ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার পৌর শহর ও ১১ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ৪/৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
এদিকে বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর পানি বৃদ্ধিতে জোয়ারের স্রোতে নদ তীরবর্তী বিভিন্ন ইউনিয়নের রক্ষা বেড়িবাঁধ উপচে অর্ধশত তরিয়ে গেছে। বিশেষ করে বলেশ্বর নদে জেগে উঠা মাঝের চরের সাড়ে চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জোয়ারের চাপে সম্পূর্ণ ভেসে গেছে। এছাড়াও বলেশ্বরের ক্ষেতাচিড়া, কচুবাড়িয়া, জলাঘাট, সাংরাইল, বড়মাছুয়া, খেজুরবাড়িয়া, ভোলমারা, তুষখালী, ছোট মাছুয়া, কাটাখালী, তুলাতলা, জানখালী, বেতমোর ও উলুবাড়িয়াসহ বিষখালীর জোয়ারের স্রোতে মিরুখালী বাজার ও টিকিকাটার ভেচকি, কুমিরমারা, সুয্যমনি, বাইশকুড়া বাধের অনেক অংশ বিলীন হয়ে গেছে। মঠবাড়িয়া পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর ও আজহার কলোনী এলাকার খাল থেকে জোয়ারের পানি ঢুকে ব্যাপক এলাকা পানিতে তরিয়ে যায়। ফলে সহস্রাধিক পানিবন্দী পৌরবাসির রান্নাবান্না বন্ধ হয়েে গেছে।
বলেশ্বরে নদ মধ্যবর্তী মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মাঝের চর এলাকার জেলে পল্লীর তিন শতাধিক পরিবার এখনও আশ্রয় কেন্দ্র অবস্থান করছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারী পরিবারগুলোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাল ডালসহ খাদ্য উপকরণ ও গ্যাসের চুলা পৌঁছে দেয়া হয়। অপরদিকে খেতাচিড়া বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবার বসত ঘর ডুবে যাওয়ায় নিকটবর্তী বেড়িবাঁধে আশ্রয় নেয়া দেড় সহস্রাধিক মানুষের মাঝে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বুধবার দুপুরে খাবার বিতরণ করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পিরোজপুর এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বালি বলেন, বড় মাছুয়া বেড়ি বাধে ঝুঁকি পূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া খেতাছিড়া কচুবাড়িয়া বাধে জোয়ারের তোরে কিছু জিও ব্যাগ ডিসপ্লেস হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে পর্যায়ক্রমে ছুটে যাওয়া বাধে সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঊর্মী ভৌমিক জানান, প্রতিটা ঘূর্ণিঝড়ে এখানকার বলেশ্বর তীরের বসতির মানুষজন ভীষণ ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। বিশেষ করে, বলেশ্বর নদীর খেতাছিড়া মোহনা বাধ, বড়মাছুয়া মোহনা বাধ ও বলেশ্বর নদীর মাঝের চরের জেলে বসতির মানুষ জলমগ্ন হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বলেশ্বর নদীর বাধ ও মাঝেরচরের বেড়িবাঁধ অন্তত আরও ৬/৭ ফুট উঁচু করান জরুরী। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে একটি প্রস্তাবনা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন