষ্টিতে তার ভূমিকা ও অবদান ছিল অতুলনীয়।তবুও তিনি ছিলেন একজন নিরহঙ্কারী, বিনয়ী ও সমাজকল্যাণের আলোকিত ছাত্র এবং প্রবীণকল্যাণে নিবেদিত একজন মানুষ।তিনি বলেন, ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনি দেশে আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।সুতরাং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অনন্য উপায় হলো, তার সেই গুণগুলো ধারণ করা।
সেলিনা চৌধুরী বলেন, তিনি ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশকে বিচার পাওয়ার সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনেন। তিনি আইন অঙ্গন ও রাজনীতির মধ্যে একটি সঠিক সমন্বয় সাধন করেছেন। তিনি বলেন, এলাকার মানুষ আসলে তিনি তাদের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে খুবই উদ্যোগী থাকতেন বলে আমি শুনেছি। তার মতো এমন বড় হৃদয়বান মানুষকে হারিয়ে আমরা শোকাহত বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শেষে তার স্মরণে একটি সংকলন বের করা এবং যেহেতু তিনি করোনায় মারা গিয়েছেন, সেহেতু করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য কিছু করার প্রস্তাব তুলে ধরেন বক্তারা। অনুষ্ঠান শেষে অ্যাডভোকেট অবদুল মতিন খসরু, সাবেক এমপি অধ্যাপক মো. ইউনূস, ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবদুল মোমেন ও অধ্যাপক ড. আবু তাহের, অধ্যাপক ড. এএসএম আতীকুর রহমানের পিতা, সেলিনা চৌধুরীর মাতা ও ভাষাসৈনিক আবদুর রাজ্জাক মাস্টারসহ প্রয়াতদের জন্য দোয়া করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন