এবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন পাঁচ বছর আগে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার কয়েকদিন পর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ প্রধান সন্দেহভাজন কামরুল ইসলাম শিকদার মুসার স্ত্রী। গতকাল সোমবার মিতু হত্যা মামলায় মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হোসেন মো. রেজার আদালতে জবানবন্দি দেন। মুসা বাবুল আক্তারের সোর্স ছিলেন, যাকে হত্যাকান্ডের পর চিনতে না পারার কথা বলার কারণেই সন্দেহের তীর গিয়েছিল বাবুলের দিকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই, চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সা¤প্রতিক সময়ে তিনি গণমাধ্যমে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, আমাদের কাছে এবং জবানবন্দিতেও তাই দিয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি। কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা বাবুলের স্ত্রী মিতুকে কিলিং মিশনের নেতৃত্বদাতা হিসেবে অভিযুক্ত। হত্যাকান্ডের পরপরই ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজে একজনকে দেখা গিয়েছিল, পুলিশ তদন্ত করে যাকে মুসা হিসেবে শনাক্ত করেছিল। এছাড়া দুই আসামি আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বলেছিলেন মুসার নির্দেশে তারা মিতুকে হত্যা করেন।
গত ১২ মে বাবুল আক্তারকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল আক্তার মুসাকে চেনার কথা স্বীকার করেন বলে পিবিআই জানিয়েছে। হত্যাকান্ডের পর থেকেই ‘নিখোঁজ’ আছেন কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা। তাকে ধরতে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করে পুলিশ। তবে তার স্ত্রী পান্না আক্তারের দাবি, মুসাকে ওই বছরের ২২ জুন প্রশাসনের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছে না।
বাবুল আক্তারকে গ্রেফতারের পর মুসার স্ত্রী গণমাধ্যমে আরেক দফা মুখ খোলেন। তিনি জানান, একসময় সৌদি আরবে ছিলেন তার স্বামী। ২০০২ সালে দেশে ফিরে বালু সরবরাহের ব্যবসা শুরু করেন। তখনই পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার সখ্যতা হয়। ২০০৩ সালে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর মুসা তার ‘সোর্স’ হিসেবে কাজ শুরু করে। বাবুলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ছিলেন মুসা।
মিতু হত্যার সঙ্গে মুসার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে পান্না জানান, তিনি মুসাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেও তিনি খোলাসা করে কিছু বলেনি। তবে একবার ফোনে বলতে শুনেছেন, আমি সমস্যায় পড়ে গেছি। আপনার কথায় বিশ্বাস করে কাজ করেছি। আমার পরিবারের কিছু হলে মুখ খুলতে বাধ্য হব স্যার।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন